মাদকাসক্তি বলতে বোঝায় মাদকদ্রব্য বা ড্রাগসের প্রতি অদম্য ও নিয়ন্ত্রণহীন আকর্ষণ যা ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক নানাবিধ মারাত্মক ক্ষতি করা সত্ত্বেও, ব্যক্তি এই মাদক সেবন থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সারা বিশ্বের প্রায় ৩.৪% থেকে ৬.৬% মানুষ মাদকাসক্ত এবং সারা বিশ্বে ০.৪% মৃত্যুর কারণ হচ্ছে এই মাদকাসক্তি।
বিভিন্নরকম মাদকদ্রব্য রয়েছে যার মধ্যে গাঁজা, কোকেন, ইয়াবা বেশি ব্যবহৃত হয়। লাতিন আমেরিকার একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, মাদকাসক্তির সাথে প্রাথমিক বা আর্লি লাইফে ঘটে যাওয়া ভায়োলেন্স বা নৃশংসতা, যৌন নিপীড়ন এবং অন্যান্য মানসিক ও শারীরিক নিপীড়নমূলক ঘটনা দায়ী।
মাদকদ্রেব্যর প্রতি নেশা বা আসক্তি একটি চক্রের মতো আবর্তিত হয়। এই আসক্তির পর্যায়গুলো আমাদের ব্রেইনের রিওয়ার্ডিং সিস্টেমের অসামঞ্জস্যপূর্ণ পরিবর্তন যা কিনা জিন এবং পরিবেশগত কিছু প্রভাবকের কারণে হয়ে থাকে।
এই গবেষণা প্রবন্ধে পরিবেশগত কারণগুলোকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে যেমন দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক স্ট্রেস মাদকাসক্ত হওয়ার অন্যতম কারণ। মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের কারণে আমাদের ব্রেইনের এইচ পি এ আক্সিসে পরিবর্তন হয় এবং কিছু হরমোন নিঃসরণ হয়।
যারা মাদকাসক্ত তাদের রক্তে এই স্ট্রেস হরমোনের হার বেশি পাওয়া গিয়েছে। তাদের রোগের বা জীবনী-ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে যে, মাদকদ্রব্য সেবনের আগে তারা সবাই কোনো না কোনো স্ট্রেসফুল ঘটনা প্রবাহের মধ্যে দিয়ে গেছেন।
এই গবেষণা প্রবন্ধে লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন গবেষণাগারে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবনকারীদের পৃথক পৃথক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এটাই প্রমাণিত যে, স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপজনিত কারণে আমাদের মস্তিষ্কে নানারকম রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে যা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে মাদক নেওয়া বা দীর্ঘমেয়াদি আসক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সূত্র: মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিন, ২য় বর্ষ, ৬ষ্ঠ সংখ্যায় প্রকাশিত।
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে