করোনা মহামারীর এই দুঃসময়ে ঘুম না হওয়ার সমস্যা প্রায় সর্বজনীন একটি সমস্যা হয়ে উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে ঘুম না হওয়ার এই সমস্যাটি হতে পারে মহামারীকালে বৃদ্ধি পাওয়া বিভিন্ন মানসিক সমস্যারই লক্ষণ।
মনস্তত্ত্ববিদ গণ বলেন, যারা পর্যাপ্ত ঘুমায় তারা তুলনামূলকভাবে কম মানসিক সমস্যায় ভোগে। অন্যভাবে বলা যায়, আপনার ঘুম কেমন হয় সেটি হতে পারে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের পরিচায়ক। তাই যদি আপনার রাতে ঘুমাতে অসুবিধা হয় বা ঘুম না হয়, তাহলে অবশ্যই আপনার মানসিক স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন।
যদি এক্ষেত্রে আপনি অনুধাবন করেন যে অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে রাতে আপনার ঘুমাতে অসুবিধা হচ্ছে, তাহলে পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য তথা সুস্থ জীবন যাপনের জন্য এখনই আপনার মানসিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো দূর করা প্রয়োজন। নিচে কিছু কৌশল উল্লেখ করা হল যেগুলো মানসিক চাপসহ অন্যান্য মানসিক জটিলতা গুলোকে কমাতে এবং রাতে পর্যাপ্ত ঘুমাতে সহায়তা করবে।
বিছানায় যাওয়ার ৩০ মিনিট আগে সব ধরণের স্ক্রিনিং বন্ধ করা
যদিও আপনার মোবাইল ফোনটিতে আই প্রোটেকশন মোড থাকে, ঘুমানোর সময় এটি সামনে থাকা আপানার ঘুম না আসার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠতে পারে।। এটি আপনার স্নায়ু গুলোকে অস্থির করে মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয় এবং এ কারণে ঘুম আসতে চায়না।
তাই ঘুমানোর প্রস্তুতি গ্রহণ বা বিছানায় যাওয়ার প্রায় ৩০ মিনিট আগে টিভি, মোবাইলসহ সব ধরণের স্ক্রিন থেকে বিরত থাকুন। এতে আপনার ঘুমের অসুবিধা অনেকটাই দূর হবে।
দিনের মধ্যাহ্ন ভাগের পর ক্যাফেইন এবং চিনি সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলুন
সমস্যাটি হয়তো ঘুম আসার নয়, তবে ঘুম পর্যাপ্ত না হবার সমস্যাটি এই ক্যাফেইন বা চিনি সমৃদ্ধ খাবারের জন্য হতেই পারে। এগুলো হয়তো আপনার সকালের আলস্য এবং মানসিক অবসাদ কাটাতে সহায়তা করবে এবং আপনাকে করে তুলবে চনমনে।
কিন্তু সন্ধ্যা বা রাতে এটিই আপনার মানসিক অস্থিরতা বাড়িয়ে আপনার মস্কিষ্ককে বিশ্রামে যেতে বাঁধা প্রদান করবে। তাই ভালো ঘুমের জন্য দিনের মধ্যাহ্ন ভাগের পর ক্যাফেইন এবং চিনি সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলুন
অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলুন
অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় আপনার মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে। একই সাথে নানা ধরণের শারীরিক ও মানসিক জটিলতাও সৃষ্টি করে। তাই মহামারী কালীন এই অস্থিতিশীল সময়ে এ ধরণের পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
শরীর চর্চাসহ নানা ধরণের শারীরিক কসরত করুন
মহামারী কালীন এই সময়ে আমাদের সবাইকেই গৃহ বন্দী জীবন যাপন করতে হচ্ছে। ফলে আমাদের শারীরিক পরিশ্রমের মাত্রা অনেক কমে এসেছে। আর শারীরিক পরিশ্রম পরিমিত ঘুমের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই ঘরে থেকে শরীর চর্চাসহ যতোটা সম্ভব শারীরিক পরিশ্রম করুন। এতে পরিমিত ঘুম হবে।
এসব ছাড়াও ঘুমাতে যাবার আগে সব ধরণের দুশ্চিন্তা, দুর্ভাবনা, হতাশা জনক এবং মানসিক প্যাড়া দায়ক পরিস্থিতি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে। এসব মানসিক জটিলতা মুক্ত থাকতে পারলে পরিমিত ঘুম এবং সুস্থ মানসিক বিকাশ অবশ্যই নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা