কে বেশি রাগী পুরুষ না নারী?

0
60

বাড়ি বা অফিস, শপিং সেন্টার আর রাস্তা সব জায়গাতেই নারী পুরুষের প্রায় সমান বিচরণ। ভালবাসা, শ্রদ্ধা, স্নেহ যেমন সবার মাঝে আছে তেমনি রাগ, দুঃখ, আনন্দ, বেদনা সব কিছুই আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
আমাদের সবার জীবনেই মাঝে মাঝে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যখন অনিচ্ছা সত্বেও রেগে যাই। আর তখন রেগে এমন কিছু আচরণ করি যা ভেবে পরে নিজেই লজ্জিত হই। এই অবস্থা কিন্তু নারী পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই হয়।
তবে পুরুষ সাধারণত কারো নিয়ন্ত্রণে থাকতে চায় না। শারীরিক ক্ষমতা প্রদর্শন করা আক্রমণাত্বক আচরণ করা অনেকটা পুরুষের সহজাত প্রবৃত্তি।
অন্যদিকে নারীকে আমরা দেখি কোনো সমস্যার শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান চায়। তারা শান্তিকামী, পরিবার কেন্দ্রীক।
সম্প্রতি পুরুষ এবং নারীদের রাগ প্রকাশের বিষয়ে তুলনামূলক পার্থক্য বের করতে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়।
সানফ্রান্সিসকোর কংগ্রেস ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, নার্সিং বিভাগের অধীনে গবেষকরা ৮০ জন পুরুষ এবং ১২৩ জন নারীর ওপর দীর্ঘদিন গবেষণা করেন।
গবেষণায় রাগের প্রকাশ, আত্মসম্মানবোধ, অনুভূতি এবং সাফল্যের জন্য নারী ও পুরুষের ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট মূল্যায়ন করা হয়।
বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যলোচনা করে দেখা যায়, রাগী পুরুষের বৈশিষ্ট্য হলো রাগ বা ক্ষোভ প্রকাশের ক্ষেত্রে সরাসরি পথটি বেছে নিতেই পছন্দ করেন।
অপরদিকে অল্পতেই সরাসরি রাগ প্রকাশে অস্বস্তিবোধ করেন নারী। কিন্তু যখন সে রাগ প্রকাশ করে তখন পুরুষদের কাছাকাছিই থাকে সে প্রকাশভঙ্গি।
মৌখিকভাবে অসন্তোষ প্রকাশ, ক্ষমতার ব্যবহারের দিক দিয়েও পুরুষরাই এগিয়ে রয়েছেন নারীদের তুলনায়।
নারীদের মধ্যে হঠাৎ রেগে যাওয়ার প্রবণাতা দেখা যায়, তবে তারা খুব দ্রুত এজন্য লজ্জিত হয় এবং ক্ষমা পেতে চেষ্টা করে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অর্থনৈতিক, সামাজিক বা ব্যক্তিগত হতাশা, কর্মক্ষেত্র সমস্যার কারণে পুরুষরা রেগে যান।
অন্যদিকে পারিবারিক অশান্তি, সন্তানদের নিয়ে উদ্বিগ্নতা, প্রতিনিয়ত হীনমন্যতায় ভুগে নারীরা রাগী হয়ে ওঠেন।
যাই হোক রাগে মনে হয় আমরা কেউই কম যাই না। কিন্তু আমাদের জানতে হবে এই রাগ কিন্তু নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই খারাপ। কারণ মাত্রাতিরিক্ত রাগ আমাদের জন্য শুধু ক্ষতিই বয়ে আনে। এর কোনো ভাল দিক নেই।
ভয়ের কথা হচ্ছে, বিশেষজ্ঞরা বলেন, ধূমপান, মদ্যপান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে অভ্যন্ত, দুশ্চিন্তাগ্রস্থদের চেয়ে বেশি রাগীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। এমনকি অতিরিক্ত রাগে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুও হতে পারে।
কোনো করণে রাগ হলেও অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে মানুষ হিসেবে আমরা সৃষ্টির সেরা। মানবিক গুণাবলীর জন্যই আমরা সেরা। রাগের জন্য হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে কোনো কাজ করা ঠিক নয়।
তারপরও যদি রাগ হয়

  • রাগী অবস্থায় কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন না
  • যার ওপর বা যে কারণে রাগ হয়েছে কিছুক্ষণের জন্য তার কাছ থেকে দূরে থাকুন
  • প্রয়োজনে কোথাও ঘুরে আসুন
  • মন শান্ত করতে শপিংএ যেতে পারেন
  • ভালগান শুনলেও অনেকের রাগ কমে যায়
  • কারও সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করতে পারেন

সবচেয়ে বড় কথা ক্ষমা করতে শিখতে হবে। ভুল হতেই পারে, যদি বুঝতে পারেন আপনার দোষ তবে ক্ষমা চেয়ে নিন, আর যদি আপনার কোনো দোষ না থাকে তবে অপর পক্ষকে মন থেকে ক্ষমা করে দিন।

Previous articleরাগের সময় করা যাবে না
Next articleশিশুর জন্য মেডিটেশন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here