মানসিক অত্যাচারের লক্ষণ

0
16

মানসিক নির্যাতন নিয়ে অনেকবারই অনেক কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নির্দেশ করে ব্যক্তিগত সম্পর্কের মধ্যেকার টানা-পোড়নের কথা। তবে এর বাইরেও বেশ কিছু লুকিয়ে থাকা লক্ষণ আছে, যা সচরাচর আমাদের চোখে পড়ে না। এরকম কিছু লক্ষণ নিয়েই আজকের আলোচনা।

১. দুজন সঙ্গীর মধ্যে অন্তত একজন অন্য জনের দৃষ্টিভঙ্গিকে বোঝার চেষ্টা না করেই সমালোচনা করেন। এটি মূলত দুজন দুজনকে সহ্য করার অক্ষমতা থেকে তৈরি হয়। যার ফলে ভালো সম্পর্কগুলো প্রতিনিয়তই খারাপের দিকে যায় এবং সম্পর্কের মান নষ্ট করে।

২. দুজনের মধ্যে অন্তত একজন সমাধানের চেয়ে অন্যের উপর দোষ দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। অন্যকে দোষ দিলে মস্তিষ্কে এক রকম এড্রিনালিন হরমোন নিঃসৃত হয়, যা কিনা ব্যক্তির আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে দেয় ও শক্তি সঞ্চয় করে। একটা সময় যখন দোষ দেওয়াটা অভ্যাসে পরিণত হয় তখন আমাদের মস্তিষ্কই তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে দেয়। এই এড্রিনালিনের ক্রমশ ঊর্ধগামী চাহিদার যোগান দিতে গিয়ে সম্পর্কটি খারাপ পর্যায়ে চলে যায়।

৩. সাহায্য করতে গিয়ে দুজনের মধ্যে অন্তত একজন অন্যকে কিভাবে চিন্তা এবং অনুভব করতে হবে তা বলে দেয়। এটি অন্যজনের ব্যক্তিসত্তাকে মূল্য না দেওয়ার প্রমাণ করে। সম্পর্কে নিয়মিত এমন হতে থাকলে পরে একজনের অহংবোধকে পূর্ণ করতে গিয়ে অন্যজন তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হারিয়ে ফেলে।

৪. দুজনের মধ্যে একজন খারাপ আচরণের পর অনুশোচনা করলেও তার মধ্যে সমবেদনা কাজ করে না। সমবেদনা কাজ করে তখন, যখন অন্যকে আঘাতের পরিমান ও সে কতটা কষ্ট পেয়েছে তার উপর ভিত্তি করে। যারা ক্রমাগত অনুশোচনার মধ্যে দিয়ে যায় কিন্তু সমবেদনা অনুভব করে না, তারাই মানসিক নির্যাতন বেশি করে থাকে।

৫. দুজনের মধ্যে একজন মতের অমিলের সময়, ভালবাসা এবং সম্পর্ককে অবমাননা করে। এ ধরনের আচরন সম্পর্ককে একপ্রকার শর্তসাপেক্ষ চুক্তিতে পরিণত করে। এবং নির্দেশ করে যে, একজন ব্যক্তি মতের অমিল হলে সে ভালবাসার অযোগ্য। ক্রমাগণ এমন আচরণ সম্পর্ককে দূর্বল করে ফেলে।

৬. দুজনের মধ্যে অন্তত একজন অপরজনকে যথেষ্ট সক্ষম,স্মার্ট কিংবা যোগ্য নয় বলে থাকে। এ ধরণের উক্তি প্রমাণ করে যে, যখন একজন ব্যক্তির কথায় কষ্ট পায়, তাহলে সে দূর্বল।

৭. দুজনের মধ্যে অন্তত একজন অপরজনকে নিকৃষ্ট এবং আধখেঁচড়া হিসেবে আখ্যায়িত করে। এটি অন্যজনের প্রতি মান হানিকর দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে।

৮. দুজনের মধ্যে অন্তত একজন চুপচাপ থাকে, অন্যজনের চোখের হতাশা দেখার ভয়ে।
যদি এ ধরণের আচরণ ক্রমাগত হতে থাকে, তাহলে বলা যায় সম্পর্কের টানাপোড়ন শুরু হইয়ে গেছে। এবং এটি ক্রমাগত দৃশ্যমান হবে।

অনুবাদক: মাঈশা তাহসিন অর্থী
তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে।

Previous articleশরীর অবশ ও নার্ভাস হয়ে আসে কেন?
Next articleআত্মহত্যার হার কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে স্কটল্যান্ড

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here