অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম এর আত্মজীবনী গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

0
142

বাংলাদেশের মনোরোগ চিকিৎসার পথিকৃৎ কিংবদন্তী মনোরোগ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম এর আত্নজীবনী গ্রন্থ “জীবনে চলার পথে” প্রকাশিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে বাংলা একাডেমীর শামসুর রাহমান হলে “প্রকাশনা অনুষ্ঠান  ও আলোচনা সভা” অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলা একাডেমীর সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি  হিসেবে উপস্থিত ‍ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্ট (বিএপি) এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল এবং বঙ্গবন্ধু  মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম এর নাতি-নাতনি’রা। এরপর বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।
এসময় বিএসএমএমইউ এর মনোরোগবিদ্যা বিভাগ এবং মনের খবর এর পক্ষ থেকে লেখককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
আলোচনা সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রকাশনী সংস্থা ‘একাডেমিক প্রেস এন্ড পাবলির্শাস লাইব্রেরি (এপিপিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমদ সারওয়ারুদৌলা। বইটির বিক্রিত অর্থ অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম প্রতিষ্ঠিত মনোরোগ দুঃস্থ কল্যাণ তহবিলের মাধ্যমে মানসিক রোগীদের চিকিৎসায় খরচ হবে বলে জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, তাঁর বড় ভাই অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম এর জীবন অনেক বৈচিত্রপূর্ণ এবং র্দীঘ।  সেই তুলনায় বইটি স্বল্পর্দৈঘ্য হলেও এটি পাঠ করলে লেখকের জীবনের অনেক ঘটনা জানা যাবে। এসময়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাবনা মানসিক হাসপাতালে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করা সহ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা এবং আরো চিকিৎসা কেন্দ্র ও দাতা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করায় অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম এর প্রশংসা করেন। তাদের বোন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ও আরেক ভাই অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলাম সহ অন্যান্যদের সাফল্যের পেছনে তাদের পরিবারের অবদানের কথা স্মৃতিচারণ করেন তিনি।

অধ্যাপক ডা. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী বলেন, কুসংস্কারাচ্ছন্ন তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার মত কঠিন কাজ করে অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম মনোরোগ চিকিৎসায় সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে অনুকরণীয় আর্দশ হিসেবে  অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এসময় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্ট (বিএপি) প্রতিষ্ঠা করার জন্য অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। “জীবনে চলার পথে” বইটি সমগ্র চিকিৎসক সমাজের জন্য একটি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে উল্লেখ করেন  বিএপি এর এই সভাপতি।

কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. হেদায়েতুল ইসলাম কে আলোর পথের যাত্রী হিসেবে অবিহিত করেন এবং সাইকিয়াট্রি নিয়ে তাাঁর স্বপ্ন পূরণে উত্তরসুরী হিসেবে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান।

নিজের বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব বলেন, ‘আমরা হেদায়েত স্যারকে নানা অনুকরণীয় রুপে চিনলেও এই বইটি তাকে আরও নতুনভাবে চিনতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশে সাইকয়াট্রিস্ট সংকটে দূরীকরণে নিজের পরিবারে আরো চারজন সাইকয়াট্রিস্ট নিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন তিনি।’ সাইকয়াট্রির সকল ছাত্রছাত্রীদের বইটি পড়া উচিত এবং তাদের জন্য বইটি দামে বিশষ ছাড় রাখারও প্রস্তাব দেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, “জীবনে চলার পথে” বইটিতে বাংলাদেশের ইতিহাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সময়ের চিত্র ফুটে উঠেছে। মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য ডা. হেদায়েতুল ইসলামের আগ্রহের প্রশংসা করেন তিনি।

বইটিকে পূর্ব বাংলার মুসলমানদের সামজিক জীবনের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে উল্লেখ করে বইটিতে আমাদের ফেলে আসা জীবনের চিত্র পাওয়া যাবে বলে জানান বাংলা একাডেমীর সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।
নিজের অভিব্যাক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে সহর্ধমীনি জাহানারা ইসলামের অবদানের কথা উল্লেখ করে সততার সাথে বইটি লিখেছেন বলে জানান অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসালাম।

ডা. সম্প্রীতি ইসলামের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন ডা. সামিনা হক।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. হেদায়েতুল ইসালাম এর পরিবারের সদস্য সহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার গণমান্য ব্যক্তিদের পাশাপশি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আলম, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের প্রধান ডা. রমেন্দ্র কুমার সিংহ রয়েল, বিএসএমএমইউ মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সালেহ উদ্দীন আহমেদ, নবীণ সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. ফাতিমা মারিয়া, ডা. ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ প্রবীণ ও নবীন সাকিয়াট্রিস্টরা অংশগ্রহণ করেন।
 

Previous articleমানসিক চাপ কমাতে বাসন মাজুন : গবেষণা
Next articleতাৎক্ষনিকভাবে স্মরণশক্তি বাড়ানোর উপায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here