জীবনে সফলতা আসতে পারে মানসিকতা পরিবর্তনে

জীবনে সফলতা
মানসিকতাই একজন মানুষের অস্তিত্বের বুনিয়াদ। জীবনে সফলতা পাওয়া এবং সুখী হওয়ার সাথে একজন ব্যক্তির মন-মানসিকতার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।

মন-মানসিকতা একজন ব্যক্তির আচার-আচরণকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। একজন নেতিবাচক মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তি অন্যদের সাথে সাথে নিজের ব্যক্তিত্বের উপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমাদের অন্তর্নিহিত বিশ্বাস এবং চিন্তাভাবনা আমাদের অলক্ষ্যেই আমাদের জীবনকে আকৃতি প্রদান করে। তাই জীবনে সফলতা পেতে হলে মানসিকতার উৎকর্ষ ঘটান প্রয়োজন।

আমাদের শিক্ষা, লালনপালন প্রক্রিয়া, বয়স, ধর্ম এবং অভিজ্ঞতা আমাদের চিন্তাভাবনা এবং মানসিকতা গড়ে তোলে। আর এই মানসিকতাই আমাদের নিজেদের কাজকর্ম এবং একইভাবে অন্যদের কাজকর্মের প্রতি আমাদের প্রতিক্রিয়া কি হবে সেটি নির্ধারণ করে। আমাদের ইতিবাচক মানসিকতাই চারপাশের জগৎটাকে দেখার প্রক্রিয়াকে বদলে দিতে পারে।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে মানসিকতা দু’ধরণের হয়ে থাকে। একটি হল ক্রমবিকাশমান মানসিকতা এবং অন্যটি অর্ন্তগ্রথিত মানসিকতা। এই অন্তর্গ্রথিত মানসিকতা এমন একটি স্থায়ী  বিশ্বাস যা পরিবর্তন করা যায়না। এটি আমাদের শিক্ষা এবং বুদ্ধিমত্তাকে সীমিত করে দেয়। অপরপক্ষে, ক্রমবিকাশমান মানসিকতা সময়ের সাথে সাথে, অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষার উৎকর্ষের মাধ্যমে তৈরি হয়। এটি আমাদের মানসিক উন্নয়ন ঘটিয়ে উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। সব মিলিয়ে তাই বলা যায়, মানসিকতা যেমন একজন মানুষের চিন্তাভাবনাকে সীমাবদ্ধ করে দিতে পারে তেমনি আমাদেরকে চিন্তাভাবনার স্বাধীনতাও প্রদান করতে পারে। আমরা কোনটি বেছে নেব সেটি আমাদেরকেই ঠিক করতে হবে।

মানসিক উন্নয়ন ঘটিয়ে সফলতা প্রাপ্তির জন্য কিছু কার্যকরী উপায়-
১. সচেতনতা বৃদ্ধি: নিজের মানসিকতা এবং বুদ্ধির ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে কখনো কখনো নিজের সিদ্ধান্তের সাথেও সমঝোতা করতে হয়।  যে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে আপনি কিভাবে সেটি নিয়ে ভাবলেন, সেটি নিয়ে আপনার ধ্যান ধারণা সব কিছুর ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।

২. বাস্তবতাকে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-এর মাঝে বেঁধে রাখবেন না: অধিকাংশ সময় আমরা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-এর বাইরে কিছু ভাবতে পারিনা। এর বাইরেও অন্য কোন সমঝোতার পথ থাকতে পারে যা নিয়ে না ভাবাটাই আমাদের সব থেকে বড় ভুল।

৩. সব সময় নিজের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন: সব অবস্থায় আপনিই সঠিক এমন ভাবাটাই আপনার মানসিকতার সব থেকে দূর্বল দিক। নিজের বিশ্বাস এবং বুদ্ধির উপর আস্থা থাকা অবশ্যই ভাল। কিন্তু সেটি যেন স্বেচ্ছাচারীতার পর্যায়ে না চলে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

৪. জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ: আপনার জীবনের লক্ষ্য কি, আপনি ঠিক কি হতে চান সে বিষয়ে একটি সঠিক দিক নির্দেশনা ধরে সামনে এগিয়ে যান। আপনার মন এবং বিশ্বাস দু’টোকে সেদিকে কেন্দ্রীভূত করুন।
আপনার সুস্থ মানসিক বিকাশই হল পৃথিবীর প্রতি এবং সর্বপোরি আপনার নিজের প্রতি আপনার ধারণা বদলে দেবার সব থেকে বড় হাতিয়ার। আপনার মানসিকতাই আপনাকে সব থেকে বেশি প্রতিফলিত করে। সংকীর্ণতা কাটিয়ে স্বাধীনভাবে বাঁচার জন্য মানসিক উন্নয়ন খুবই প্রয়োজন।

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleমাঝে মধ্যে কিছুটা আত্মকেন্দ্রিক হওয়া যেতেই পারে
Next articleকরোনার আবহে রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখবেন যেভাবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here