Close Menu
    What's Hot

    সাইকিয়াট্রি বিভাগের জুলাই মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    শিশুদের কেন এবং কিভাবে পরার্থপরতার প্রেরণা দেয়া যায়

    Facebook X (Twitter) Instagram
    Friday, July 11
    Facebook X (Twitter) Instagram
    মনের খবরমনের খবর
    ENGLISH
    • মূল পাতা
    • কার্যক্রম
      1. জাতীয়
      2. আন্তর্জাতিক
      Featured
      কার্যক্রম July 7, 2025

      সাইকিয়াট্রি বিভাগের জুলাই মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

      Recent

      সাইকিয়াট্রি বিভাগের জুলাই মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

      বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

      অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    • প্রতিদিনের চিঠি
    • মানসিক স্বাস্থ্য
      1. মাদকাসক্তি
      2. মানসিক স্বাস্থ্য সেবা তথ্য
      3. যৌন স্বাস্থ্য
      4. শিশু কিশোর
      Featured
      ফিচার October 7, 2024

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      Recent

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে শেখাবেন

      কর্মব্যস্ততা প্রভাব ফেলে যৌনজীবনে

    • ফিচার
    • প্রশ্ন-উত্তর
      1. বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
      2. মাদকাসক্তি
      3. মানসিক স্বাস্থ্য
      4. যৌন স্বাস্থ্য
      Featured
      প্রশ্ন-উত্তর May 3, 2025

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      Recent

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      বর্তমানে খুব ভয়াবহ সমস্যায় ভুগছি, কী করবো বুঝতে পারছিনা

      রাতে ঘুমাতে পারি না, সবসময় এক ধরনের অস্থিরতা অনুভব করি

    • জীবনাচরণ
      1. অন্যান্য
      2. অপরাধ আচরণ
      3. কুসংস্কার
      4. মতামত
      5. মন ও ক্রীড়া
      6. মন প্রতিদিন
      7. মনোসামাজিক বিশ্লেষণ
      8. সাক্ষাৎকার
      Featured
      দিনের চিঠি April 28, 2025

      রায়হান মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, অকারণে আতঙ্কিত বোধ করছে

      Recent

      রায়হান মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, অকারণে আতঙ্কিত বোধ করছে

      জীবনের ফাঁদে যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছি, কায়দা করেও আর যেন বাঁচতে পারছি না!

      মা আর নিজেকে চেনেন না — ঘুম নেই, স্মৃতি নেই, পরিচ্ছন্নতাও নেই!

    • মনস্তত্ত্ব.
      1. তারকার মন
      2. ব্যাক্তিত্ব
      3. মনস্তত্ত্ব
      Featured
      ফিচার December 5, 2023

      শিশুদের ওসিডি অভিভাবকেরই দায় বেশি

      Recent

      শিশুদের ওসিডি অভিভাবকেরই দায় বেশি

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      প্রসঙ্গ : সাইক্লোথাইমিক ব্যক্তিত্ব

    • করোনায় মনের সুরক্ষা
      1. টিপস্
      2. বিশেষজ্ঞের মতামত
      3. বিশ্ব পরিস্থিতি
      4. সার্বক্ষনিক যোগাযোগ
      Featured
      টিপস্ September 28, 2024

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      Recent

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      প্রবাসীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় MK4C-তে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার পরামর্শ

      পরিবার যেভাবে শিশুকে গড়ে তুলবে

    মনের খবরমনের খবর
    You are at:Home » অ্যাংজাইটি অ্যাটাক: প্যানিক ডিসঅর্ডার
    ফিচার

    অ্যাংজাইটি অ্যাটাক: প্যানিক ডিসঅর্ডার

    মনের খবর ডেস্কBy মনের খবর ডেস্কJanuary 15, 2022No Comments9 Mins Read0 Views
    Facebook Twitter Pinterest Telegram LinkedIn Tumblr Email Reddit
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp Email

    ‘মরে যাচ্ছি, আমি মরে যাচ্ছি’

    ডাইনিং টেবিল সাজানো হয়েছে। সকালের নাশতার জন্য বাসার সবাইকে ডাকছে গৃহকর্মী, আয়েশা। বন্ধের দিন আজ। সবাই ঘুমাচ্ছে। কারোরই ওঠার তাড়া নেই, নাস্তা করার চাহিদা নেই।

    আয়েশা বিব্রত বোধ করছে। সবকিছু ঠান্ডা হয়ে যাবে। ঠান্ডা হলে কেউ খেতে চায় না। খাবার বারবার গরম করা ঝামেলার কাজ। বুয়া অস্থির হয়ে হাঁটাহাঁটি করছে।

    শোবারঘরের দরজায় টোকা দিল সে।

    খালাম্মা, ওডেন। টেবিলে নাস্তা সাজাইয়া দিছি।

    কোনো সাড়া নেই। নাক ডাকার শব্দ পাচ্ছে আয়েশা।

    এবার সে এল ভাইজানের ঘরের সামনে।

    ইন্টারমিডিয়েট পড়ুয়া রিয়াদ ঘুমাচ্ছে। রিয়াদের দরজায় টোকা দেওয়া নিষেধ।

    জরুরি অবস্থা ছাড়া এ ঘরে ঢোকা যায় না। কেউ ঢুকে পড়লে খেপে যায়। ভাইজানের এ স্বভাবের কথা ভুলে গেছে আয়েশা। দরজা ভেজানো। ভেতর থেকে লক করা নেই। নব ঘুরিয়ে দরজা খুলল সে।

    খুট করে শব্দ হয়।

    কে? ঝাঁঝালো কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে রিয়াদ।

    আমি ভাইজান, আয়েশা।

    এত সকালে দরজা খুলেছ কেন?

    সহাল না, ভাইজান। নয়ডা বাজে। ওডেন। নাশতা খায়বেন।

    নয়টা বাজে! লাফিয়ে উঠল রিয়াদ।

    নটার সময় কোচিংয়ে যাওয়ার কথা। আরামে ঘুমাচ্ছিল সে।

    শীতের সকালে লেপ সরানো কঠিন। কঠিন কাজটা সহজে করে ফেলল সে। ছুড়ে মারল ওটা। অনেক দূরে ছিটকে পড়েছে লেপ।

    বাইরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে একবার বসারঘরে উঁকি দিল পত্রিকার হেডলাইন দেখার ইচ্ছায়।

    সোফার পাশে টি-টেবিলের ওপর পত্রিকাটা দুই ভাঁজ করে রেখে দিয়েছে আয়েশা।

    হেডলাইন দেখার জন্য পত্রিকা ওল্টানোর প্রয়োজন নেই। পত্রিকার অর্ধেক পাতাজুড়ে লাল কালিতে হেডলাইন বড়ো বড়ো চোখে তাকিয়ে আছে:

    হবিগঞ্জে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত ৫, আহত ১০০। কাল সারা দেশে হরতাল।

    ইশ্! বলেই থমকে গেল রিয়াদ। শব্দটা অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেরিয়ে এসেছে মুখ থেকে। কোচিংয়ে যাওয়ার ইচ্ছাটা দমে গেলেও তা বাতিল করল না।

    পত্রিকা হাতে নেবে, এমন সময় গেস্টরুমের দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন রিয়াদের মামা, গোলাম মাওলা।

    তুমি কি বাইরে যাচ্ছ, রিয়াদ?

    চাচ্ছিলাম, মামা। কেন? রিয়াদ পালটা প্রশ্ন করে।

    আমি একটু বাইরে যাব। সঙ্গে তোমাকে নিতে চাই। যাবে আমার সঙ্গে?

    কেন? আমাকে নেবে কেন? আমার কোচিং আছে তো।

    আজ বন্ধের দিন। কোচিংয়ে না-গেলেও চলবে। আমার সঙ্গে একটু চলো। জরুরি কাজ আছে আমার।

    তোমার জরুরি কাজ তো, আমার কী? আমি গিয়ে কী করব?

    না, তোমার কোনো কাজ নেই। কাজ আমারই। তোমার কাজ হলো আমার সঙ্গে থাকা।

    কেন? তোমার সঙ্গে থাকতে হবে কেন?

    মাওলা সব কথা বলতে চান না দুরন্ত ভাগনেটির কাছে। বললেন, পাল্টা প্রশ্ন কোরো না। তোমাকে সঙ্গে নিতে চাই। এটুকুই। ব্যস।

    রিয়াদ দুরন্ত হলেও মামাকে ভালোবাসে। মামার কথা ফেলা যায় না। পত্রিকা রেখে বলল, ঠিক আছে। আমি কোচিং সেন্টারে ফোন করে দেখি। আজ সেন্টার খুলবে কি না জেনে নিই।

    মাওলা রেডি হচ্ছেন। ভাগ্নের আশ্বাস পেয়ে সাহস বেড়ে গেল তাঁর।

    হঠাৎ তিনি টের পেতে লাগলেন বুকের নিচের দিকে জ্বালাপোড়া করছে।

    বাঁ হাত বুকের ওপর চলে এসেছে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে হাত দিয়ে বুকের নিচে ঘষতে লাগলেন।

    এমন লাগছে কেন? মুহূর্তে উৎকণ্ঠা বেড়ে গেল। আকস্মিক মনে হলো, ‘সামথিং রং’। নিশ্চয় ভয়ংকর কোনো কিছু ঘটছে! বুকের ভেতর চাপবোধ হচ্ছে। ব্যথা শুরু হয়েছে। ব্যথা বাড়ছে। তীব্র হচ্ছে।

    তবে কি হার্ট অ্যাটাক হয়েছে! ভাবতে গিয়ে ঘামতে শুরু করলেন মাওলা। শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত হয়ে গেল। ছোটো ছোটো শ্বাস নিচ্ছেন তিনি। দ্রুত। মরে যাচ্ছন কি? হুসহুস করে মনে প্রশ্ন উড়ে উড়ে আসতে লাগল।

    হাত বাঁ দিকে একটু উপরে উঠে আসে। হৃৎপি-ের গতি বেড়ে গেছে। চেপে রাখতে চাচ্ছেন মাওলা। পারছেন না। হৃৎপিন্ড- ছুটছে। ধুবধুব গতিতে ছুটছে। দপদপ শব্দ হচ্ছে। বুকের শব্দ কানেও শোনা যাচ্ছে। বুকের ব্যথা আরও বেড়ে গেছে।

    একবার ডাক দিলেন, রিয়াদ! রিয়াদ।

    ভয়ংকর স্বরে ডাকছেন তিনি।

    ডাক শুনে মুহূর্তেই ঘুরে দাঁড়াল রিয়াদ। হাতে তুলে নেওয়া মুঠোফোনটা রেখে ছুটে এল মামার কাছে।

    কী, কী হয়েছে মামা?

    আমি বোধ হয় মরে যাচ্ছি। তোর বাবাকে ডাক। মাকে ডাক। আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যা। বাঁচা, আমাকে বাঁচা।

    মামার কণ্ঠে আতঙ্ক ঝরে পড়ল।

    রিয়াদ ছুটে এসে মামাকে ধরে বুঝল ঘামছেন তিনি। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেছে।

    সত্যি সত্যিই মরে যাচ্ছেন মামা?

    চিৎকার করে ডাক দেয় সে, আব্বু! আব্বু! তাড়াতাড়ি এসো! আম্মু! আম্মু! মামা মরে যাচ্ছে!

    সবাই ছুটে এলেন।

    মাথা ঘুরছে মাওলার। তাঁর চারপাশ ঘুরছে। মনে হচ্ছে জ্ঞান হারিয়ে যাচ্ছে, বমি বমি লাগছে, হাত-পায়ের বোধ হারিয়ে ফেলছেন। সেনসেশন লোপ পেয়ে যাচ্ছে।

    দশ মিনিটেই পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। কাঁপছেন মাওলা। ভয়াবহ রকম কাঁপছেন।

    মরে যাচ্ছি আমি! মরে যাচ্ছি! অস্ফুট স্বরে বলতে লাগলেন তিনি।

    রিয়াদের আব্বু অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ফোন করে দিয়েছেন।

    কিছুক্ষণের মধ্যে সাইরেন বাজিয়ে বাসার সামনে অ্যাম্বুলেন্স এসে হাজির হয়েছে। গ্রিন রোডে সেন্ট্রাল হাসপাতালের কাছেই ওদের বাসা।

    মাওলাকে ট্রলিতে তুলে নিয়েছেন অ্যাম্বুলেন্সের দক্ষ কর্মীরা। দ্রুত তাঁকে ইমারজেন্সিতে আনা হয়েছে।

    দ্রুত ইসিজি করা হয়েছে।

    না। ভয় নেই। ইসিজি রিপোর্ট নরমাল।

    সব স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। ৩০ মিনিটের ব্যবধানে মাওলা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে গেছেন।

    জরুরি বিভাগের বিছানায় শুয়ে আছেন তিনি। সব উপসর্গ উধাও হয়ে গেছে।

    চিকিৎসক বললেন, ওনার কোনো অসুখ নেই। সব স্বাভাবিক। বাসায় নিয়ে যেতে পারেন।

    রিয়াদ সব সময় মামার পাশে পাশে আছে। চিকিৎসকের আশ্বাস শুনে ওর ভয় কেটে গেল।

    ওঠো মামা। ধাক্কা দেয় সে মাওলাকে।

    হেঁটে চলো। কোনো ভয় নেই। বেঁচে গেছ তুমি।

    মনোদৈহিক বিশ্লেষণ

    মাওলা প্যানিক ডিসঅর্ডার বা আতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এটি উদ্বেগ-রোগের একটি ধরন।

    প্যানিক ডিসঅর্ডারে কেন্দ্রীয় উপসর্গ হচ্ছে প্যানিক বা আতঙ্ক―এ ক্ষেত্রে আকস্মিক অ্যাংজাইটি অ্যাটাক ঘটে থাকে। এ উদ্বেগ-রোগে দৈহিক উপসর্গের জোয়ার আসে। অর্থাৎ দৈহিক উপসর্গগুলো তীব্রতার দিক থেকে প্রাধান্য বিস্তার করে। সঙ্গে সঙ্গে মনে হতে থাকে বিপজ্জনক কিছু ঘটতে যাচ্ছে। মনে হতে পারে মরে যাচ্ছি। যেমনটা ঘটেছে মাওলার ক্ষেত্রে।

    ‘ইরিটেবল হার্ট’, ‘ডা কোস্টা’স সিনড্রোম’, ‘নিউরোসারকুলেটরি এসথেনিয়া’ ইত্যাদি নামে অতীতে রোগটিকে চিহ্নিত করা হতো।

    বর্তমানে আতঙ্ক রোগটি নিয়ে গবেষণার রিপোর্ট উন্নততর হয়েছে।

    গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে দ্রুতই অ্যাংজাইটি ঊর্ধ্বগতিতে ছুটে আসে; তীব্রতা অনেক উঁচুতে উঠে যায়। প্রতিক্রিয়া থাকে তীব্র, ভয়াবহ। মৃত্যুভয়ে কাবু হয়ে যায় রোগী। কোনো রকম পূর্বসংকেত ছাড়াই আকস্মিক ঘটে যায় এমন কা-। অপ্রত্যাশিতভাবে ঝেঁপে ধরে দৈহিক উপসর্গ। ৩০ মিনিটের মধ্যেই উপসর্গগুলো আবার মিলিয়ে যায়।

    ডায়াগনোসিসের জন্য একটি প্যানিক অ্যাটাকে কমপক্ষে এ রোগের চারটি উপসর্গ থাকতে হবে। যখন চার সপ্তাহে চারটার বেশি অ্যাটাক হবে, অথবা একটি অ্যাটাকের পর পুনরায় অ্যাটাক হওয়ার ভয় যদি এক মাস সার্বক্ষণিক মনের মধ্যে বজায় থাকে, তখন প্যানিক ডিসঅর্ডার শনাক্ত করা হয়।

    আমরা মাওলার দিকে ফিরে তাকাতে পারি।

    অপ্রত্যাশিতভাবে মাওলার অ্যাটাকটি শুরু হয়েছে। স্বাভাবিক নিয়মেই শুরু হয়ে ছিল দিন। কিন্তু হঠাৎই রিয়াদের পরিবারের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ঝড়। আকস্মিক এ ঘটনায় পারিবারিক অবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে গেছে।

    অফিস বন্ধের দিনগুলোতে রিয়াদদের ঘরের পরিবেশ এমনই থাকে। রিয়াদ প্রতি বন্ধের দিন এভাবেই কোচিংয়ে যায়। সবকিছু নিয়মমতোই চলছিল। আয়েশা নাশতা তৈরি করে সবাইকে ডেকে ডেকে ক্লান্ত হচ্ছিল। জীবনের কোথাও ব্যত্যয় ঘটেনি।

    হ্যাঁ, ব্যত্যয় ঘটেছে দেশে। বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন অনেকে। খবরটা মাওলা তখনও জানেননি। নিয়মমতোই তার ভোর শুরু হয়েছিল।

    কোনো কোনো রোগীর দ্রুতগতিতে শ্বাস বেড়ে যায়। একে বলে হাইপারভেনটিলেশন (Hyperventilation)। মাওলাও এ সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। দ্রুত ছোটো ছোটো শ্বাস নেওয়ার কারণে রক্তে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ কমে আসে। ফলে মাথা ঘোরায়, ঝিমঝিম করে, কানে ঝিনঝিন শব্দ হয়, দুর্বলতায় নেতিয়ে পড়ে দেহ, জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা তৈরি হয়, অবসাদ বা চেতনা লোপ পায়, হাত-পায়ে সেনসেশন হারিয়ে যায়, বুকে অস্বস্তি হানা দেয়, হাত খিঁচে আসে ইত্যাদি নানা উপসর্গের যাতনা বাড়ে।

    প্যানিক ডিসঅর্ডারের মোট ১৩টি উপসর্গের মধ্যে কমপক্ষে চারটি উপসর্গ একটি অ্যাটাকে থাকতে হবে। মাওলার মধ্যে আমরা প্রায় সব ক’টি উপসর্গ দেখতে পাই। এটি ব্যতিক্রম। সব ক’টি উপসর্গ থাকতে হবে, এমন কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই।

    তবে প্যানিক অ্যাটাকটি অন্যান্য উদ্বেগ-রোগ, যেমন―সাধারণ উদ্বেগ-রোগ, অহেতুক ভয়রোগ, ফোবিয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে এই রোগগুলোর নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের প্রাধান্য থাকে। এমনকি বিষণ্ণতা-রোগ কিংবা অ্যাকিউট অর্গানিক ডিসঅর্ডারেও এমন অ্যাটাক দেখা দিতে পারে।

    সাধারণ জনগোষ্ঠীতে ৩.২ শতাংশ মহিলা এবং ১.৩ শতাংশ পুরুষ এ রোগে ভোগে (কেসলার ’৯৪)।

    যারা আতঙ্ক রোগে ভোগেন, তাদের প্রায় ৫০ শতাংশ অ্যাগোরা ফোবিয়া রোগেও ভোগেন।

    অ্যাগোরা (Agora) অর্থ মুক্ত বা খোলা স্থান। অর্থাৎ―ওরা একা মুক্ত স্থানে বা বাইরে যেতে ভয় পায়। কেস স্টাডির আলোচনাংশে মাওলার ক্ষেত্রেও বৈশিষ্ট্যগুলো আমরা লক্ষ করেছি।

    বারবার সে রিয়াদকে সঙ্গে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছিল। বোঝাচ্ছিল।

    আসলে আগেও মাওলার এমনি অ্যাটাক হয়েছিল। ভয় বিরাজ করছিল তাঁর মনে। বাইরে গেলে যদি অ্যাটাক হয়? কে রক্ষা করবে?

    অবচেতন মনে তাই বাইরে যেতে সব সময় কাউকে নিতে চায় রোগী। যেমনটি চেয়েছিলেন মাওলা।

    কেন হয় এই রোগ

    যেকোনো মানসিক রোগ একক কারণ দ্বারা ব্যাখ্যা করা কঠিন। বলা হয় বায়োলজিক্যাল, সাইকোলজিক্যাল এবং সামাজিক কারণের মিথস্ক্রিয়ায় মানসিক রোগ ঘটে থাকে।

    তবে গবেষকরা বলছেন, এ রোগের পেছনে ফ্যামিলিয়াল কারণ রয়েছে (ক্রো ’৯৩; মেয়ার ’৯৩)।

    আরও দুটি হাইপোথিসিস উল্লেখ করা যায় :

    ১. বায়োলজিক্যাল কারণ : বায়োকেমিক্যাল হাইপোথিসিস―এ হাইপোথিসিসে তিনটে অবজারভেশন রয়েছে :

    ক. সোডিয়াম ল্যাকটেট এবং ইয়োহিমবিন নামক দুটি রাসায়নিক পদার্থ সহজে প্যানিক ডিসঅর্ডারের রোগীর মধ্যে অ্যাংজাইটি অ্যাটাক ঘটিয়ে দেয়। সাধারণ সুস্থ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমনটি দেখা যায় না।

    খ. কিছু মেডিসিন ব্যবহার করে প্যানিক অ্যাটাক কমানো যায়।

    গ. জেনেটিক বৈশিষ্ট্য বায়োকেমিক্যাল মেকানিজমের মাধ্যমে বংশপরম্পরায় চলে আসে। এর প্রমাণ পাওয়া গেছে।

    এভাবে তিনটি অবজারভেশন প্যানিক ডিসঅর্ডারের বায়োলজিক্যাল কারণের সপক্ষে প্রমাণ দাঁড় করায়।

    ২. সাইকোলজিক্যাল কারণ : কগনিটিভ হাইপোথিসিস।

    দৈহিক উপসর্গ রোগের আতঙ্ক জাগিয়ে তোলে, রোগটিকে সক্রিয় করে তোলে। ফলে উদ্বেগ দ্রুতগতিতে সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠে যায়। সঙ্গে সঙ্গে দৈহিক উপসর্গও চরম তীব্র অবস্থানে উঠে আসতে থাকে।

    অন্তর্গত কিংবা বাইরের স্টিমুলাস বা উদ্দীপকের কারণে অ্যাংজাইটি তৈরি হয়। সঙ্গে সঙ্গে আসে দৈহিক উপসর্গ। ফলে উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। দৈহিক উপসর্গ চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ে, ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্ম হয়। ক্রমে গোলকধাঁধা বা দুষ্টচক্রে আটকে থাকার কারণে রোগ বজায় থাকে।

    কগনিশন এভাবে নেতিবাচক অবস্থানে দাঁড়িয়ে যায়। রোগ বয়ে বেড়াতে তখন বাধ্য হয় রোগী।

    ৩. অতিরিক্ত শ্বাসক্রিয়াও রোগ আক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

    ইচ্ছাকৃত দ্রুত শ্বাসক্রিয়ার মাধ্যমে প্যানিক অ্যাটাক ঘটানো যায় (হিববার্ট ’৯৪)। অনিচ্ছাকৃত অতিরিক্ত শ্বাসক্রিয়ার জন্য এমনটা ঘটে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড টেনে নিলে এ রোগের অ্যাটাক ঘটে যায়। সাধারণ সুস্থ জনগোষ্ঠীর এমনটা ঘটে না।

    শ্বাসরোধের মতো ঘটনায় প্যানিক ডিসঅর্ডারের রোগীরা বেশি সংবেদনশীল। তখন বেশিমাত্রায় তীব্র গতিতে অ্যাংজাইটি ছুটে আসে (ক্লান ’৯৩)।

    রোগীর চিকিৎসায় করণীয়

    অবশ্যই মনোরোগের চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

    গবেষণায় দেখা গেছে, ওষুধ ব্যবহার এবং কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপির যৌথ চিকিৎসায় উন্নতির হার সর্বোচ্চ।

    ওষুধের মধ্যে এসএসআরআই গ্রুপ সেরা। টিসিএ গ্রুপের মধ্যে ইমিপ্রামিন ড্রাগ অব চয়েস। বেনজোডায়াজিপিন্স গ্রুপের মধ্যে ক্লোনাজিপাম, আলপ্রাজোলাম ব্যবহার করা যায়। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

    অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল

    কথাসাহিত্যিক ও মনোশিক্ষাবিদ

    সূত্রঃ মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিন, ৪র্থ বর্ষ, ১০ম সংখ্যায় প্রকাশিত।

    স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
    করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
    মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে 

    “মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪
    কোভিড ১৯ মনের খবর মানসিক চাপ মানসিক রোগ মানসিক সমস্যা মানসিক স্বাস্থ্য
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Reddit WhatsApp Telegram Email
    Previous Articleখ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রেজওয়ানা কাদেরী আর নেই
    Next Article একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি অবশ্যই মানসিক রোগে আক্রান্ত
    মনের খবর ডেস্ক

    Related Posts

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    July 5, 2025

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    July 3, 2025

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    Top Posts

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    June 30, 2025290 Views

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025203 Views

    অতিরিক্তি হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায়

    July 25, 2021179 Views

    অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায়

    August 22, 202183 Views
    Don't Miss
    কার্যক্রম July 7, 2025

    সাইকিয়াট্রি বিভাগের জুলাই মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

    বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সাইকিয়াট্রি বিভাগের জুলাই মাসের বৈকালিক চিকিৎসাসেবা সময়সূচি প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত সূচি…

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    প্রকাশক ও সম্পাদক:
    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
    মোবাইল : (+88) 018-65466594, (+88) 014-07497696
    ইমেইল : info@monerkhabor.com

    লিংক
    • মাসিক ম্যাগাজিন প্রাপ্তিস্থান
    • কনফারেন্স-সেমিনার-ওয়ার্কশপ
    • প্রেজেন্টেশন
    • জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
    রিসোর্স
    • পরিচালনা পর্ষদ
    • মানসিক বিষয়ে সংগঠন
    • বিশেষজ্ঞ লোকবল
    • নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
    সোশ্যাল মিডিয়া
    • Facebook
    • YouTube
    • LinkedIn
    • WhatsApp
    © 2025 মনেরখবর সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
    • গোপনীয়তা নীতি

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.