বেশি আয় নয়, ভালো সঙ্গী ও মানসিক সুস্বাস্থ্যেই সুখ

হঠাত্ করে আয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেলে একজন মানুষ যতটা সুখী হতে পারেন, ভালো মানসিক স্বাস্থ্য ও একজন চমত্কার সঙ্গীর উপস্থিতিতে তা হওয়া সম্ভব আরো বেশি। জীবনঘনিষ্ঠ কোনো দার্শনিকের মন্তব্যে নয়, বরং সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে বক্তব্যটি। প্রায় দুই লাখ ব্যক্তির ওপর চালানো জরিপের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের গবেষকরা। খবর বিবিসি।
প্রায় দুই লাখ মানুষের ব্যক্তিগত সুখের ওপর বিভিন্ন বিষয়ের প্রভাব নির্ণয়ে জনকল্যাণমুখী জরিপটি চালিয়েছেন গবেষকরা। গবেষণায় উঠে আসে, মানুষের ব্যক্তিজীবনের সুখে সবচেয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বিষণ্নতা। অন্যদিকে জীবনের সুখের মাত্রা সবচেয়ে বেশি বাড়িয়ে তোলে ব্যক্তিগত সম্পর্ক।
বিশেষজ্ঞরা জানান, জনকল্যাণে রাষ্ট্রের নতুন ভূমিকার দাবি জানাচ্ছে গবেষণাটি। বিশ্বব্যাপী পরিচালিত নানা গবেষণার ভিত্তিতে গবেষকরা এ পর্যবেক্ষণ চালান।
দেখা গেছে, সুখী জীবনের উত্সগুলোকে ১ থেকে ১০-এর মধ্যে স্কোরিং করা হলে; এতে কারো আয় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেলেও স্কোর হচ্ছে দশমিক ২-এর চেয়েও কম। অন্যদিকে জীবনে ভালো সঙ্গীর উপস্থিতি সুখের মাত্রা বাড়ায় দশমিক ৬ পর্যন্ত। মৃত্যু বা অন্য কোনো কারণে সঙ্গীর সঙ্গে বিচ্ছেদে জীবন থেকে সুখ হারায় সমপরিমাণে।
অন্যদিকে জীবন দুঃসহ করে তোলায় বিষণ্নতা ও উদ্বেগের জুড়ি নেই। এ দুয়ের উপস্থিতিতে সুখের পারদ কমে যায় দশমিক ৭ পর্যন্ত।  বেকারত্বের ক্ষেত্রেও জীবন থেকে সুখ হারায় একই পরিমাণে।
গবেষণাপত্রের সহলেখক অধ্যাপক রিচার্ড লেয়ার্ড বলেন, এখান থেকে পাওয়া ফল এটাই বলছে; নাগরিকদের সুখী করে তোলার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নতুন ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে সম্পদ (ওয়েলথ ক্রিয়েশন) নয়, সুখ সৃষ্টির (ওয়েলবিয়িং ক্রিয়েশন) দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, গবেষণা থেকে পাওয়া ফলে এটাই প্রমাণ হয়, সুখ ও দুঃখের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে আমাদের সামাজিক সম্পর্ক এবং মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য।
Previous articleকমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা মানসিক রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে
Next articleপায়ের তালু জ্বালাপোড়ায় ভুগছি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here