সিনেমা দেখে কান্না!

চলচ্চিত্র তো চলচ্চিত্রই। এ তো আর সত্যি কিছু না। কিন্তু প্রায়ই চলচ্চিত্র দেখতে দেখতে অনেকে কেঁদে ফেলেন, কখনও আবার কাঁদতেই থাকেন। কাহিনীর নানা ধারাবাহিকতা বিপদ, প্রিয় বিয়োগ, দুঃখ এ ধরনের মুহূর্তগুলোতে কান্না আবেগপ্রবণ মানুষের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকই ধরে নেই ‍আমরা। কিন্তু সিনেমা শেষে শুভ সমাপ্তিতেও কান্না!
মনোবিশ্লেষক যোসেফ উইসের লেখা থিওরিগুলোর মধ্যে অনেক বেশি সমৃদ্ধ একটি আর্টিকের হলো ১৯৫২ সালে প্রকাশিত ‘ক্রাইং অ্যাট দ্য হ্যাপি এন্ডিং’। লেখাটিতে তিনি দেখানোর চেষ্টা করেছেন ঠিক কি কারণে চলচ্চিত্র দেখে মানুষ কাঁদে। উইস তার আর্টিকেলে বলছেন, মানুষ যে প্রিয় মানুষ হারিয়ে গেলে বা দুঃখের সময়গুলোতে না কেঁদে শুভ সমাপ্তিতে কাঁদে এর কারণে হলো সন্তুষ্টি। কখনও কখনও আমরা মানসিকভাবে এতটা অসহায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ি যে ঠিক ঘটনার সময় আমাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারি না। পরবর্তীতে সেই অনুভূতি প্রকাশ পায়। যখন বিপদ কেটে যায় এবং আমরা নিরাপদ মনে করি নিজেদের।
তিনি বলেন, শুভ সমাপ্তি আমাদের চোখে জল আনে না, বা এক কথায় এটা আনন্দ অশ্রু না। বরং ফেলে আসা খারাপ সময়ের অনুভূতি প্রকাশ পায়। বিষয়টা অনেকটা প্রচণ্ড শীতল আবহাওয়া থেকে উষ্ণ ঘরে প্রবেশ করার মতো। উষ্ণ ঘরে প্রবেশ করার পরেই একজন ব্যক্তি উপলব্ধি করতে পারে তার ঠিক কতটা ঠাণ্ডা লাগছিল।  একইভাবে কোনো ব্যক্তি যখন বিপদে থাকে তখন তার আবেগ প্রকাশ পায় না, বিপদ অতিক্রম করে যখন সেই ব্যক্তি স্থিতিশীল নিরাপদ অবস্থায় আসে তখন সেই আবেগ প্রকাশ পায়। দুর্যোগ পরবর্তী ভুক্তভোগীদের ক্ষেত্রেও এ ধরনের রোগ দেখা যায়।
মনোচিকিৎসার ভাষায় যাকে বলা হয় পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার। দুর্যোগের সময় ভয়, অসহায়ত্ব এবং আকষ্মিক ঘটনা পরবর্তীতে প্রভাব ফেলে।
উইস বলেন, আমার কাছে চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগীকে প্রশ্ন করেছি টেলিভিশনে কোনো চলচ্চিত্র বা ধারাবাহিক অনুষ্ঠান দেখার সময় কেন কান্না পায়? তাদের উত্তর কোনো একটি চরিত্রের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা আমাদের নাড়া দেয় এবং যখন সমস্ত জটিলতা কেটে যায় তখন তাদের কান্না পায়।

Previous articleব্যক্তিত্ব বিষয়ে মনের খবর ফেসবুক লাইভ আজ রাতে
Next articleআপনি সম্ভবত উদ্বিগ্নতায় ভুগছেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here