বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী সারা পৃথিবীতে প্রায় ২০ ভাগ শিশু কিশোর মানসিক রোগে ভুগছে। আমাদের দেশের পূর্ববর্তী গবেষণায়ও এর বেশ কাছাকাছি দেখা গেছে। বাচ্চাদের আচরণগত সমস্যা লম্বা সময়ের জন্য ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও দেশের উন্নয়নের জন্য বাঁধার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বা দাঁড়াতে পারে। বড়দের চাইতে শিশুদের চিকিৎসা বেশ আলাদা। এর বেশ কিছু কারণ বিদ্যমান। যেমন,
১) শিশুরা নিজের সমস্যা সঠিক করে নাও বলতে পারে।
২) শিশুর পরিবারের সমস্যা শিশুর রোগের লক্ষণের কারণ হতে পারে।
৩) শিশুর পরিবার শিশুর আচরণ কীভাবে দেখে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৪) পরিবারের লোকজন চিকিৎসা চান কিনা
৫) পরিবারের লোকদের পরিবর্তন আদৌ সম্ভব কিনা
৬) স্কুলে শিশুর আচরণ কেমন এবং স্কুল সেটাকে কোন দৃষ্টি ভঙ্গিতে দেখে।
৭) আরও পারিপার্শ্বিক অনেক বিষয়।
শিশুটি তার নিজের অসুবিধা কতটুকু সঠিকভাবে বলতে পারতেছে সেটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাদের বয়সের পার্থক্যের সাথে সাথে এগুলো পরিবর্তন হতে পারে। তারপরও শিশুরা বেশিরভাগ সময়ই ডাক্তারদের ভয় পেতে পারে এই ভেবে যে বাবা মা তাদের শায়েস্তা করার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে এসেছে।
পরিবারের অবস্থার ওপর শিশুর শারীরিক মানসিক বিকাশ অনেকাংশে নির্ভর করে। অনেক সময় শিশুরা পারিবারিক সমস্যা এড়িয়ে চলার জন্য নিজেরা বিপর্যন্ত হয়ে পড়েন। বাবা মা এবং পরিবারের ভূমিকা অনেক বেশি। অনেক সময় দেখা যায় শিশুর কোনো রোগ নাই বাবা মা রোগ মনে করতেছেন এবং চিকিৎসা নিতে চান। আবার অনেক সময় দেখা যায় শিশুর রোগ আছে বাবা মা বুঝতে পারেন না। অনেক সময় বুঝতে পারেন, অন্যান্য ডাক্তারের কাছে যান, কিন্তু মানসিক রোগ বলে মেনে নিতে পারেন না এবং মানসিক স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আসতে চান না। আবার এটাও দেখা যায় অন্যান্য ডাক্তাররা শিশুটিকে মানসিক ডাক্তারের কাছে পাঠিয়েছেন বাবা মা তারপরও শিকার করতে চান না।
মানসিক স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আর একটি অসুবিধা বিদ্যামান। অনেকেই ভাবতে থাকেন আমি সাইকোথেরাপিস্ট এর কাছে যাব না মনোরোগ বিদ্যা বিশেষজ্ঞের কাছে যাব। অনেক সময় মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় তা বাবা মা মেনে নিতে চান না। তাতে ফল ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কমই।
শিশুর অস্বাভাবিক আচরণ মা বাবাদের গুরুত্বের সাথেই নেওয়া উচিৎ এবং সেটার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা গ্রহণ করে চিকিৎসা করানো দরকার। শিশুর আচরণে অসুবিধা মানেই শিশুর অসুবিধা সেটা নাও হতে পারে।