কোভিড-১৯ এর এই আঁধার কেটে যাবে

করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর এই আঁধার কেটে যাবে
কোভিড-১৯ এর এই আঁধার কেটে যাবে

ইতিহাস সাক্ষী দেয়, সব থেকে কঠিন সময়েও পরিবর্তন এবং প্রগতি আসে। সময় যতই কঠিন হোক, আমাদের মনের মাঝে বাঁচিয়ে রাখতে হবে আশার আলো। তবেই প্রগতি আসবে, আসবে পরিবর্তন।
কোভিড-১৯ আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। অনেকেই এই দুর্যোগ কবে কেটে যাবে সেটি ভেবে ভেবে সন্দিহান। আবার অনেকেই আছেন যারা ভাবছেন এটি সাময়িক। এরকম ইতিবাচক বিশ্বাস আমাদের অনেকের মাঝেই রয়েছে এবং এটি অটুট রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে আঁধারের পরেই আলো আসে। এই ইতিবাচক ধারণাই আমাদের সবার মাঝে কোভিড-১৯ মোকাবেলার শক্তি যোগাবে।
কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষিত থাকতে আমাদেরকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবার থেকে আলাদা হয়ে নিজ গৃহে থাকতে বলা হয়েছে। আমরা আমাদের স্বাভাবিক জীবন থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। এই বন্দী দশা থেকে কবে আমাদের মুক্তি ঘটবে আমরা জানিনা। এই অনিশ্চয়তাই আমাদের মাঝে মানসিক চাপ বৃদ্ধি করছে। প্রতি দিন হাজার হাজার মানুষের করুণ মৃত্যু আমাদের হতাশা আর আতঙ্কে ডুবিয়ে দিচ্ছে। এমন অনেক সময় আমাদের সবার জীবনেই আসে যখন আমাদের মনে হয় যে সামনে বিপদ মুক্তির কোন পথই খোলা নেই। সেই সময়ে কিভাবে আমরা আমাদের মানসিক চাপ দূর করে ঘুরে দাড়াই? কিভাবে জীবনকে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনি? সেই অভিজ্ঞতা কোভিড-১৯ মোকাবেলা করার ক্ষেত্রেও কাজে লাগাতে হবে। আত্মবিশ্বাস বজায় রাখতে হবে এবং এই অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়টাকে আলোর পথে নিয়ে যেতে হবে।
মহামারীর কারণে আমরা যে কঠিন সময় পার করছি সেটি মানসিকভাবে মোকাবেলা করার কিছু কৌশলঃ

  • নিজের যত্ন নেওয়াঃ নিয়মিত শরীর চর্চা, যোগ অভ্যাস, মেডিটেশন, এবং প্রার্থনার মাধ্যমে নিজেকে শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির পথে নিয়ে যেতে হবে। এই আত্মবিশ্বাস ধারণ করতে হবে যে এই বিপদ থেকে আমরা অবশ্যই মুক্তি পাব এবং সেজন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।
  • স্বপ্ন দেখাঃ সব সময় কল্পনা করতে হবে যে বিপদ কেটে গিয়ে স্বাভাবিক ও সুন্দর দিন অনাগত। মৃত্যুর মিছিল থেমে গিয়ে এক সময় নতুন সূর্য উঠবেই।
  • দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করাঃ এখন আমরা সবাই গৃহবন্দী জীবন যাপন করছি। হাতে অফুরন্ত সময় থাকার পরেও আমরা কোন কিছুতে মনোনিবেশ করতে পারছিনা। মানসিক চাপ সময়টাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। এ সময়ে আমরা যদি আমাদের মনের ইচ্ছে গুলো, আমাদের ভালোলাগা মন্দলাগা, আমাদের সারা দিনের অভিজ্ঞতাগুলো একটি ডায়রিতে লিপিবদ্ধ করি বা লেখালেখির অভ্যাস করি তাহলে সময়টাও অনেক ভাল কাটবে, আমাদের মানসিক চাপও নিয়ন্ত্রিত হবে।
  • অন্যদের সাথে সময় অতিবাহিত করাঃ পরিবার এবং কাছের মানুষদের সাথে আরও বেশী করে সময় কাটান, গল্প করুন এবং বিভিন্ন পারিবারিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করুন। এছাড়াও যারা দূরে আছেন তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে পারেন, টেক্সট করতে পারেন, ভিডিও কলের মাধ্যমে যুক্ত হতে পারেন।
  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুনঃ সুস্থ শরীরেই সুস্থ মনের বাস। শরীরকে সুস্থ রাখতে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্দাভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত প্রয়োজন। সে সব খাবার খান যেগুলো আপনার মাঝে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

এসব অভ্যাস গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করুন। যখন এই দুঃসময় কেটে যাবে আপনি শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেকে আরও শক্তিশালী রূপে ফিরে পাবেন। নিজের উপর আস্থা রাখুন। সব সময় মনে রাখবেন আপনি সব কিছু অত্যন্ত সুচারু রূপে করছেন এবং যা কিছু করছেন সব কিছু আপনাকে কোভিড-১৯ মোকাবেলার জন্য সক্ষম করে তুলছে।
সূত্র: https://www.psychologytoday.com/us/blog/the-empowerment-diary/202004/the-pandemic-and-dark-moments
অনুবাদ: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

Previous articleবিষণ্ণতায় আক্রান্ত মানুষরা লকডাউনে কেমন আছেন?
Next articleপেশী ও গাঁটে গাঁটে তীব্র ব্যথা করোনার উপসর্গ তালিকায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here