পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে বিয়ের মরশুম। ছবির মতো সুন্দর বিয়ের আসর, পক্ষীরাজে চড়া স্বপ্নের নায়ক, আলো ঝলমলে বাসরঘর— এমন একটা স্বপ্ন সম্ভবত অধিকাংশ মেয়েই দেখে থাকেন৷ কিন্তু মুশকিল হল, স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবের জগৎ বেশিরভাগ সময়েই মেলে না। সম্বন্ধ করে বিয়ের বেলায় তো বটেই; এমনকী প্রেম করে বিয়ে হলেও সেই বিয়ে ঘিরে থাকে একরাশ মানসিক চাপ। অনিশ্চয়তা কাজ করতে থাকে মেয়েদের মনে। নতুন পরিবেশ, নতুন সংসারে মানিয়ে নেওয়ার চাপ তো আছেই। সঙ্গে গোটা অনুষ্ঠানটা সুষ্ঠুভাবে শেষ হবে কিনা, বিয়ে করার সিদ্ধান্তটা আদৌ সঠিক হল কিনা- এমন নানাধরনের চাপ গ্রাস করে তাঁদের। দীর্ঘ সময় ধরে চাপ নিতে নিতে একটা সময় মেয়েটি আর পুরুষটি আবিষ্কার করেন সম্পর্কের ভিতটাই নড়বড়ে হয়ে গেছে।
বিয়ের আগেই সম্পর্ক তেতো হয়ে যাওয়া আটকাবেন কীভাবে? জীবনে যে কোনও পরিবর্তন এলে মানসিক চাপও আসে। নতুন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কিনা, তা থেকেই চাপের সূত্রপাত। দীর্ঘদিন ধরে এই চাপ চলতে থাকলে একসময় তার ছাপ শরীরের উপরেও পড়তে বাধ্য। অকারণ চাপ এড়াতে প্রথমেই নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, পারিবারিক বা সামাজিক চাপের কারণে এই বিয়েটা করতে বাধ্য হচ্ছেন না তো? তেমন হলে পিছিয়ে আসুন। নিজের কাছে যদি সৎ থাকেন, তা হলে চাপমুক্তির পথও নিজের ভিতর থেকেই খুঁজে পাবেন।
আত্মবিশ্বাস ধরে রাখুন
সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিয়ের আগের দিনগুলোয় মেয়েদের স্ট্রেসের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি হয়। এখন মেয়েরা একটু বেশি বয়সে বিয়ে করছেন। ফলে নতুন পরিবেশ, নতুন অভ্যাসের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। এ সব ক্ষেত্রে আগে থেকেই হবু স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির অন্য লোকজনের সঙ্গে কথা বলে নিজের অভ্যাসগুলো বুঝিয়ে দিন। মেজাজ না হারিয়ে শান্ত গলায় কথা বললে সুফল আসবেই।
অর্থ যখন অনর্থের মূল
পারস্পরিক সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সূত্রপাত হয় টাকা-পয়সাকে কেন্দ্র করে। কাজেই বিয়ের কথা পাকা হয়ে যাওয়ার পরে হবু স্বামীর সঙ্গে বিয়ের বাজেট নিয়ে বসুন এবং নিজেদের ও দুই পরিবারের ইচ্ছে ও পছন্দগুলো জেনে নিন। এরপরে বিয়েবাড়ি ভাড়া, খাবারের মেনু, অন্দরসাজ, অতিথি তালিকা, ফটোগ্রাফারের মতো বিষয়গুলো ঠিক করে প্রতিটি খাতের জন্য আলাদা আলাদা বাজেট তৈরি করে নিন। প্রথম থেকেই টাকা-পয়সার দিকটা গুছিয়ে নিলে সংঘাতের আশঙ্কা কমবে।
নিজের মত প্রকাশ করুন
বিয়েবাড়িতে প্রত্যেকেই, বিশেষ করে পাত্র-পাত্রীর বাবা-মা, প্রতিটি বিষয়ে নিজেদের মত জাহির করতে শুরু করেন। অনেক মেয়েই এ সব ব্যাপারে নিজের মত প্রকাশ করতে দ্বিধা করেন। যা থেকে পরে মনে অসন্তোষ জমা হতে পারে। গুরুজনদের কথা অবশ্যই শুনবেন, কিন্তু নিজের পছন্দ-অপছন্দগুলোও চেপে রাখার দরকার নেই। আমার শাড়ির রং, গয়নার ডিজাইন থেকে শুরু করে খাবারের মেন্যু বা অন্য যে কোনও ব্যাপারে আপনার যদি কোনও বক্তব্য থাকে, তা হলে খোলাখুলি আলোচনা করুন।
অহেতুক উদ্বেগ বাদ দিন
বিয়ে মানেই এতদিন যে জীবনটা কাটিয়ে এসেছেন, তা থেকে অনেকটাই সরে আসা। যাকে বিয়ে করছেন, সারাজীবন তার সঙ্গে থাকতে পারবেন কিনা, শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে কেমন সম্পর্ক হবে, বাড়তি দায়িত্বের বোঝা টানতে পারবেন কিনা, এমন হাজারটা দুশ্চিন্তা মাথার মধ্যে ঝেঁপে আসে বিয়ের আগে। বিয়ে-পরবর্তী শারীরিক ঘনিষ্ঠতা নিয়েও মেয়েরা উদ্বেগে থাকেন। এই চাপ থেকে মুক্তির একটাই উপায়। মনের মধ্যে কোনও ধারণা পুষে রাখবেন না। টেনশন চেপে না রেখে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলুন। মা বা পরিবারের মুরব্বীদের কাছ থেকে অনেক টিপস পাবেন। বিবাহিত বান্ধবীরাও নানা পরামর্শ দিতে পারেন। যদি চান, হবু স্বামীর সঙ্গে কথা বলেও সহজ হয়ে নিতে পারেন। কাজ না হলে কাউন্সিনিং্যের সাহায্য নিন।
সারাক্ষণ বিয়ের আলোচনা নয়
বিয়ে নিয়ে সঙ্গীর উদাসীনতা অনেক সময়ই নানা সংশয়ের জন্ম দেয়। তবে সারাক্ষণ বিয়ে নিয়ে কথা বলতে থাকলে একঘেয়েমি আসতে বাধ্য। তাই হবু স্বামীর সঙ্গে সারাক্ষণ বিয়ের গল্প না করে অন্য কথাও বলুন। কফি খেতে যান, সিনেমা দেখুন। এতে আপনি এবং উনি; দু’জনেই চাপমুক্ত থাকবেন।
সুত্রঃ ইন্টারনেট
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে
