মহামারী সংক্রান্ত মানসিক জটিলতায় বিভিন্ন ধরণের মানসিক সমস্যা সৃষ্টির সাথে সাথে বিভিন্ন ধরণের শারীরিক সমস্যা যেমন, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি, মাদকাসক্তি, অবসাদ ইত্যাদি সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরণের সমস্যাগুলো কাটিয়ে কিভাবে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যায় সে লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ এখন গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরী।
স্বাভাবিক জীবন মানে আমরা অনেকেই ভাবছি মহামারী পূর্ববর্তী জীবন। কিন্তু এটা পূর্ণরূপে সঠিক নয়। করোনা মহামারী আমাদের জীবন যাপনকে বদলে দিয়েছে। এই বদলে যাওয়া জীবন অনেকের জীবনকেই দুর্বিষহ করে তুলেছে। আবার অনেকেই এই পরিবর্তিত অবস্থার সাথে মানিয়ে নিয়ে নিজেকে এর সাথে চলনসই করে গড়ে তুলেছেন। যারা মানতে পারছে না বা যাদের মাঝে শারীরিক ও মানসিক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে তাদেরকে এই পরিবর্তিত অবস্থায় কিভাবে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনা যায় সেই প্রয়াসই আমাদের করতে হবে। নিচে এ সংক্রান্ত কিছু কৌশল উল্লেখ করা হল।
১) নিজেকে সুস্থ জীবনে ফেরাবার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মহামারীর এই নেতিবাচক এবং গুরুতর প্রভাবে বদলে যাওয়া পরিবর্তিত অবস্থাকে আমাদের স্বীকার করে নিতে হবে। সুস্থ জীবনে পদার্পণের এই প্রক্রিয়াটি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির ক্ষেত্রে আরও বিশেষ এবং ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে ধাবিত হওয়ার একটি প্রক্রিয়া। আমাদেরকে এই পরিবর্তিত অবস্থায় মানসিকভাবে বিচলিত নয় বরং দৃঢ় চিত্ত হতে হবে যেন নিজেদের সুস্থ জীবন নিশ্চিত করতে পারি।
২) নিজেদের বর্তমান শারীরিক ও মানসিক অবস্থার দিকে বিশেষ দৃষ্টিপাত করে একে আগেকার সময়ের সাথে তুলনা করুন। বর্তমান সময়ের এই মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা, অবসাদ, মাদকাসক্তি, অনিদ্রা, ক্ষুধা মন্দা বা অতিরিক্ত পরিমাণে খাবারের প্রতি আসক্তি ইত্যাদি আপনার মাঝে কি কি শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে সেগুলি মনোযোগের সাথে চিহ্নিত করুন। আর এর মাধ্যমেই জীবনের বিভিন্ন দিকের অসঙ্গতি পরিপূর্ণ রূপে আপনার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠবে এবং ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসতে কি কি করতে হবে সেগুলিও স্থির করা সহজ হবে।
৩) পরিবর্তিত অবস্থাকে সহজভাবে মেনে নিন। আমাদের মনকে এটা বোঝাতে হবে যে আমাদের এই পরিবর্তিত জীবন ব্যবস্থা আমাদের ক্ষতির জন্য নয়, বরং আমাদের সুস্থ রাখার জন্য। প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপর নিয়ন্ত্রণ আমাদের কারও হাতেই নেই। তাই এর সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে নিজেদের মাঝে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন নিয়ে আসা কখনোই নেতিবাচক হতে পারেনা।
৪) নিজেকে সুস্থ রাখতে এই মহামারীকালীন সময়ে একটি সহায়ক রুটিন তৈরি করুন। যে কাজ গুলো আপনাকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে সুস্থ ও দৃঢ় চিত্ত রাখবে সেগুলিকে লিপিবদ্ধ করে রাখুন এবং সেগুলিকে অনুসরণ করুন। তাহলে মহামারীকালীন সময়ে জীবন ব্যবস্থা পরিবর্তিত হলেও শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় থাকবে।
এক কথায় বলতে গেলে, পরিবর্তিত জীবনেও নিজেকে খুশি রাখুন, আনন্দে থাকুন। তাহলেই শারীরিক ও মানসিক সব জটিলতা দূর করে মহামারীকালীন সময়েও সুস্থ জীবন যাপন করা সহজ হয়ে উঠবে।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে