ডিভোর্স সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে

0
9
মনের খবর

ডা. ফয়সাল রাহাত
ফেইজ বি রেসিডেন্ট, এমডি (সাইকিয়াট্রি), মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বিএসএমএমইউ

স্থিতিশীল মানবসভ্যতার জন্য বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক জোড়া মানব-মানবী পবিত্র এ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে পরস্পরের কাছাকাছি আসে, তৈরি করে পরবর্তী মানব প্রজন্ম। যখন কোনো দম্পতি সংসার শুরু করেন, তখন দুজনই স্বপ্ন দেখেন যে সম্পর্কটি আমৃত্যু টিকে থাকবে।

এ সম্পর্ক যে মাঝপথে ভেঙে যেতে পারে, সে চিন্তা হয়ত-বা তারা কল্পনাতেও আনেন না। কিন্তু মানুষ বড়োই রহস্যময় প্রাণী। আজ যাকে ভালো লাগছে, কাল তাকে ভালো নাও লাগতে পারে; ফলাফল গড়ায় ডিভোর্সে। তবে ব্যাপারটি এতটা সরলও নয়। মানুষ পরিবারবদ্ধ ও সামাজিক জীব হওয়ায় ডিভোর্সের ক্ষেত্রে আর্থ-সামাজিক ও পারিবারিক ব্যাপারগুলোও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ডিভোর্স যে কারণেই হোক না কেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা সন্তানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদ সন্তানের মানসিক অবস্থার উপর কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে তা যাচাই করার জন্য গবেষক Felicitas Auersperg, Thomas Vlasak, Ivo Ponocny এবং Alfred Barth একটি Meta Analysis সম্পন্ন করেন। এ Meta Analysis-এ ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত ৫৪টি স্টাডি অন্তর্ভুক্ত করা হয়, ফলে মোট Sample সংখ্যা হয় ৫০৬২৯৯।

গবেষণায় বিভিন্ন মানসিক অবস্থার ক্ষেত্রে যে Odds Ratio পাওয়া যায় তা হলো (৯৫% CI): বিষণ্ণতা ১.২৯, অ্যাংজাইটি ১.১২, মানসিক চাপ ১.৪৮, আত্মহত্যার প্রচেষ্টা ১.৩৫, আত্মহত্যার চিন্তা ১.৪৮, অ্যালকোহল ১.৪৩ এবং ধূমপান ১.৬৪। গবেষণায় p value=০.০০৫ পাওয়া যায়, যা নির্দেশ করে পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদ দীর্ঘমেয়াদে সন্তানের মানসিক অবস্থার উপর যথেষ্ট নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

বিবাহবিচ্ছেদ কারও কাম্য নয়, তবে কিছু পরিস্থিতিতে হয়ত বিবাহবিচ্ছেদ আবশ্যক হয়ে পড়ে। তবে সে বিচ্ছেদ সন্তানের জন্যে যেন হানিকর না হয় সে দিকেও পিতামাতার লক্ষ রাখা উচিত।

তথ্যসূত্র

https://www.sciencedirect.com/science/articl e/abs/pii/S0022395619304510

Previous articleব্রেইন, মনোরোগ, যৌন সমস্যা ও মাদকাসক্তি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আব্দুল্লাহ ছায়েদ সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি
Next articleযশোর সদর হাসপাতালে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২৪ উদযাপন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here