আমি বাঁচতে চাই, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই

0
59

আসসালামু আলাইকুম, আমি একজন ছেলে, বয়স তেইশ। বর্তমানে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্রাজুয়েশন শেষ করে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। বর্তমানে আমি সিঙ্গেল। তেমন কারো সাথে মিশিও না। বলতে গেলে প্রায় একাই থাকা হয়। কিন্তু আমার খুব বিয়ে। করতে ইচ্ছে করছে এবং একদম একাকিত্ব লাগে। প্রচুর পড়াশোনার চেষ্টা করি কিন্তু মাঝে মাঝে দম বন্ধ করা হাঁসফাঁস ধরনের পেইন হয়, মাথায় কোনো কিছু কাজ করে না। আগামী দুই বছরের মধ্যে বিয়েও করা পসিবল না। মাঝে মাঝে নিজেকে মানসিকভাবে প্রচণ্ড অসুস্থ আর দুর্বল লাগে, সাথে শারীরিক দুর্বলতাও আছে। আমি অতীতের কিছু ঘটনার কারণে প্রচণ্ড পরিমাণে মানসিক আঘাত পাই। কেউ একজন আমার সাথে প্রচণ্ড পরিমাণে বিশ্বাসঘাতকতা ও বেইমানি করে। মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করে। সেই স্মৃতিগুলো বারবার ঘুরেফিরে মনে পড়ে। এক সময় আমার সব কিছুই ছিল। আল কিছুই নেই। নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হয়। কিন্তু আমি আমার ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ ফোকাস দিতে চাই। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই আগে। এই মুহূর্তে আমি কী করতে পারি? প্লিজ ভালো কোনো সাজেশন দিন যাতে আমি আমার এই সমস্যার মোকাবেলা করতে পারি। আমি বাঁচতে চাই। আমি আমার কষ্ট সহ্য করতে পারি না। আমি কীভাবে এই পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে পারি?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

পরামর্শ দিয়েছেন
অধ্যাপক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন
প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান
মানসিক রোগ বিভাগ, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ।

আপনি দুশ্চিন্তাজনিত মানসিক চাপে ভুগছেন। পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন বিভাগীয় প্রধান, মানসিক রোগ বিভাগ, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ। আপনি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্রাজুয়েশন শেষ করেছেন-এটা জীবনের একটা বড়ো সফলতা। এই বয়সে আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে বাস্তবসম্মত চিন্তা করতে হবে। বাঁচতে তো হবেই-যদিও বাঁচা মরার ব্যাপারটা সৃষ্টিকর্তাই নিয়ন্ত্রণ করেন। আর প্রতিষ্ঠা তো যোগ্যতানুযায়ী পেতেই হবে কিন্তু নিজস্ব সীমাবদ্ধতাকে ভুলে গেলে চলবে না। বিয়ে তো একটা গুরুত্বপূর্ণ গুরু দায়িত্ব। কাজেই বিয়ে একাকিত্ব বা দুশ্চিন্তা দূর করবে না বরং উল্টোটাও ঘটতে পারে। যথাসম্ভব নৈরাশ্যবাদীতা পরিহার করে আশাবাদী হোন। নিয়মতান্ত্রিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ধীরে ধীরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চর্চা করুন। মনে রাখবেন, অনিয়ন্ত্রিত মন জীবনকে ভালো কিছু দিতে পারে না। তাই মনকে নিয়ন্ত্রণ করে বাস্তবসম্মত চিন্তা করতে শিখুন। বিশ্বাসঘাতকতা তো মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম। তাই তো ডা. লুৎফর রহমান বলেছেন, “দুনিয়াটা কিছু স্বার্থবাদীর আড্ডাখানা”। তাই বিশ্বাসঘাতকতাকে স্মৃতির ভাণ্ডারে না রেখে বরং শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে ভবিষ্যতকে গঠন করুন। আপনি Cap.Prodep 20mg সকালে খাওয়ার পর একটা এবং Tab. Topirva XR 50 mg রাতে খাওয়ার পর একটা করে খেয়ে যান।

সম্ভব হলে কাছাকাছি কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করতে পরলে ভালো হয়। ধন্যবাদ অপনাকে।

Previous articleঅধ্যাপক ডা. দীপেন্দ্র নারায়ন দাসের স্মরণে ভার্চুয়াল শোকসভা
Next articleসবাইকে সন্দেহ হয়, বিশ্বাস করতে পারি না কাউকে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here