দেশে প্রথমবারের মতো একটি সমন্বিত পন্থায় বাংলাদেশের সরকারি এবং এনজিও স্বাস্থ্য কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন করে সঠিক উপায়ে প্রতিবন্ধী শিশুদের সনাক্ত করা এবং যথাযথ সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের মানচিত্র প্রণয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারি।
এ প্রকল্পের লক্ষ্য প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং সংশ্লিষ্ট সহযোগীদের দক্ষতা উন্নয়ন। ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর আর্থিক সহযোগিতায় পনেরো মাসের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে আইসিডিডিআর,বি এবং ফেইথ বাংলাদেশ এবং এই প্রকল্পের সার্বিক কারিগরি দিক নির্দেশনা দিচ্ছে সূচনা ফাউন্ডেশন।
বাংলাদেশে আনুমানিক ১ কোটি ৬০ লাখ বা ১০% মানুষ প্রতিবন্ধী। প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের প্রতিবন্ধিতা সনাক্তকরন দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের চাবিকাঠি, কিন্তু বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকরী সমন্বিত সনাক্তকরণ ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। এই প্রকল্পে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত ০ থেকে ১৮ বছর বয়সের শিশুদের জন্য প্রতিবন্ধিতা শনাক্ত করনের টুল নির্ধারণ করা হবে। একই সাথে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাঠপর্যায়ে কর্মরত ব্যবস্থাপক, সুপারভাইজার ও কর্মীদের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধীদের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহ করার মাধ্যমে মানচিত্র প্রণয়ন করা হবে, যা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং সেবা গ্রহণকারীদের সংযোগ স্থাপনে সাহায্য করবে। এই প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত তথ্য ভবিষ্যতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের নীতিমালা তৈরি ও কর্মসূচি প্রসারে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অটিজম এবং নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার বাংলাদেশ এর জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য , বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অটিজম বিষয়ক শুভেচ্ছাদূত এবং সুচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সায়েমা ওয়াজেদ হোসেন।
ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর শিশু সুরক্ষা বিভাগের প্রধান জন লেবি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, আমরা একটি আদর্শ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারব যা প্রতিবন্ধী শিশু এবংতাদের পরিবারের সদস্যগণ যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হন তা কমাতে অবদান রাখবে”।
সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ জিল্লার রহমান প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যমান নীতি, চর্চা, কার্যক্রম এবং চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরেন এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণের প্রচেষ্টার উপর জোর দেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সায়েমা ওয়াজেদ হোসেন এই প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করে বলেন “প্রতিবন্ধিতা” আমাদের সকলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা আমাদের আরও ভালোভাবে বুঝতে হবে, আমাদের সবার একসঙ্গে কাজ করতে হবে, একজন প্রতিবন্ধী, অথবা প্রতিবন্ধী আছে এমন পরিবার সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা একটি সমাজ, একটি দেশ হিসেবে শিক্ষা নিতে পারি এবং আমাদের জাতিকে বাকি বিশ্বের কাছে একটি সফল এবং আদর্শ হিসেবে তুলে ধরতে পারি।’’
এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের সাথে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ, পরিবার কল্যাণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাক্তার কাজী মোস্তফা সারওয়ার, আইসিডিডিআর,বি এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম এবং ফেইথ বাংলাদেশের প্রধান নিলুফার আহমেদ করিম।
প্রতিবেদক, মনেরখবর.কম
লক্ষ্য করুন- মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক খবর বা প্রেস রিলিজও আমাদের পাঠাতে পারেন। বৈজ্ঞানিক সেমিনার, বিশেষ ওয়ার্কশপ, সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোনো খবর পাঠাতে news@www.monerkhabor.com এই ইমেইলটি ব্যবহার করতে পারেন আপনারা।