শুধু খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করলে ওজন কমানো সম্ভব নাও হতে পারে। এর জন্য চাই শক্ত মনোবল।
‘ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক’য়ের পুষ্টিবিদ লরেইন কার্নি বলেন, “খাবারের পুষ্টি ও স্থূলতার দিকে মনোযোগ দিতে গেলে কতটা ক্যালরি গ্রহণ করা হচ্ছে ও কতটা খরচ করা হচ্ছে সেদিকে মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি খাবারের সঙ্গে সম্পর্কের দিকটাও খেয়াল করতে হবে।”
এই পুষ্টিবিদ আরও বলেন, “অন্ত্রের সুস্থতা, মানসিক চাপ, ঘুম চক্র, অসুস্থতা, খাবার ও স্বাদের প্রাধান্য, অর্থনৈতিক উৎস, খাবারের প্রাপ্যতা ও এমনকি নিজের ইচ্ছার ওপরেও গুরুত্ব দিতে হয়।”
খাবারের সঙ্গে সুসম্পর্কে বাড়াতে পুষ্টি জ্ঞান থাকা জরুরি। খাবারের সঙ্গে হওয়া সম্পর্ক কেবল শরীরকে নয় বরং মনকেও প্রভাবিত করে। দেহের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি শক্তি যোগায় এবং খাবারের রং, স্বাদ, আকার, সাংস্কৃতিক পছন্দ ও আকাঙ্ক্ষার ওপরে খাবারের সঙ্গে মানসিক সম্পর্ক নির্ভর করে।
খাবারের সঙ্গে মানসিক সম্পর্ক তৈরি না করে কেবল অভ্যাসে খাবার গ্রহণ করায়, অধিকাংশ মানুষই তাদের নিজেদের প্রয়োজন বুঝতে পারে না। আর সে অনুযায়ী খাবার তালিকাও পরিবর্তন করে না।
খাবারের সঙ্গে মানসিক সম্পর্ক তৈরির উপায় কী? এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ ইলানা মুহলস্টিন নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানিয়েছেন সেই উপায়।
তিনি বলেন, “ছোট বেলায় ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে নিজের মাপ মতো প্যান্ট ও স্কার্ট না পাওয়ায় দ্বিগুন সাইজে অর্ডার দিতে বানাতে হত। আর কোনো উৎসবের পোশাক বানাতে হলে দোকান থেকে গজ কাপড় কিনে দর্জির কাছ থেকে বনিয়ে নিতে হত।”
“১৩ বছরের একজন মেয়ে হিসেবে এতবড় মাপের পোশাক দোকানে পাওয়া যেত না।”
এরপর থেকেই তিনি নিজেকে পরিবর্তনের চেষ্টা করেন।
“বয়সের তুলনায় ১০০ পাউন্ড বেশি ওজন আমাকে ভেতরে ভেতরে মানসিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছিল।”
তার লেখা ‘ইউ ক্যান ড্রপ ইট’ বইতে, ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে তিনি ব্যাখা করেন, “খাবারের আগে পানি পান, প্রথমে সবজি দিয়ে খাওয়া শুরু করা এবং পরে অন্যান্য খাবার গ্রহণ করতে হবে।”
তার এই কৌশল দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্যও উপকারী। কাজ করতে যেয়ে তিনি বুঝতে পারেন, কীভাবে সবাই আসলে ওজন কমানোর যুদ্ধে নামেন এবং তিনি কীভাবে সহজে ও আনন্দের সঙ্গে ওজন কমাতে তাদের সহায়তা করতে পারবেন। তিনি তার প্রোগ্রামকে ‘টুবি মাইন্ডসেট’ বলতেন।
মুহলস্টিন সঙ্গে একমত পোষণ করে কার্নি বলেন, “নিজের শরীর নিয়ে ভয়ে বেঁচে থাকা যায় না। অনেক রোগীকেই ডাক্তাররা বলেন ওজন কমাতে। কিন্তু এটা অতটা সহজ না। সুস্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে গেলে অনেক শর্ত ও চিকিৎসার দিকেও খেয়াল রাখতে হয়।”
স্থূলতার প্রধান দুটি কারণ হল- থায়রয়েড ও ‘পলিসিস্টিক অভারিয়ান সিন্ড্রোম’ যা বিপাক ও হরমোনে প্রভাব ফেলে এবং ব্যক্তির ওজন কমানোর লক্ষ্যে বাঁধার সৃষ্টি করে।
তাই, ওজন কমাতে প্রথমে স্থূলতার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং এইভাবেই লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে।
তাই কাউকে কেবল ওজন কমাতে বলা ঠিক হবে না। এটা তার মানসিক চাপ বাড়াতে পারে। বরং তার প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া জরুরি।
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে