খাওয়ার সময় শিশুদের বায়নার শেষ নেই। মোবাইল কিংবা টিভি ছাড়া এক গ্রাস ভাতও মুখে তুলতে চায় না অনেকেই। তাই শিশুর মনোযোগ ঘুরিয়ে দিতে, শিশুকে ভুলিয়ে রাখতে অনায়াসে তার হাতে মোবাইল তুলে দিচ্ছে মা-বাবারা। এর ফল হচ্ছে বিরূপ। মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে নতুন প্রজন্মের শিশুরা। পড়াশোনা, খেলাধুলা, গল্প করা বাদ দিয়ে সারাদিন পড়ে থাকছে মোবাইল নিয়েই।
খাওয়ার সময় শিশুর হাতে মোবাইল ফোন ও যে কেনো ধরনের স্ক্রিন ব্যবহারে বারণ করছেন ব্রিটিশ চিকিৎসকরা।
ব্রিটিশ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খাবার ও ঘুমের সময় মোবাইল দূরে রাখুন। খাওয়া ও ঘুমের সময় মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করেছেন যুক্তরাজ্যের শীর্ষ চারজন প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা।
স্মার্ট ফোনের বিকল্প হিসেবে ন্যাশনাল মেন্টাল হেলথ ফার্স্ট এইড প্রশিক্ষক ও ঢাকার ডিপিএস এসটিএস স্কুলের সাইকোলজিস্ট পরমা প্রীতি মল্লিক বলেন, শিশুদের সপ্তাহান্তে বা বিকেলে কোনো ধরনের খেলাধুলা, আর্ট অ্যান্ড ক্রাফটস, গানবাজনা, নাচ, নাটক, অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব এসবে ভর্তি করে দেওয়া যায়। এতে ওদের মধ্যকার যে চঞ্চলতা, তা ইতিবাচক একটা মাধ্যম পাবে। মস্তিষ্ক আরও সক্রিয় হবে, সেইসঙ্গে সামাজিকীকরণেরও উন্নতি ঘটবে। নিজস্ব একটা সার্কেল তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, স্মার্টফোন বা অন্যান্য ডিজিটাল গ্যাজেটই যে বিনোদনের মাধ্যম নয়, এই ভাবনার চর্চা কথা ও কাজে শিশুদের সামনে প্রকাশ করতে হবে। সেজন্য তাদের সঙ্গে ঘরোয়া পরিসরেও বিভিন্ন খেলাধুলা যেমন পুরোনো দিনের আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে ঘিরে থাকা ‘নাম-দেশ-ফুল-ফল’, ‘চোর-পুলিশ’, ‘ষোলগুটি’, ‘লুডু’ ইত্যাদি খেলা যায়। শিশুদের এই আসক্তির পেছনে বাবা-মায়ের আচরণও প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন মনোবিদ পরমা।
ষাটের দশকে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, শিশুরা সরাসরি পর্যবেক্ষণমূলক শিক্ষা থেকে আক্রমণাত্মক বা অ-আক্রমণাত্মক আচরণ শেখে। মা-বাবা ও পরিবারের বাকি সদস্যরা যদি ওদের সামনে মোবাইল ফোন কম ব্যবহার করি, তাহলে ওরাও সেটাই শিখবে।