মন ছাড়া যেমন কেউ মানুষ হতে পারে না, ঠিক তেমনি মনের সুস্থতা বাদ দিয়ে কোনো মানুষ নিজেকে সম্পূর্ণ সুস্থ বলে দাবী করতে পারে না। কিন্তু আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই মনের স্বাস্থ্য নিয়ে যতটা সচেতনতা প্রয়োজন, ঠিক ততটা নাই। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে করণীয় উপায়সমূহ নিয়ে আলোচনা করার আলোকে অ্যাকশন অন ডিজ্যাবিলিটি এন্ড ডেভেলপমেন্ট (এডিডি) বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে সিবিএম ইন্টারন্যাশনাল এর সহায়তায় রাজধানীর বনানীতে “Sharing Meeting on Mental Health Awareness Campaign” শিরোনামে হয়ে গেল এক গোলটেবিল বৈঠক।
উক্ত বৈঠকে এডিডি এর কান্ট্রি ডিরেক্টর শফিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজ ভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য প্রজেক্ট-এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর নাজমুন নাহার, নাসিরুল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিটের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, সেন্টার ফর ডিজএ্যাবিলিটি ইন ডেভলপমেন্ট এর কোওর্ডিনেটর আকিকুন নাহার, অ্যাসিড সারভাইবাল ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সেলিনা আহমেদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও মনেরখবর.কম এর সম্পাদক ড. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব, বাংলাদেশ সাইকোলজিক্যাল এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান, ইনোভেশন ফর ওয়েলবিং ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মনিরা রহমান, সিবিএম ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে প্রোগ্রাম অফিসার সামিনা জাহান, আইডেন্টিটি ইনক্লুশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রজেক্ট ডিরেক্টর শামসিন আহমেদ, প্রোগ্রাম ম্যানেজার বুশরা আদিল, ডিজেবলড রিহ্যাবিলিটেশন এন্ড রিসার্চ এসোসিয়েশনের এডভোকেসি এডভাইজার হিরেন পণ্ডিত, সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অফ দ্য প্যারালাইজ্ড এর অকুপেশনাল থেরাপিস্ট রাজিয়া সুলতানা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোহাম্মদ দিদার হোসেন, ঔষধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষ থেকে সাবা রেজা। এছাড়াও এডিডি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রোগ্রাম অফিসার- এ্যাডভোকেসি ঈশিতা তরফদার, প্রোগ্রাম অফিসার-ট্রেনিং মোস্তাক আহমেদ ও মনিটরিং এন্ড ডকুমেন্টেশন অফিসার অসীম ডিও।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নাজমুন নাহার এডিডি ইন্টারন্যাশনাল এর মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রম তুলে ধরেন। এডিডি দেশের ৬ টি জেলায় প্রায় ১৪ শ মানুষকে বিভিন্ন পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে সরাসরি সাহায্য করে আসছে।
আলোচনায় উঠে আসে আমাদের দেশের ডাটার অপ্রতুলতার কথা। নতুন গবেষণার অভাবের কথা। দশ-বার বছরের পুরনো গবেষণার আলোকে এখনো আমাদের দেশে মানসিক সমস্যা বিষয়ক পরিসংখ্যান নিয়ে আলোচনা করা হয়।
জনসাধারণে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণার গুরুত্বের কথা উঠে আসে। সেই সাথে উঠে আসে এই ক্ষেত্রে কাজ করতে থাকা সকল পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধতার কথা। সকলে মিলে একত্রে একটি অভীষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করার প্রয়াসের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন সকলে।
সেই সাথে উচ্চারিত হয় কিছু আশার বাণী। সকলেই অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু নিশ্চিত করেন যে, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক জনমত আজকে যে পর্যায়ে, দশ বছর আগে এ পর্যায়ে ছিল না। সুতরাং মানুষ সচেতন হচ্ছে। করণীয় অনেক কাজের সাথে সাথে আরেকটা খুব জরুরি করণীয় হল লেগে থাকা।
আমরা যখন একটি দেশের সতের কোটি জনসংখ্যাকে একটি বিষয়ে সচেতন করে গড়ে তোলার কথা বলি, তখন আমরা আসলে একটি বৃহৎ পরিবর্তনের কথা বলি। আর এধরনের পরিবর্তন খুব দ্রুত ও সহজে সাধিত হয় না। এর জন্য কাজ করে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই, লেগে থাকার কোনো বিকল্প নেই। এবং সর্বোপরি, সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সকল পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। যারা সচেতন, শিক্ষিত, সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে আওয়াজ তুলতে হবে, কথা বলতে থাকতে হবে।
সরকারি ও বেসরকারি কার্যক্রমের সমন্বয়ের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে ভবিষ্যতেও এমন আলোচনা সভা চলবে এমন আশ্বাস সহ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়।
ফিরোজ শরীফ, প্রতিবেদক
মনেরখবর.কম
লক্ষ্য করুন- মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক খবর বা প্রেস রিলিজও আমাদের পাঠাতে পারেন। বৈজ্ঞানিক সেমিনার, বিশেষ ওয়ার্কশপ, সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোনো খবর পাঠাতে news@www.monerkhabor.com এই ইমেইলটি ব্যবহার করতে পারেন আপনারা।