কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ

0
37
কর্মক্ষেত্রে মতবিরোধ এবং মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব এড়াতে করণীয়

কর্মক্ষেত্রের চাপ বলতে কী বোঝায়?
যে কোনও দায়িত্বশীল মানুষ যে কোনযখন তার কর্মক্ষেত্রে কাজ করে তখন তার উপর কাজের ভার বা দায়িত্ব এবং চাহিদা- দুটোই বেশি থাকে। আর নিজের দক্ষতা দিয়ে সেইসব কঠিন কাজের সফল মোকাবিলা করাও জরুরি হয়ে ওঠে। একেই বলা হয় কর্মক্ষেত্রের চাপ।
কীভাবে কাজের দায়িত্ব বা ভার থেকে কর্মক্ষেত্রে সৃষ্টি হওয়া মানসিক চাপের পার্থক্য করা যায়?
যে কোনও কর্মক্ষেত্রেই কাজের ভার বা দায়িত্ব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; এর ফলে মানুষের মধ্যে সঠিক দিশা এবং সজাগ বা সচেতনতার মনোভাব জন্মায়। আর এই কাজের ভার যখন মাত্রাছাড়া বা লাগামহীন হয়ে যায় তখন নতুন কিছু সৃষ্টির বদলে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি হয়ে দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতেই একজন মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ জন্মানো সহজ হয়।
কী কারণে একজন মানুষের মধ্যে কর্মক্ষেত্রজনিত চাপ জন্মায়?
মানসিক চাপের ধরন একেকজন মানুষের ক্ষেত্রে এক-একরকম হয়ে থাকে। তবে একটা বিষয়ে সবাই একমত যে যারা কাজের জায়গায় মানসিক চাপের শিকার হয় তারা কর্মক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক সাহায্য অত্যন্ত কম পায়। একটা কর্মক্ষেত্র কতটা ক্ষতিকারক বা বিপজ্জনক হয়ে উঠবে তা নির্ভর করে মূলত সেই কর্মক্ষেত্রে কাজের বিভাজনের রীতি এবং একটা সংস্থা কীভাবে তার প্রাথমিক বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করছে তার উপর। এই ‘চাপজনিত সংকট’ চিহ্নিত করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’ এই বিষয়টিকে ৯টি শ্রেণিতে ভাগ করেছে। এই শ্রেণিবিভাগের মধ্যে সম্ভাব্য দিকগুলো হল-

  • সংস্থা বা সংগঠনের পক্ষ থেকে পাওয়া কম সাহায্য বা সাহায্যের অভাব
  • সংস্থার লক্ষ্য ও কার্যক্রমে স্বচ্ছতার অভাব
  • ম্যানেজার বা পরিচালকের মধ্যে যোগাযোগজনিত দক্ষতার অভাব
  • কাজের দায়িত্ব বা ভূমিকা পরিষ্কার করে উল্লেখ না করা
  • কর্মীদের উপর খুব বেশি পরিমাণ কাজের বোঝা বা অত্যন্ত অল্প পরিমাণ কাজের দায়িত্ব দেওয়া
  • অর্থনৈতিকভাবে বা কাজের নিরিখে সংস্থার বিকাশের অভাব
  • অপর্যাপ্ত এবং অসমান বেতন পরিকাঠামো
  • কাজের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করা
  • কর্মীদের মধ্যে খুব অল্প পরিমাণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বা একেবারেই সিদ্ধান্ত না নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করা
  • দক্ষতার বিকাশ ঘটতে না দেওয়ার সমস্যা
  • কাজের সময়ের অনমনীয়তা এবং আগে থেকে পূর্বাভাস না থাকা
  • অপর্যাপ্ত এবং অসহযোগিতাপূর্ণ কাজের তত্ত্বাবধান
  • কাজের ক্ষেত্রে কর্মীদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় না থাকা
  • মানুষের মধ্যে হিংসা, হেনস্থা বা আক্রমণের মানসিকতা সৃষ্টি হওয়া

কর্মক্ষেত্রের সুস্বাস্থ্য রক্ষা বা সুপরিবেশ গড়ে তোলার জন্য একটা সংস্থার পক্ষ থেকে কী কী ব্যবস্থা অবলম্বন করা যেতে পারে?
বিভিন্ন সাংগঠনিক বিষয় একটা কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপজনিত সংকট সৃষ্টিতে সাহায্য করে থাকে। একটা সংস্থা যদি নিম্নলিখিত বিষয়গুলোকে সুনিশ্চিত করতে পারে তাহলে কর্মক্ষেত্রে সুপরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব হয়-

  • সংস্থার পরিকাঠামো, কার্যক্রম এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে কর্মচারীদের
    সচেতন করা
  • কাজের ধরন এবং কর্মচারীদের দক্ষতার মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা
  • কাজের দায়িত্ব এবং প্রত্যাশা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা দেওয়া
  • সংস্থার মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমগুলো স্পষ্ট করা
  • কর্মক্ষেত্রে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলা

 

Previous articleমানসিক চাপ পুরুষ ও নারীর মস্তিষ্কে ভিন্ন প্রভাব ফেলে: গবেষণা
Next articleমানসিক শক্তি বাড়াবেন যেভাবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here