দর্শকশূন্য মাঠে খেলার জন্য মনোবিদের কাছে স্টুয়ার্ট ব্রড

দর্শকশূন্য মাঠে খেলার জন্য মনোবিদের কাছে স্টুয়ার্ট ব্রড
দর্শকশূন্য মাঠে খেলার জন্য মনোবিদের কাছে স্টুয়ার্ট ব্রড

চাপ যখন প্রবল, স্টুয়ার্ট ব্রড সেরাটা মেলে ধরেন তখনই। দর্শকের সমর্থন হোক বা দুয়ো, দুটিই জাগিয়ে তোলে তাকে। ক্যারিয়ারে অনেকবারই এটির প্রমাণ দিয়েছেন ইংলিশ পেসার। এবার তাকে খেলতে হবে দর্শকশূন্য মাঠে। মানসিক এই পরীক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করতে ক্রীড়া মনোবিদের পরামর্শ নিয়েছেন ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ পেসার।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এবার ইংলিশ গ্রীষ্মের সব ম্যাচ হবে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। ক্রিকেটের বাস্তবতা যদিও অন্য অনেক খেলার মতো নয়, তার পরও ক্রিকেটারদের জন্য এটি হবে বড় পরীক্ষা, সাউথ্যাম্পটনে রোববার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বললেন স্টুয়ার্ট ব্রড।
“ ফুটবল বা রাগবির চেয়ে ক্রিকেট একটু আলাদা। ঘরোয়া ক্রিকেটে যখন লাল বলের ম্যাচ খেলি আমরা, অনেক সময়ই খুব কম দর্শকের সামনে খেলতে হয়। কাজেই শুধু দর্শকের উৎসাহই যে আমাদের ধাবিত করে বা ওই আবহের ওপর সব নির্ভর করে, তা নয়।
তবে দর্শক ছাড়া খেলাটাকে অবশ্যই ভিন্ন কিছু মনে হবে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিশ্চিতভাবেই হবে মানসিক পরীক্ষা, প্রতিটি ক্রিকেটারকে এই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সেটি নিয়ে আমি খুবই সচেতন এবং এর মধ্যেই আমাদের ক্রীড়া মনোবিদের সঙ্গে কথা বলেছি যেন নিজের সেরাটা দেওয়ার মতো মানসিক অবস্থায় থাকতে পারি” বলেন স্টুয়ার্ট ব্রড।

নিজেকে খুব ভালো করে চেনেন বলেই দর্শকশূন্য মাঠের চ্যালেঞ্জের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন, জানালেন টেস্ট ইতিহাসের চতুর্থ সফলতম পেসার (৪৮৫ উইকেট) স্টুয়ার্ট ব্রড।

“ আমাকে অ্যাশেজের কোনো ম্যাচ খেলতে বলুন আর কোনো প্রাক-মৌসুম প্রীতি ম্যাচ, আমি জানি কোন ম্যাচে বেশি ভালো পারফর্ম করব। তাই টেস্ট ম্যাচের জন্য যে মানসিকতা থাকা উচিত, তা নিশ্চিত করতে হবে আমাকে এবং জুনের শুরুতে থেকেই এটি নিয়ে কাজ করছি।”
“ আমার জন্য ব্যাপারটি দুর্ভাবনার, কারণ আমি জানি, ক্রিকেটার হিসেবে আমার সেরা পারফরম্যান্সটা আসে যখন চাপে থাকি, খেলায় যখন উত্তেজনা প্রবল এবং পার্থক্য গড়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়। এটাও জানি, কিছু কিছু পরিস্থিতিতে আমার সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্সও বেরিয়ে আসে। সেই দোলাচলেই এখন আছি।”
৩৪ বছর বয়সী পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড জানালেন, খেলার নির্ভেজাল আনন্দটা খুঁজে পেতে দারুণ এক পরামর্শ পেয়েছেন তার মায়ের কাছ থেকে। “ এখানে আসার আগে মা আমাকে বলেছেন, ‘১২ বছর বয়সে ফিরে যাও, যখন যে কোনো জায়গায় ক্রিকেট খেলতে চাইতে।’ সেই মানসিকতা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছি। অবশ্যই আমরা এখন ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলছি। কিন্তু ১২ বছর বয়সে যে ব্যাপারটি ছিল, যে কোনো মূল্যে শুধু খেলতে চাইতাম। ছুটির দিন সকালে জানালার পর্দাটা সরিয়ে যদি দেখতাম বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে, মনটাই খারাপ হয়ে যেত। ক্রিকেটের সেই রোমাঞ্চ ও আনন্দ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছি। এভাবে ভাবলে ভেতরে প্রাণশক্তি অনুভব করা যায়” বলে জানান স্টুয়ার্ট ব্রড।
আগামী ৮ জুলাই থেকে শুরু হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের টেস্ট সিরিজ। তার আগে নিজেদের মধ্যে তিন দিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ইংলিশরা। এই ম্যাচে স্কিলের ঝালাই নিয়ে যতটা ভাবনা, ব্রড তার চেয়ে বেশি ভাবছেন মানসিক প্রস্তুতি নিতে।
“ এমন একটি মানসিকতা আমার গড়ে তুলতে হবে, যেন মনে না হয় যে ‘কিছুই হচ্ছে না এখানে, কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।’ আমার মস্তিষ্ককে টেস্ট ম্যাচের আবহে নিয়ে আসতে হবে। এটা বলছি না যে এখনই তা পুরোপুরি হয়ে গেছে, এখনও অনুশীলনে এটা নিয়ে কাজ করছি। তবে অনুশীলনের সময় তো এমনিতেও দর্শক থাকে না, এভাবেই সবসময় অনুশীলন করে আসছি।”
“মূলত ম্যাচের সময়ই অদ্ভূত লাগতে পারে দর্শক ছাড়া। এজন্য তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে নিজেদের মন ও শরীরকে ম্যাচের মতো করে তৈরি করতে হবে, যেন ৮ জুলাই মাঠে নামার পর অস্বস্তি না থাকে।”

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন

Previous articleমহামারী সময়ে মানসিক ব্যাধি এড়াতে সচেতনতা বেশি প্রয়োজন
Next articleশিশুর মানসিক বিকাশে পরিবেশ সরাসরি জড়িত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here