প্রায় মাসখানেক ধরে আমরা সবাই মোটামুটি গৃহবন্দী। প্রয়োজনে হয়তো খুব অল্প সময়ের জন্য বাসার বাইরে বের হচ্ছি কিন্তু শেষপর্যন্ত চার দেয়ালের মধ্যেই সবাই আটকে আছি। কোভিড-১৯ এর কারণে বাধ্য হয়ে যে সাময়িক জীবন ব্যবস্থা আমরা মেনে নিয়েছি এতে আমরা আসলে কেউই অভ্যস্ত নই।
কর্মব্যস্ত দিন শেষে গৃহই আমাদের স্বস্তির জায়গা হলেও চিত্ত বিনোদনের জন্য বা পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটু রিফ্রেশমেন্টের জন্য আমরা সবাই বাইরের মুক্ত পরিবেশ উপভোগ করি। আর সেখানে এখন তো সারাদিন বলতে গেলে ঘরে বসে কাটাতে হচ্ছে। একারণে আমরা বিভিন্ন রকম মানসিক চাপ, অস্থিরতা , অশান্তি আর হতাশায় ভুগছি।আর এর থেকে উত্তোরন পেতে আমরা আশ্রয় নিচ্ছি বিভিন্ন রকম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যেমন ফেসবুক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্যাদি।
একই সাথে করোনা ইস্যু নিয়ে আতঙ্কের কারনে আমরা অনেকে খবরের কাগজ বন্ধ করে দেয়ায় প্রতি মূহুর্তের আপডেটের জন্য টেলিভিশন নিউজ, অনলাইন পোর্টাল, ফেসবুকের উপর নির্ভরশীল হয়ে পরেছি। এতে কিন্তু আমাদের উপকারের চেয়ে অনেকক্ষেত্রে অপকার বেশি হচ্ছে! এসব সামাজিক মাধ্যম থেকে আমরা যেসব খবর বা তথ্য পাই এগুলোর সত্যতা যাচাই না করে আমরা এগুলো বিশ্বাস করে ফেলছি। এরকম দুশ্চিন্তাময় এবং আতঙ্কজনক সময়ে বিভিন্ন অসত্য, মিথ্যা বা ভুয়া খবর আমাদেরকে কিন্তু উল্টো আরো আতঙ্কিত করে দিচ্ছে।
এছাড়া অনলাইনে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত, কোথায় কে কিভাবে যথাযথ চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে মারা যাচ্ছে এসব খবর আমাদের আরো ভীত করছে, আমরা আরো বেশি মানসিক অশান্তিতে থাকছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিভাবে আমাদের প্রভাবান্বিত করছে তা বুঝতে আমরা নিচের কথোপকথনটি দেখতে পারি –
দুই বন্ধুর একজন ডাক্তার(ক) এবং অন্যজন প্রকৌশলী(খ); তারা টেলিফোনে কথা বলছে।
ক: কিরে দোস্ত কি খবর? কেমন আছিস?
খ: আর থাকা! কেমন থাকি বল! সারাদিন বাসায়, কোন কাজ নাই, সারাদিন ফেসবুকে শুধু করোনার আপডেট দেখি! বিরক্ত লাগতেছে বাসায় বসে থেকে! কবে যে শেষ হবে এই ঝামেলা!
ক: কি আরামে যে আছিস তা তো বুঝিস না! এই অবস্থায় আমার মতো হাসপাতালে ডিউটি করতে হলে বুঝতে! নাই কোন ট্রান্সপোর্ট, কোন রকমে যাই, এরপর আবার নাই প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা! মাস্ক পর্যন্ত আমার কিনে নিতে হইছে জানিস? তিনগুন দাম দিয়ে, তাও আসল কিনা জানি না! পিপিই তো বাদ ই দিলাম! এর মধ্যে রোগীরা আবার তথ্য গোপন করে রাখে! কেমন লাগে বল?
খ: কি বলিস? আমিতো ফেবুতে দেখলাম তোরা নাকি সব চিকিৎসা না দিয়ে পালিয়ে আছিস? আমিতো শুনে অবাক! আমিতো তোকে চিনি! এই কাজ তো তোর করার কথা না। তাই খবর নিতে কল দিলাম।
ক: শোন্! ফেসবুকে এরকম এখন কতো কিছু যে লিখবে! এদিকে তো লো কোয়ালিটির পিপিই পরে ডিউটি করতে গিয়ে আমার তিনজন কলিগের কোভিড পজিটিভ আসছে। আমরা সবাই তাই কোয়ারেন্টাইনে আছি। আর তোরা কি শুনছিস্! এসব ফেসবুক বাদ দে!
খ: আসলেই রে বন্ধু তোরা কতো রিস্ক নিয়ে কাজ করিস! কতো ত্যাগ স্বীকার করিস! তোদের জন্য দুআ করি! এতো সাহস ভাই আমার নাই। এরমধ্যে তোর ভাবীর কি হইছে জানিস? ফেসবুকে এই খবর সেই খবর দেখে ভয়ে, আতঙ্কে শেষ! আমার সাথে অকারণ ঝগড়া, বাবুর সাথে চেচামেচি সারাদিন! বাসায় নাই বুয়া, মেজাজ নাই আরো খারাপ! কালকে রাতে তো প্রেসার বেড়ে একদম সেই খারাপ অবস্থা! আমারও এরমধ্যে মন মেজাজ ভালো থাকে না। কিছু করার না পেয়ে সারাদিন ফেবু! এতে মানসিক অশান্তি আরো বাড়ে।
ক: শোন্! এইসময়ে এরকম একটু হবেই। তোকে একটা বুদ্ধি দেই।ফেবু কমা, পারলে অফ কর। ভাবীকে বাসার কাজে হেল্প কর, বাবুর সাথে সময় কাটা, ওর সাথে গল্প কর, ভাবীর সাথে গল্প কর, বন্ধু দের সাথে, আত্মীয় স্বজনদের সাথ ফোনে কথা বল, মুভি দেখ, বই পড়, নামাজ পর! দেখবি ফেসবুক দেখার টাইম ই পাবি না। ভাবীর মন ও ভালো থাকবে, তুইও ভালো থাকবি! মানসিক চাপমুক্ত থাকবি।
খ: ঠিক বলেছিস রে বন্ধু! তাই করবো। দুআ রাখিস আর সাবধানে থাকিস। তোদের ডাক্তারদের জন্য ভয় হয়! তোরা সুস্থ না থাকলে তো আমরাও ভালো থাকব না!
এই কথোপকথন থেকে আমরা দেখলাম ফেসবুকে সারাক্ষন সময় দেয়া আমাদের জীবনে কিভাবে মানসিক চাপ ও অশান্তি নিয়ে আসতে পারে।ডাক্তার বন্ধুটি এটা থেকে উত্তোরনের কিছু পথ দেখিয়ে দিয়েছে।আমরা আরো যা করতে পারি-
> প্রথমেই আমাদের মনে রাখতে হবে অকারণ ফেসবুক স্ক্রলিং আমাদের সময়ই নষ্ট করে শুধু। এখানকার কোন খবর যাচাই না করে বিশ্বাস করে ব্যতিব্যস্ত হওয়া যাবে না। আমাদের করনীয় হল ফেসবুক ব্যবহার কমিয়ে আনা এমনকি প্রয়োজনে বন্ধ করে দেয়া।
> আমাদের এই যান্ত্রিক জীবনে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সময় কাটানোর সুযোগ আমরা এরকম আর নাও পেতে পারি। আমরা কখনো চিন্তা করেছি শেষ কবে আমরা আমাদের জীবনসঙ্গীর সাথে এমন সময় কাটাতে পেরেছি? কবে আমরা আমাদের বাচ্চাকে এমন সময় দিতে পেরেছি? আমাদের বৃদ্ধ মা-বাবা কবে আমাদের এতোটা সময় কাছে পেয়েছেন?
আমরা কেন এই গৃহবন্দী সময়টাকে পজিটিভলি নিচ্ছি না? সারাক্ষন বাসায় বসে বোরড হচ্ছি এটা না ভেবে বরং সময়টাকে কাজে লাগাই। প্রিয়জনকে সময় দেই। বাচ্চার সাথে খেলা করি, পড়াশোনা করি, ছবি আঁকি, একটু ছাদে ঘুরতে নিয়ে যাই। মা-বাবার সাথে গল্প করি। বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের খোঁজ নেই। নিজের পছন্দের কাজ সময়ের অভাবে যা করা হয় না সেগুলো নিয়ে নাহয় ব্যস্ত থাকি যেমন বই পড়া, মুভি দেখা, বাগান করা, বেকিং করা, লেখালেখি, ছবি আঁকা আরো কতো কি! ছেলেরা বাসার কাজে হাত লাগাই, মা বা স্ত্রীকে বাসার সব কাজে সাহায্য করে তাদের কষ্ট কমানো পারি। নিজ নিজ ধর্মীয় আচার পালন করা। বিভিন্ন অনলাইন কোর্স করা। বাসায় বসে শরীর চর্চা করা।
জীবনটাকে উপভোগ্য করতে হলে আসলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করাটাই যথেষ্ট। লকডাউনের এই সময়ে এমনি আমরা অনেক মানসিক চাপে আছি। নতুন করে ফেসবুকের আর অনলাইন পোর্টালগুলোর অসত্য বা ভুল অথবা সত্য তথ্য গুলো নিয়ে সারাক্ষন কেন নিজেদের ব্যস্ত রাখব? অবশ্যই আমরা যুক্তিযুক্ত তথ্যগুলো জানব এবং সে অনুযায়ী সতর্ক হয়ে চলব। কিন্তু সবসময় এই করোনা নিয়ে কথা না বলে, চিন্তা না করে না চাইতেই পাওয়া এই সুন্দর সময়টাকে বরং কাছের মানুষের জন্য, নিজের জন্য কাজে লাগাই।
দিন শেষে এই পরিবারের মানুষগুলোকে নিয়ে শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভালো থাকাটাই তো আসল কথা!
আসুন! আমরা সবাই ভালো থাকি, সুস্থ থাকি! মানসিক চাপমুক্ত থাকি!
লেখক: ডা. রিফাত উজ জোহরা, রেসেডিন্টে সাইকিয়াট্রি (ফেইস বি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।
কর্মব্যস্ত দিন শেষে গৃহই আমাদের স্বস্তির জায়গা হলেও চিত্ত বিনোদনের জন্য বা পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটু রিফ্রেশমেন্টের জন্য আমরা সবাই বাইরের মুক্ত পরিবেশ উপভোগ করি। আর সেখানে এখন তো সারাদিন বলতে গেলে ঘরে বসে কাটাতে হচ্ছে। একারণে আমরা বিভিন্ন রকম মানসিক চাপ, অস্থিরতা , অশান্তি আর হতাশায় ভুগছি।আর এর থেকে উত্তোরন পেতে আমরা আশ্রয় নিচ্ছি বিভিন্ন রকম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যেমন ফেসবুক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্যাদি।
একই সাথে করোনা ইস্যু নিয়ে আতঙ্কের কারনে আমরা অনেকে খবরের কাগজ বন্ধ করে দেয়ায় প্রতি মূহুর্তের আপডেটের জন্য টেলিভিশন নিউজ, অনলাইন পোর্টাল, ফেসবুকের উপর নির্ভরশীল হয়ে পরেছি। এতে কিন্তু আমাদের উপকারের চেয়ে অনেকক্ষেত্রে অপকার বেশি হচ্ছে! এসব সামাজিক মাধ্যম থেকে আমরা যেসব খবর বা তথ্য পাই এগুলোর সত্যতা যাচাই না করে আমরা এগুলো বিশ্বাস করে ফেলছি। এরকম দুশ্চিন্তাময় এবং আতঙ্কজনক সময়ে বিভিন্ন অসত্য, মিথ্যা বা ভুয়া খবর আমাদেরকে কিন্তু উল্টো আরো আতঙ্কিত করে দিচ্ছে।
এছাড়া অনলাইনে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত, কোথায় কে কিভাবে যথাযথ চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে মারা যাচ্ছে এসব খবর আমাদের আরো ভীত করছে, আমরা আরো বেশি মানসিক অশান্তিতে থাকছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিভাবে আমাদের প্রভাবান্বিত করছে তা বুঝতে আমরা নিচের কথোপকথনটি দেখতে পারি –
দুই বন্ধুর একজন ডাক্তার(ক) এবং অন্যজন প্রকৌশলী(খ); তারা টেলিফোনে কথা বলছে।
ক: কিরে দোস্ত কি খবর? কেমন আছিস?
খ: আর থাকা! কেমন থাকি বল! সারাদিন বাসায়, কোন কাজ নাই, সারাদিন ফেসবুকে শুধু করোনার আপডেট দেখি! বিরক্ত লাগতেছে বাসায় বসে থেকে! কবে যে শেষ হবে এই ঝামেলা!
ক: কি আরামে যে আছিস তা তো বুঝিস না! এই অবস্থায় আমার মতো হাসপাতালে ডিউটি করতে হলে বুঝতে! নাই কোন ট্রান্সপোর্ট, কোন রকমে যাই, এরপর আবার নাই প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা! মাস্ক পর্যন্ত আমার কিনে নিতে হইছে জানিস? তিনগুন দাম দিয়ে, তাও আসল কিনা জানি না! পিপিই তো বাদ ই দিলাম! এর মধ্যে রোগীরা আবার তথ্য গোপন করে রাখে! কেমন লাগে বল?
খ: কি বলিস? আমিতো ফেবুতে দেখলাম তোরা নাকি সব চিকিৎসা না দিয়ে পালিয়ে আছিস? আমিতো শুনে অবাক! আমিতো তোকে চিনি! এই কাজ তো তোর করার কথা না। তাই খবর নিতে কল দিলাম।
ক: শোন্! ফেসবুকে এরকম এখন কতো কিছু যে লিখবে! এদিকে তো লো কোয়ালিটির পিপিই পরে ডিউটি করতে গিয়ে আমার তিনজন কলিগের কোভিড পজিটিভ আসছে। আমরা সবাই তাই কোয়ারেন্টাইনে আছি। আর তোরা কি শুনছিস্! এসব ফেসবুক বাদ দে!
খ: আসলেই রে বন্ধু তোরা কতো রিস্ক নিয়ে কাজ করিস! কতো ত্যাগ স্বীকার করিস! তোদের জন্য দুআ করি! এতো সাহস ভাই আমার নাই। এরমধ্যে তোর ভাবীর কি হইছে জানিস? ফেসবুকে এই খবর সেই খবর দেখে ভয়ে, আতঙ্কে শেষ! আমার সাথে অকারণ ঝগড়া, বাবুর সাথে চেচামেচি সারাদিন! বাসায় নাই বুয়া, মেজাজ নাই আরো খারাপ! কালকে রাতে তো প্রেসার বেড়ে একদম সেই খারাপ অবস্থা! আমারও এরমধ্যে মন মেজাজ ভালো থাকে না। কিছু করার না পেয়ে সারাদিন ফেবু! এতে মানসিক অশান্তি আরো বাড়ে।
ক: শোন্! এইসময়ে এরকম একটু হবেই। তোকে একটা বুদ্ধি দেই।ফেবু কমা, পারলে অফ কর। ভাবীকে বাসার কাজে হেল্প কর, বাবুর সাথে সময় কাটা, ওর সাথে গল্প কর, ভাবীর সাথে গল্প কর, বন্ধু দের সাথে, আত্মীয় স্বজনদের সাথ ফোনে কথা বল, মুভি দেখ, বই পড়, নামাজ পর! দেখবি ফেসবুক দেখার টাইম ই পাবি না। ভাবীর মন ও ভালো থাকবে, তুইও ভালো থাকবি! মানসিক চাপমুক্ত থাকবি।
খ: ঠিক বলেছিস রে বন্ধু! তাই করবো। দুআ রাখিস আর সাবধানে থাকিস। তোদের ডাক্তারদের জন্য ভয় হয়! তোরা সুস্থ না থাকলে তো আমরাও ভালো থাকব না!
এই কথোপকথন থেকে আমরা দেখলাম ফেসবুকে সারাক্ষন সময় দেয়া আমাদের জীবনে কিভাবে মানসিক চাপ ও অশান্তি নিয়ে আসতে পারে।ডাক্তার বন্ধুটি এটা থেকে উত্তোরনের কিছু পথ দেখিয়ে দিয়েছে।আমরা আরো যা করতে পারি-
> প্রথমেই আমাদের মনে রাখতে হবে অকারণ ফেসবুক স্ক্রলিং আমাদের সময়ই নষ্ট করে শুধু। এখানকার কোন খবর যাচাই না করে বিশ্বাস করে ব্যতিব্যস্ত হওয়া যাবে না। আমাদের করনীয় হল ফেসবুক ব্যবহার কমিয়ে আনা এমনকি প্রয়োজনে বন্ধ করে দেয়া।
> আমাদের এই যান্ত্রিক জীবনে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সময় কাটানোর সুযোগ আমরা এরকম আর নাও পেতে পারি। আমরা কখনো চিন্তা করেছি শেষ কবে আমরা আমাদের জীবনসঙ্গীর সাথে এমন সময় কাটাতে পেরেছি? কবে আমরা আমাদের বাচ্চাকে এমন সময় দিতে পেরেছি? আমাদের বৃদ্ধ মা-বাবা কবে আমাদের এতোটা সময় কাছে পেয়েছেন?
আমরা কেন এই গৃহবন্দী সময়টাকে পজিটিভলি নিচ্ছি না? সারাক্ষন বাসায় বসে বোরড হচ্ছি এটা না ভেবে বরং সময়টাকে কাজে লাগাই। প্রিয়জনকে সময় দেই। বাচ্চার সাথে খেলা করি, পড়াশোনা করি, ছবি আঁকি, একটু ছাদে ঘুরতে নিয়ে যাই। মা-বাবার সাথে গল্প করি। বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের খোঁজ নেই। নিজের পছন্দের কাজ সময়ের অভাবে যা করা হয় না সেগুলো নিয়ে নাহয় ব্যস্ত থাকি যেমন বই পড়া, মুভি দেখা, বাগান করা, বেকিং করা, লেখালেখি, ছবি আঁকা আরো কতো কি! ছেলেরা বাসার কাজে হাত লাগাই, মা বা স্ত্রীকে বাসার সব কাজে সাহায্য করে তাদের কষ্ট কমানো পারি। নিজ নিজ ধর্মীয় আচার পালন করা। বিভিন্ন অনলাইন কোর্স করা। বাসায় বসে শরীর চর্চা করা।
জীবনটাকে উপভোগ্য করতে হলে আসলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করাটাই যথেষ্ট। লকডাউনের এই সময়ে এমনি আমরা অনেক মানসিক চাপে আছি। নতুন করে ফেসবুকের আর অনলাইন পোর্টালগুলোর অসত্য বা ভুল অথবা সত্য তথ্য গুলো নিয়ে সারাক্ষন কেন নিজেদের ব্যস্ত রাখব? অবশ্যই আমরা যুক্তিযুক্ত তথ্যগুলো জানব এবং সে অনুযায়ী সতর্ক হয়ে চলব। কিন্তু সবসময় এই করোনা নিয়ে কথা না বলে, চিন্তা না করে না চাইতেই পাওয়া এই সুন্দর সময়টাকে বরং কাছের মানুষের জন্য, নিজের জন্য কাজে লাগাই।
দিন শেষে এই পরিবারের মানুষগুলোকে নিয়ে শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভালো থাকাটাই তো আসল কথা!
আসুন! আমরা সবাই ভালো থাকি, সুস্থ থাকি! মানসিক চাপমুক্ত থাকি!
লেখক: ডা. রিফাত উজ জোহরা, রেসেডিন্টে সাইকিয়াট্রি (ফেইস বি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।