কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জনে চাই ধীর স্থির মনোভাব

0
71
কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জনে চাই ধীর স্থির মনোভাব

অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে উঠলেই যে দ্রুততার সাথে লক্ষ্য অর্জন করা যায় এমনটি নয়। বরং ধৈর্যের সাথে শান্ত চিত্তে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করলেই দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়, সফলতা আসে।

মনস্তাত্ত্বিকদের মতে, জীবনে তারাই সফলতা অর্জন করতে পারে এবং সেটি ধরে রাখতে পারে যারা ধৈর্যের সাথে জীবনের সব পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে এবং জীবনের বিভিন্ন বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়না। সফলতা লাভের জন্য এই একনিষ্ঠ মনোভাব এবং ধৈর্য ধারণ প্রকৃতপক্ষে একটি দৈনন্দিন অনুশীলন। এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি কোন রকম প্রাপ্তি স্বীকার ছাড়াই প্রতি দিন একটু একটু করে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যায়। সফলতা লাভ বা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো অবশ্যই জীবনের সেরা প্রাপ্তি কিন্তু এই প্রাপ্তি চোখের পলকে আসেনা। বরং কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজন হয় দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা, ধীর স্থির মনোভাব এবং অদম্য সহনশীলতা। আর এগুলি ধীরে ধীরে তাকে তার স্বপ্নের শিখরে পৌঁছে দেয়।

লক্ষ্য অর্জন কঠিন এবং এর জন্য অনেক বেশি পরিশ্রমের প্রয়োজন। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, তাড়াহুড়ো করলে দ্রুত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। তাড়াহুড়ো কখনোই সফলতা নিয়ে আসেনা। অনেকেই সফলতা প্রাপ্তির পথে আসা বিভিন্ন বাধা বিপত্তির সম্মুখে মনোবল হারিয়ে ফেলেন এবং হতাশ হয়ে নিজেকে অযোগ্য ভাবতে শুরু করেন। কিন্তু এমনটি করলে কখনোই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়না। তারা চিরকাল নিজের ভাগ্যকে দায়ী করে যান এবং এটা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হন যে, লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থতা মূলত তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অধৈর্য হবার ফলেই এসেছে।

জীবনে বাধা বিপত্তি থাকবেই। কিন্তু এ সময় হতাশ হলে চলবে না। মনোবল অটুট রেখে ধৈর্যের সাথে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তাহলেই সব কিছু হবে আমাদের মনের মতো।

মনস্তত্ত্ববিদদের মতে, একজন ব্যক্তি বিভিন্ন ভাবে নিজেকে সাফল্য অর্জনের পথে একনিষ্ঠ রাখতে পারে। এগুলির মধ্যে অন্যতম হল ইতিবাচক মানসিকতা সম্পন্ন মানুষের সাহচর্য। বার বার হোঁচট খাবার পরেও যে বন্ধু বা কাছের মানুষ পাশে থেকে মনোবল যোগায় সেইই প্রকৃত বন্ধু। এমন ইতিবাচক মানুষের সাহচর্য দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মনোবল ও মানসিক উদ্দীপনা দুটিই বাড়ায়। তারা যেমন একজন ভালো সঙ্গীর দায়িত্ব পালন করে তেমনি বিপদের সময় তারাই হয়ে ওঠে পথ প্রদর্শক। তাই মনস্তত্ত্ববিদগণ এমন ইতিবাচক মানুষের সাহচর্যের পরামর্শ প্রদান করে থাকে।

তাছাড়া যে কোন লক্ষ্য অর্জনে নিজের থাকতে হয় একটি সুপরিকল্পিত যোজনা যার মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের পথে একটু একটু করে এগিয়ে যেতে হয়। যত বিপদই আসুক এই পরিকল্পনা থেকে কখনোই বিচ্যুত হওয়া উচিৎ নয়। তবে সময় এবং অবস্থা অনুসারে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা যেতে পারে। কিন্তু সেটি অবশ্যই লক্ষ্য অর্জনের দিকে আরও দৃঢ় সংকল্প হয়ে এগিয়ে যাবার জন্যে। কঠোর পরিশ্রম এবং অদম্য মনোভাব থাকলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি বা বিপদ কখনোই লক্ষ্য অর্জনের মনোবল কমাতে সক্ষম হয়না। আর সব থেকে বড় বিষয় হল- বিপদ আপদ বা বাধা বিপত্তিকে নেতিবাচক ভাবে না দেখে যদি জীবনের অংশ হিসেবে দেখার মানসিকতা সৃষ্টি করা যায় এবং ভুল ভ্রান্তিকে শিক্ষণীয় বিষয় হিসেবে ভাবা যায়, তাহলে কখনোই কেউ লক্ষ্যচ্যুত হবেনা।

সফলতার দিকে দৃষ্টি স্থির থাকলে জীবন চলার পথের ছোটখাটো বাধা কখনোই আপনাকে আপনার যাত্রাপথ থেকে বিচ্যুত করতে পারবেনা। তাই ধৈর্যের সাথে পরিকল্পনা মাফিক সামনের দিকে এগিয়ে যান এবং কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করুন।

সাইকোলজিটুডে থেকে অনুবাদ করেছেনঃ প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে  

 

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪
Previous articleশিশুর খেলনা: চাহিদা বুঝে দিতে হবে
Next articleঅভিভাবকত্বের একাল-সেকাল  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here