স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যা আশঙ্কা করেছিলেন, তাই ঘটল। লকডাউন বিধি শিথিল হতেই করোনায় সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়তে শুরু করল জার্মানিতে।
গোটা দেশে এখন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৭১ হাজার মানুষ। মৃত্যু হয়েছে সাড়ে সাত হাজার জনের। রবিবার গোটা পৃথিবীতে করোনা সংক্রমণ সাড়ে ৪০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে দু’লক্ষ ৭৯ হাজার মানুষের।
দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করার জন্য চাপ দিতে শুরু করেছিলেন জার্মানির ১৬টি প্রদেশের নেতারা। সেই চাপের সামনে নতিস্বীকার করে গত বুধবারই লকডাউন বিধি শিথিল ঘোষণা করে জার্মানির অ্যাঞ্জেলা মের্কেল সরকার। আরও বেশি দোকানপাট খুলে দেওয়া হয়। এমনকি খুলে দেওয়া হয় স্কুলও। তার পরই করোনা সংক্রমণ গতি পেয়েছে। জার্মানির রবার্ট কচ ইনস্টিটিউট দৈনিক বুলেটিনে জানিয়েছে, এখন এক জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ১.১ হারে নতুন ব্যক্তিকে সংক্রমিত করে চলেছেন। অর্থাৎ এক জন করোনা রোগীর সংক্রমণ ঘটানোর হার (রিপ্রোডাকশন রেট) বেড়েছে। আর তাতেই প্রমাণ হচ্ছে লকডাউন বিধি শিথিল হওয়ার পর জার্মানিতে সংক্রমণ খানিকটা বেড়ে গিয়েছে। এমনটা আশঙ্কা করেছিলেন একাধিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। তাঁদের মতে, লকডাউন বিধি শিথিল হলে ধেয়ে আসতে পারে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা। ঠিক যেমনটা ঘটেছিল আমেরিকায়, একশো বছর আগে স্প্যানিশ ফ্লুয়ের সময়।
নর্থ রাইন-ওয়েস্টফ্যালিয়া ও শেলসউইগ হলস্টেইন রাজ্যের দুটি জেলায় করোনা সংক্রমণ বড়সড় আকার নিয়েছে। সেখানকার মাংস প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্টের শ্রমিকরা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। লকডাউন বিধি আপাতত শিথিল হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি ঘোরাল হলে ফের নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপের রাস্তাও খোলা রেখেছে জার্মান প্রশাসন।
গোটা ইউরোপ করোনায় তটস্থ। জার্মানির মতো লকডাউন বিধি শিথিল করা হয়েছে আমেরিকার একাধিক প্রদেশেও। সেখানেও কার্যত তাণ্ডব চালাচ্ছে সংক্রমণ। ট্রাম্পের দেশে ১৩ লক্ষের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত। রোজই নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি করছে মৃতের সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত ৭৮ হাজার মানুষ আমেরিকায় মারা গিয়েছেন। করোনা হানা দিয়েছে হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইং অর্থাৎ মর্কিন প্রেসিডেন্টের অফিসেও। সেখানকার তিন কর্মীর শরীরে কোভিড ১৯ মিলেছে।
আগের থেকে কিছুটা ভাল পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে স্পেন ও ইটালিতে। স্পেনে ২ লক্ষ ২০ হাজারের বেশি মানুষ করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২৬ হাজারের বেশি মানুষের। ইটালিতে সংক্রমিত হয়েছেন ২ লক্ষ ১৮ হাজার মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ৩০ হাজার জনের। ফ্রান্সে সংক্রমিত এক লক্ষ ৭৬ হাজার মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ২৬ হাজার মানুষের। ব্রাজিলে হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। সেখানে দেড় লক্ষের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ১০ হাজারের বেশি মানুষের। একই পরিস্থিতি রাশিয়ারও। সেখানে দু’লক্ষ ৯ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত। তবে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটা কম। রাশিয়ায় করোনায় মারা গিয়েছেন এক হাজার ৯০০ জন।
করোনার জেরে ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়া জুড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে তার গতি খানিকটা স্তিমিত আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে।
মানিসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন