একা একা কথা বলা মানেই পাগলামীর লক্ষণ নয়

অফিসে যাওয়ার পথে লিফটে একা একাই বলে ফেললেন ‘আজ অফিসে দেরী হয়ে গেল।’ অথবা মার্কেটের ওয়াশরুমে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজে দেখে নিজেই বললেন, ‘জামাটায় ভালো লাগছে দেখতে।’ আপনার এমন আচরণে পাশের ব্যক্তিটি হয়তো আপনাকে পাগল ভেবে বসতে পারে। কিন্তু গবেষকরা বলছেন অন্য কথা।
গবেষকদের মতে, একা একা কথা বলার আছে বেশ কিছু ইতিবাচক দিক। ক্লিনিকাল সোশ্যাল ওয়ার্কার, সাইকোথেরাপিস্ট এবং ‘ফাইন্ডিং ইউর রুবি স্লিপার্স: ট্রান্সফরমেটিভ লাইফ লেসনস ফ্রম দ্য থেরাপিস্ট কোচ’ বইয়ের লেখক লিসা ফেরেন্টজ এর মতে বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে আরও ভালভাবে জয় করে নিতে একা একা কথা বলার জুড়ি নেই। মনের ভেতরের কথা বেখেয়ালে বলে ফেলার অভ্যাস এর মাধ্যমে নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয় যা সারাদিনের আত্মবিশ্বাসের যোগান দেয়।
লিসা ফেরেন্টজ বলেন, নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলার চাইতে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু নেই। কারণ এতে নিজের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করা যায় এবং নিজের মানসিক অবস্থা বোঝা যায়। বিশেষ করে সারাদিন যদি নিজের অনেক দোষ শুনতে হয় এবং খারাপ ব্যবহারের শিকার হতে হয়, তাহলে নিজের সঙ্গে কথা বলে মনটা হালকা করা যায় সহজেই। তাই মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য একা একা কথা বলার অভ্যাসটা খুবই ভালো। এই অভ্যাসে মানসিক শক্তি বাড়ে।
ইউনিভার্সিটি অব লেথব্রিজ এর একটি গবেষণাতেও একই তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। শিক্ষার্থীদের উপর একা একা কথা বলার প্রভাব লক্ষ্য করে দেখা গিয়েছিল নিজের সঙ্গে নিজের নেতিবাচক এবং ইতিবাচক কথা বলার প্রভাব ব্যক্তির আচরণ, মনোভাব এবং দৃষ্টিভঙ্গির উপরে পড়ে।
তাই এরপর যখন নিজের সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে হবে, বলে ফেলুন। নিজেকে পাগল ভাবার কোনো কারণ নেই। আপনি সম্পূর্ণ সুস্থ। তবে রাস্তাঘাটে হঠাৎ একা একা জোরে কথা বলে উঠলে অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়তে হতে পারে, এই বিষয়টিও মাথায় রাখুন।

Previous articleডাউন সিনড্রোমঃ প্রয়োজন দ্রুত ও সময়মতো চিকিৎসা
Next articleসন্তানের সাফল্যের জন্য যে কাজগুলি করতে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here