আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপ যৌনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি

0
159

জৈবিক ও জ্ঞানীয় আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপ যৌনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি বলে ‘জার্নাল অব সেক্সুয়াল মেডিসিন’-এ উঠে এসেছে। সেখানে  প্রকাশিত একটি পর্যবেক্ষণমূলক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপ) যা উচ্চ জ্ঞানসম্বন্ধীয় (কগনিশন) এবং জৈবিক সংক্রান্ত (বায়োলজিক্যাল) বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত। এটি যৌন রোগ বিকাশে অবদান রাখতে পারে।

পূর্বে সাধারণ মানসিক আঘাত নয় বরং যৌনতা বিষয়ক মানসিক আঘাতকে যৌন নিষ্ক্রিয়তার সাথে সম্পর্কযুক্ত হিসেবে ভাবা হতো। কিন্তু, যুদ্ধকর্মী এবং যৌন অপরাধের শিকার নন এমন ব্যক্তিদের উপর করা পরীক্ষণে দেখা গিয়েছে যে, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার যৌন নিষ্ক্রিয়তার কারণ হতে পারে। এমন কি যদি সেই মানসিক আঘাতটি ধর্ষণ কিংবা যৌন নিপীড়নের সাথে সম্পর্কিত না হয় তবুও।

এই প্রতিবেদনের সহকারী অধ্যাপক এমি লরহেনার বলেছেন, ‘এটি পরিষ্কার যে আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপ যৌন সমস্যার সাথে সম্পর্কিত এমনকি তুলনামূলকভাবে তরুণদের ক্ষেত্রেও। যারা এই ধরণের মানসিক আঘাত অনুভব করেননি।’

তিনি আরো বলেন যে, ‘আমাদের এই পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারের সাথে যৌন কর্মহীনতার সম্পর্ক আরো ভালোভাবে বুঝতে হবে এবং আরো নতুন চিকিৎসার বিকাশ ঘটাতে হবে যাতে করে মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নত এবং স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত হয়।’

গবেষকেরা জানিয়েছেন যে, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার এবং যৌন চাহিদা একই হরমোনাল এবং স্নায়বিক নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এজন্যই যৌন নিষ্ক্রিয়তার চিকিৎসায় যে ওষুধ ব্যবহার করা হয় তা প্যানিক অ্যাটাক অথবা উদ্বিগ্নতার জন্ম দিতে পারে।

যৌন উত্তেজনা ভয়ভীতির শারীর বৃত্তীয় (ফিজিওলজিক্যাল) অভিজ্ঞতাকে অনুসরণ করে। কিন্তু, একবার যদি এই সম্পর্কটি মানসিক আঘাতে আরো গভীরে চলে যায়, তবে এই দুটোকে আলাদা করা কঠিন হয়ে পড়ে বলে গবেষকেরা জানিয়েছেন।

এক্ষেত্রে আবেগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রায় ২০টির অধিক পরীক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে গবেষকেরা জানিয়েছেন যে, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার একজন ব্যক্তির নিরাপত্তার চাহিদা এবং অন্যের সাথে বিশ্বাস এবং সম্পর্ক স্থাপনের ইচ্ছাকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার মাধ্যমে যৌন নিষ্ক্রিয়তার জন্ম দিতে পারে। এর ফলে উত্তেজনার সাথে ভয়ের সম্পর্ক স্থাপিত হয়।

পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘনিষ্ঠতাকে এড়িয়ে চলতে চায়। কারণ এটি তার মধ্যে মানসিক এবং শারীরিক দুর্বলতার জন্ম দেয়। এছাড়াও প্রয়োজনীয় কাম উত্তেজনার (অর্গাজম) চাহিদা, অসহায়ত্ব, আতঙ্ক ইত্যাদি অনুভূতিকে জাগিয়ে তোলে।

গবেষকেরা মনে করেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের সবসময় পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার এবং যৌন নিষ্ক্রিয়তার ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleইলেকট্রনিক ডিভাইসের স্ক্রিণে অধিক সময় ব্যয়ের সঙ্গে আত্মহত্যা সম্পর্কিত
Next articleনারীর মানসিক স্বাস্থ্য ও সচেতনতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here