বাবা-মায়ের বিশেষ যত্ন অটিস্টিক শিশুর জন্য উপকারি

0
25
ডিসগ্রাফিয়ার: শিশুদের বানান ভুলের সমস্যা

বাবা-মাকে ‘সুপার প্যারেন্ট’ হওয়ার প্রশিক্ষণ দিলে তাদের অটিজমে আক্রান্ত শিশুর সমস্যায় ব্যাপক উন্নতি হয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাজ্যের স্টকপোর্ট এসএইচএস ট্রাস্ট পরিচালিত একটি দীর্ঘমেয়াদী গবেষণায় পরীক্ষাধীন অভিভাবকদের নিজেদের আর তাদের অটিস্টিক শিশুর খেলা করার ভিডিও দেখানো হয়। ওই সময় একজন থেরাপিস্ট তাদের বিভিন্ন অংশে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেন শিশুর সঙ্গে আরও ভালো যোগাযোগ স্থাপন করতে তাদের ঠিক কী কী করা দরকার।
সেই কৌশলগুলো বাস্তবে ফলাতে গিয়ে অনেক উপকার পাবার কথা স্বীকার করেছেন অটিজমের শিকার শিশুদের বাবা-মা। এতে তাদের সন্তানের মানসিক অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে বলে গবেষণায় জানিয়েছেন তারা।
গবেষণাটি জটিল অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের বাবা-মায়ের ওপর পরিচালিত হয়, যে শিশুরা বেশিরভাগ সময়ই বাবামায়ের সঙ্গে কথাও বলতে পারে না।
ওই গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন লুইসা হ্যারিসন তার ছেলে ফ্র্যাংককে নিয়ে। সন্তানের আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন দেখেছেন তিনি। লুইসা জানান, ফ্র্যাংক রাস্তার পাশের ল্যাম্পপোস্টগুলো দেখতে খুব পছন্দ করে। শরৎকালে ল্যাম্পগুলোতে আলো জ্বলা-নেভার সময় পাল্টে যায়। সেটা লক্ষ্য করে প্রতিবছরই খুব খুশি হয় ফ্র্যাংক।
অন্যান্য বার এই সময়টাতে ল্যাম্পপোস্ট নিয়ে মা ছেলের যোগাযোগটা হতো নীরব, অনেকটা যেন চোখে চোখে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ফ্র্যাংক নিজে থেকেই কথা বলা শুরু করে, “মা! মা! দেখ, ওগুলো অন্যভাবে জ্বলে উঠেছে।”
চার বছর আগে এমন একটা বাক্য ফ্র্যাংকের পক্ষে বলাই সম্ভব হতো না বলে খুশির কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন লুইসা।
গবেষণাটি সম্পর্কে স্টকপোর্ট এসএইচএস ট্রাস্টের কথা ও ভাষা বিষয়ক থেরাপিস্ট এবং কনসালটেন্ট ড. ক্যাথেরিন আলড্রেড জানান, গবেষকদের লক্ষ্য ছিল শিশুর সামাজিক যোগাযোগের দক্ষতা বাড়াতে বাবা ও মায়ের আচরণ ও শিশু লালনপালন পদ্ধতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।
ড. ক্যাথেরিন বলেন, “আমরা অভিভাবকের সঙ্গে শিশুর যোগাযোগকে ‘সুপার’ পর্যায়ে নিয়ে গেছি। কারণ এই বাচ্চারা শুধু ‘ভালো’ কিছু পাওয়ার দাবিদার নয়। তাদের দরকার বিশেষ কিছু।”
সেজন্য বাবামায়ের সঙ্গে শিশুদের খেলা, কথাবার্তাসহ সব কাজকর্ম রেকর্ড করা হয় গবেষণার উদ্দেশ্যে। সেখান থেকে বাছাই করে এমন মুহূর্তের ভিডিওগুলো বাবামাকে দেখানো হয়েছে যেখানে আরও ভালোভাবে বা অন্যভাবে শিশুটির সঙ্গে আচরণ করা যেত। কিন্তু বাবামা হয় তো সেগুলো খেয়ালই করেননি।
ভিডিও ক্লিপগুলো দেখিয়ে বিশেষ যোগাযোগ কৌশল শেখানো হয় তাদের। এবং দীর্ঘদিনের চেষ্টার ফল হিসেবে একসময় গবেষণার অংশ অটিস্টিক শিশুরা নীরবতার কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে বেশি করে কথা বলতে শুরু করে।

Previous articleদিনের কোন সময়ের আলো মন-মেজাজ ভালো করে
Next articleযে কারণে আপনি অন্যের কাছে বিরক্তিকর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here