ব্যস্ত জীবনে নিজের যত্নে প্রায়ই কম অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো পরিপূর্ণ কাজ করার জন্য আপনার মন এবং আবেগের পাশাপাশি শারীরিক স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া মানেই জীবনের প্রতিটি ধাপে নিজেকে ভালোবাসা। জীবনের প্রতিটি স্তরের উপর যত্নশীল হলেই কেবল আপনি সর্বোত্তম জীবন যাপন করতে পারবেন।
১। শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করুন
শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ এবং ব্যায়াম করা নয়, আপনার ক্লান্তি ও অবসাদগুলো মোকাবেলা করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিতের অংশ।
২। মানসিক স্বাস্থ্যের পরিচর্যা করুন
সাধারণত মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি উপেক্ষিত হয়, যতক্ষণ না কোনো সমস্যা দেখা দেয়। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি আপনার জীবনকে শাসন করার পাশাপাশি অনেক বিষয়কে এড়িয়ে যেতে পারে। নেতিবাচক স্বয়ংক্রিয় চিন্তা আপনার জগতকে বিষাক্ত করে তুলতে পারে। তাই নেতিবাচক চিন্তাগুলোর সত্যতা এবং বাস্তবতা যাচাই করুন।
যদি চিন্তাগুলো অতিরঞ্জিত না হয়ে বাস্তব ও সত্য হয়, তবে সমস্যাগুলো মোকাবেলা করার মানসিক দৃঢ়তা অর্জন করুন। আর যদি চিন্তাগুলো অতিরঞ্জিত হয়, তবে আপনার মনোযোগ অন্যত্র সরান। এটি একটি সূক্ষ্ম মানসিক ক্রিয়া যা আপনার মনকে সহজে এবং দ্রুত প্রাণবন্ত করে তুলতে সহায়ক।
৩। মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করুন
ইতিবাচক মনোভাব আপনাকে সুসজ্জিত করে এবং আপনার কার্যকারিতা বাড়ায়, অন্যদিকে নেতিবাচকতা আপনার আত্মশক্তিকে বাধাগ্রস্থ করে এবং আপনার কার্যকারিতাকে দুর্বল করে দেয়। এমনকি আপনাকে যখন কোনো দাবি বা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, তখন আপনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান তার উপরও আপনার মানসিক তৃপ্তি নির্ভর করে।
আবেগকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। আবেগকে শান্ত রাখলে একটি বড় ঝড়ের মধ্যেও আপনার জীবনতরীর নিয়ন্ত্রণ আপনার কাছেই থাকবে, যা আপনার লক্ষ্য অবিচল রাখবে।
৪। নিজের প্রতি মনযোগী হন
ধর্ম অনুসরণ এবং প্রার্থনা মনযোগ বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। প্রার্থনা বা ধ্যান অভ্যন্তরীণ চিন্তাভাবনাগুলোকে সহজ করে। এটি মনকে শান্ত রাখতে এবং অভ্যন্তরীণ শান্তি বজায় রাখতে সহায়ক। এটি আপনার মূল্যবোধ এবং আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে।
৫। সম্পর্কেগুলোর মধ্যে নিজের প্রতি সচেতন হন
আপনি কি বিষাক্ত মানুষদের সহ্য করছেন যারা সমালোচনা এবং পরনিন্দা চর্চা করে? আপনার চেনাশোনা এবং যাদের সঙ্গে আপনি সময় কাটাতে চান তাদের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকা অনুসরণ করুন। এক্ষেত্রে অনেক পরিস্থিতিতে আপনার কোনও পছন্দ নেই কিন্তু আপনি আপনার আবেগগত জীবনে তাদের দেওয়া জায়গাটি নির্বাচন করতে পারবেন। আপনি যদি কাউকে পছন্দ না করেন কিন্তু তার সাথে কাজ করতে বা মেলামেশা করতে চান, তবে অপছন্দ বা ঘৃণার মধ্যে আটকে না থেকে বিচ্ছিন্নতা অনুশীলনে মনেযোগী হন। সাফল্যের জন্য এটি একটি অপরিহার্য মনোভাব।
শারীরিক শক্তি, বাস্তবসম্মত চিন্তা, মানসিক ভারসাম্য, সুখী এবং শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক – সমস্যা এড়াতে এবং জীবনকে আরও ভালোভাবে পরিচালিত করতে সহায়ক হতে পারে। টিপসগুলোর মধ্যে একটি নির্বাচন করুন এবং এর জন্য কিছুক্ষণ কাজ করুন যতক্ষণ না নিজের অবস্থার উন্নতি হয়। প্রাথমিকভাবে একটু সময় লাগতে পারে কিন্তু নিয়মিত চর্চা জীবনের শ্রেষ্ঠত্ব আবিষ্কারের একটি উপায় হয়ে ওঠতে পারে, যা আপনাকে আপনার প্রাপ্য যোগ্যতা দেয়।
তথ্যসূত্র: সাইকসেন্ট্রালে প্রকাশিত Christiana Star এর রচনা থেকে অনুবাদ করেছেন সুমাইয়া জান্নাত সোমা ।
লিংক: https://psychcentral.com/blog/invest-in-yourself-5-self-care-tips-for-bringing-out-your-best-self/