বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষের মধ্যে রোগ সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে মানসিক সুস্থ্যতার ওপর। এমনটাই বলা হয়েছে বিশ্বব্যাংকের দি ক্লাইমেট অ্যাফ্লিকশনস রিপোর্টে।
এই রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশে শ্বাসতন্ত্রের ব্যাধি, পানি ও মশাবাহিত রোগ বৃদ্ধি এবং মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বিশ্বব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জলবায়ুর আরও পরিবর্তন ঘটলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক রোগ আরো বৃদ্ধি পাবে। এমন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে শিশু ও বৃদ্ধরা। পাশাপাশি আছেন ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় নগরীর বাসিন্দারা।
বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের অধিকতর প্রভাব দেখা দেওয়ায় বাংলাদেশের জলবায়ু-জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্য পদ্ধতি গড়ে তোলা নিশ্চিত করতে অভিযোজন প্রক্রিয়ায় সফলতা অর্জন করা জরুরি।
বিগত ৪৪ বছর বাংলাদেশে তাপমাত্রা ০.৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে গ্রীষ্মকাল অধিকতর উষ্ণ ও দীর্ঘ হচ্ছে এবং শীতকালও অপেক্ষাকৃত উষ্ণ থাকছে। এছাড়াও বর্ষাকালের স্থায়ীত্ব ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত থাকছে। অর্থাৎ জলবায়ুর প্যাটার্নে বাংলাদেশের মৌসুমগুলোর মধ্যে ভিন্নতা হ্রাস পাচ্ছে।
এই ধরণের আবহাওয়া পরিস্থিতি ২০১৯ সালে রাজধানীতে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবে মূল ভূমিকা রেখেছে এবং দেশে ডেঙ্গুর কারণে ৭৭ শতাংশ মৃত্যু হয়।
আবহাওয়ার প্যাটার্ন মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। শীতকালে অধিক লোক বিষন্নতায় ভুগে। তাপমাত্রা ও আদ্রতার কারণে উদ্বিগ্নতার মাত্রাও বেড়ে যায়। নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি বিষন্নতায় ভুগে। পুরুষরা উদ্বিগ্নতায় বেশি ভুগে।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশনস কর্মকর্তা ও এই প্রতিবেদনের সহ-লেখক ইফফাত মাহমুদ সমাধানে বলেন, নিজেকে-সহায়তা করার গ্রুপ তৈরির মাধ্যমে সচেতনতা গড়ে তোলা ও জনগোষ্ঠীর মধ্যে উদ্বুদ্ধকরণের প্রয়াস চালিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য ইস্যুটি আরো ভালভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব।
০৮ নভেম্বর ২০২১, মারুফ খলিফা