মনের উপর আমাদের বাসস্থানের প্রভাব

মনের উপর আমাদের বাসস্থানের প্রভাব
যে স্থানে আমরা বসবাস করি সে স্থানের প্রভাব আমাদের মনের উপরেও পড়ে। এমনকি বাসস্থান আমাদের মাঝে একাকীত্ব এবং বিচ্ছিন্নতার অনুভূতিও সৃষ্টি করতে পারে।

বর্তমানে করোনা আবহে মানুষের  মাঝে যে বিষয়টি সব থেকে বেশী প্রভাব ফেলছে সেটি হল একাকীত্ব এবং আইসোলেশন। কোটি কোটি মানুষ করোনা সুরক্ষার গাইডলাইন মানতে গিয়ে এক রকম গৃহবন্দী জীবন যাপন করছে।  অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ মানুষ তাদের  সামাজিক এবং সর্বজনীন জীবনকে ব্যক্তিগত এবং বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। তাই করোনা মহামারীর সাথে লড়াই করে টিকে থাকার সাথে সাথে একাকীত্ব এবং অন্যান্য মানসিক সমস্যার সাথে সাথেও লড়াই করতে হচ্ছে। যেহেতু এখন আমাদের অনেক বেশী সময় এখন গৃহের অভ্যন্তরেই কাটছে তাই এর প্রভাব এবং কিভাবে এর সুসংস্থাপন একাকীত্বকে মোকাবেলা করতে পারে সেসব নিয়ে জানা প্রয়োজন।

গৃহের পরিবেশ এমন হওয়া প্রয়োজন যা আমাদের মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্য বজায়  রাখতে সহায়তা করবে। আর মহামারীকালীন সময়ে এটি নিশ্চিত করা আরও বেশী প্রয়োজন। একটি খোলামেলা, আলো বাতাসে পরিপূর্ণ বাসস্থান আমাদের মনকে প্রশান্তি প্রদান করে এবং মনের মাঝে থাকা শঙ্কা দূর করে। তাই এখন যেহেতু অধিক সময় আমরা আমাদের গৃহেই থাকছি, তাই আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে আমাদের আবাস স্থল যেন খোলামেলা এবং আলো বাতাসে পরিপূর্ণ হয়। বাসস্থান যদি অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং আলো বাতাস বিহীন হয়, সেখানে শরীর ও মন আড়ষ্ট এবং ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। এতে মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা ত্বরান্বিত হয় এবং শরীর ও মনে রোগ বাসা বাঁধে। তাই এমন স্থান আমাদের জন্য মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।

একটি বাসস্থানে যদি সব বয়সের মানুষের সমাবেশ থাকে তাহলে সেটি সব বয়সী মানুষের জন্যই উত্তম। একে অপরের সাথে ভাব বিনিময়, অভিজ্ঞতার আদান প্রদান এবং আনন্দে ও বিপদে একে অপরের পাশে থাকা সব ধরণের মানসিক ও শারীরিক সমস্যাকে প্রতিরোধে জোরালো ভূমিকা পালন করে। এতে পরিবারের সবার মাঝে সুরক্ষার মনোভাব প্রবল হয় এবং যে কোন মানসিক চাপ মোকাবেলার আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে। একাকীত্বের মতো মানসিক জটিলতা গুলি খুব বেশী প্রভাব বিস্তার করতে পারেনা।

যে কোন বাসস্থান পরিপাটি, মনের মতো আসবাবে সাজানো এবং সবুজ গাছপালায় পরিপূর্ণ হওয়া উচিৎ। হোক সেটি ছোট কিংবা বড় বাড়ি, নিজের মনের মতো করে সাজিয়ে নিলে গৃহের প্রতিটি কোন হয়ে ওঠে প্রশান্তিকর। তাছাড়া সবুজের সমারোহ থাকলে মন প্রফুল্ল থাকে। মানসিক প্রশান্তি শারীরিক সুস্থতার জন্য অতীব প্রয়োজন। তাই ছোট ছোট কিছু ফুলের গাছ লাগানো যেতে পারে। ফল এবং সবজির গাছ ও রোপণ করা যেতে পারে। আর প্রতি দিন যদি আপনি কিছুটা সময় গাছের পরিচর্যা করেন, গৃহের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য ব্যায় করেন, তাহলে সকল রকম দুশ্চিন্তা এবং মানসিক অশান্তি থেকেও দূরে থাকতে পারবেন।

যে স্থানে আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যায় করছি, সে স্থানটি অবশ্যই এমন হওয়া উচিৎ যা আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবন কেমন হবে সেটি নির্ধারণ করে এবং একাকীত্বের মতো মানসিক সমস্যাগুলিকে দূরে রাখে।

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
সূত্র: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/designed-happiness/202105/is-your-environment-making-you-lonely

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

 

Previous articleকরোনা পরবর্তী কী মানসিক পরিবর্তন হতে পারে
Next articleকোভিড-১৯: চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here