যে সব কারণে আলাপ খারাপ দিকে মোড় নেয়

আপনি কারো সাথে যখন কথা বলেন, তখন আপনি জানেন না আপনার কথাটা সে কীভাবে নিবে। আপনার অভিপ্রায় খারাপ না হলেও অন্যজনের অতীত অভিজ্ঞতা আলাপকে নেতিবাচক দিকে নিয়ে যায়, যদিও কথাটি আপনি যুক্তিযুক্ত ভাবে বলেছিলেন।
আপনি যখন কারো সাথে কথা বলবেন, তখন ভাবুন, আপনার কথাটি অন্যজন কীভাবে নিবে। কথাটা যে যুক্তিযুক্ত, এটা ভাববেন না।
৩ টি উপাদান আমাদের আলাপচারিতার ফলাফলকে প্রভাবিত করে এবং আপনি কারো সাথে যুক্ত থাকবেন না আলাদা হয়ে যাবেন, সেটিও নির্ধারণ করে।
১। ঘটনা সম্পর্কে আপনার অনুমান কী: কোনো আলাপ শুরুর পূর্বে আপনার অবশ্যই একটা ধারণা থাকে যে, কথোপকথন কী হবে। আপনি চান, অন্যজন আপনার কথার গুরুত্ব দিক বা আপনার সাথে একমত পোষণ করুক। যখন আপনি আপনার প্রত্যাশা অনুযায়ী সম্মান, সহমর্মিতা, মনোযোগ না পান, তখন ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে আপনার খারাপ ধারণা জন্মায় এবং তখন আপনি এই পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে যেতে চান। আপনার এই আত্মমুল্যবোধ আপনাকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করবে এবং আপনাকে কথোপকথনে অসুরক্ষিত পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করবে।
২। আশানুরূপ ফল না পেলে: ভিন্ন মতের কোনো কথা বা মতামত নিয়ে আপনি অবশ্যই ভাবেন এবং আপনি আপনার মতামত তুলে ধরেন কিন্তু আপনার সঙ্গীরা আপনার সাথে একমত না হয়ে বরং আপনাকেই দোষারোপ করে। এরকম পরিস্থিতিতে আপনি তাদেরকে মোটেও পছন্দ করেন না।
৩। সামনে কি হবে এই সম্পর্কে আশানুরূপ উপলব্ধি: একটা ভালো আলাপও খারাপ দিকে মোড় নিতে পারে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা হওয়ার কারণে। যদি সবাই সবার লক্ষ্য, আশা, হতাশা পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করে এবং সবার মতের প্রতি সবার শ্রদ্ধা থাকে, তবে তা একটি সুন্দর আলাপ হতে পারে।
সঠিকভাবে আলাপ চালিয়ে নেওয়ার উপায়:
১। নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন আপনি কী ভাবছেন এবং আপনার ভাবনা অনুযায়ী না হলে আপনি বিষয়টা কীভাবে নিবেন।
আলাপের সময় নিজের শারীরিক ও আবেগীয় পরিবর্তনগুলো লক্ষ করুন। এটা স্বাভাবিক যে, আপনার রাগ বা ভয় হয়, কারণ আপনি সামাজিক জীব। আপনি বিষয়টাকে আবেগ দিয়ে না দেখে যুক্তি দিয়ে বিচার করতেই পারেন, এখানে আপনার অপরাধের কিছু নেই। বরং আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনার কেন এমন বোধ হচ্ছে; আপনি কি কোন প্রতিক্রিয়া করতে চান? নাকি ঐ ব্যক্তিটির দৃষ্টি আকর্ষণ বা বিরক্তির কারণ হতে চান? আপনি যদি এসব প্রশ্নের জবাব পেয়ে যান, তবে আপনি ঐ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবেন।
২। অপ্রত্যাশিত বিষয়কেই প্রত্যাশা করুন। আমরা যা আশা করি তা খুব কম সময়ে হয়ে থাকে, কোনো অপ্রত্যাশিত বিষয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন।
৩। আপনার সামনে যে বিষয়টি আছে তার প্রতি দৃষ্টি দিন। যখন আপনি কোনো বিষয়ের প্রতি বিচারিক মনোভাব পোষণ করেন, তখন নিজেকে শান্ত রাখুন। ধীরে ধীরে শ্বাস নিন এবং যে বিষয়ের আলোচনা হচ্ছে, তার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করুন, বিষয়টি ভুল না সঠিক তা নিয়ে বিচার করবেন না।
৪। আপনার নেতৃত্ব থেকে মতামতকে আলাদা রাখুন। মাঝে মাঝে আপনি নিজেকে নির্দোষ মনে করেন এবং অন্যদের অপরাধী মনে করেন, আবার কিছু সময় অন্যদের চিন্তাভাবনাকেও প্রাধ্যান্য দেন। যখন আপনি কোনো মতামত দেন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই অন্যদেরটা জানার চেষ্টা করুন, তারা এই অবস্থায় কী করতো।
৫। নিজের যত্ন নিন এবং খেয়াল করুন, কোনো গুরুত্বপূর্ণ আলাপের আগে আপনি ক্ষুধার্ত কিনা অথবা ক্লান্ত কিনা।
তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে ডটকমে প্রকাশিত Marcia Reynolds এর রচনা অবলম্বনে লিখেছেন সুস্মিতা বিশ্বাস।
লিংক: https://www.psychologytoday.com/us/blog/wander-woman/201803/the-top-3-sources-communication-breakdowns?utm_source=FacebookPost&utm_medium=FBPost&utm_campaign=FBPost

Previous articleমন ও ভাষা
Next articleমানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে চার্চের আয়োজন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here