বর্ডার লাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার ; অনিয়ন্ত্রিত রাগ

0
55

রাগলে পরে কি আপনার কিছু খেয়াল থাকে না? বাহ্য জ্ঞান শূন্য হয়ে যান? তাহলে, আপনি বর্ডার লাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারের সমস্যায় ভুগছেন।

এটি একটি মানসিক রোগ। এই রোগে শুধু অপর্যাপ্ত রাগই নয়, সেইসঙ্গে দেখা দেয় অন্য অনেক সমস্যাও। একজন মনোবিদের কাছে বর্ডার লাইন পার্সোনালিটির রোগীরা রীতমতো চ্যালেঞ্জের বিষয়। কারণ, খুব সহজে এই ধরনের রোগীদের সমস্যার সমাধান করা যায় না।

এই বর্ডার লাইনের রোগীরা ভীষণ নীতিবাগীশ হন। যেমন ধরুন, টিকিট কাউন্টারে লাইনে দাঁড়িয়ে সবাই টিকিট কাটছেন। হয়তো দেখা গেল একজন পরে এসে আগে লাইনে দাঁড়িয়ে গেল। অন্যরা এক্ষেত্রে মৃদু প্রতিবাদ করবেন। কিন্তু একজন বর্ডার লাইনের রোগী বলতে গেলে চড়াও হবেন সেই লোকটির ওপর। হ্যাঁ, এতটাই নীতিবাগীশ হন এই ধরনের রোগীরা।

এদের বন্ধুভাগ্য ভারী অদ্ভুত হয়। কিছুদিন অন্তর অন্তর বন্ধুরা পাল্টায়। এরা খুব চরমপন্থী হন। তাই যখন যাকে ভাল লাগে তার জন্য প্রাণ দিতে প্রস্তুত থাকেন। আবার কিছুদিন পরই হয়তো দেখা যায়, সেই মানুষটাই খারাপ হয়ে গেল তাঁর কাছে। একেবারে মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ। রাস্তাঘাটে বা পুলিশের সঙ্গে নানা সময়ে  ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন এঁরা। এঁদের কোথাও যেন গভীর বিষাদ থাকে। কোনও অনৈতিক কাজ  এঁরা করতে চান না। যদি সেই কাজকে অনৈতিক বলে মনে করেন। আর হ্যাঁ, এরা কখনও কোনও প্রত্যাখ্যান নিতে পারেন না, অপমান সহ্য করতে পারেন না এতটুকু। সামান্য অপমানিত হলেও তার রেশ থেকে যেতে পারে কয়েকঘণ্টা থেকে শুরু করে কয়েকদিন পর্যন্ত!

দেখা গিয়েছে, যাঁদের বাইপোলার ডিপ্রেশন রয়েছে, তাঁদের বর্ডার লাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারও রয়েছে। আবারও বলি, এঁদের রাগ সাংঘাতিক হয়। একটা সামান্য ঘটনায় অপরিমিত রাগ হয় এদের। তবে তার মানে এই নয় যে, আপনি একটু বেশি রাগ করলেই ধরে নিতে হবে আপনার এই সমস্যা রয়েছে। যদিও দেখা গিয়েছে, যাঁদের শরীরে চণ্ডালের রাগ, তাঁরা কিন্তু অনেকেই বর্ডার লাইন পার্সোনালিটির রোগী হন।

বলাই বাহুল্য, অপর্যাপ্ত রাগ আপনার পারিবারিক জীবনকে তো বটেই, সামাজিক জীবনকেও বিপর্যস্ত করে দিতে পারে। হতে পারে, কিছুদিন ধরে আপনি অ্যাংজাইটিতে ভুগছেন। হতে পারে, ভেতরে ভেতরে আপনার মনের কোণে ডিপ্রেশন দেখা দিয়েছে। সেই কারণেও আপনি রেগে যাচ্ছেন এভাবে। তবে রাগ যে কারণেই হোক না কেন, একে কোনওভাবে প্রশ্রয় দেবেন না। মনে রাখবেন, মনোবিদরা রাগকে বলেন নেতিবাচক আবেগ বা নেগেটিভ ইমোশন।

আপনার বর্ডার লাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার দেখা দিয়েছে নাকি অন্য কোনও সমস্যা থেকে আপনি এত রেগে যাচ্ছেন, তা বড় কথা নয়। রাগকে পোষ মানানোর চেষ্টা করুন।

রাগের বশে এমন কোনও কথা বলে বসবেন না, যা পরে গিলে ফেলতে হয়। এমন কিছু করে বসবেন না, যার জন্য সারাজীবন মাশুল গুনতে হয়। মনে রাখবেন, এই রাগ কিন্তু একটা সুন্দর জীবনকে ছারখার করে দিতে পারে। তাই নিজে থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না-পারলে অবশ্যই মনোবিদের সঙ্গে দেখা করুন।

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪

Previous articleবিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আত্মহত্যার কারণে মৃতের সংখ্যার ২.০৬% হলো বাংলাদেশী
Next articleগাছপালা ঘেরা পরিবেশে থাকা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here