মানুষের চাহিদার শেষ নেই। কিন্তু আমরা কি চাইবো, বা আমাদের কি প্রয়োজন এবং কি প্রয়োজন নয় সেটি না বুঝে যদি মনের মাঝে অশেষ আকাঙ্ক্ষার জাল বুনি তবে সেটিই হবে আমাদের মানসিক অশান্তি বা দুঃখের মূল কারণ।
আমাদের বেঁচে থাকার জন্য কিছু মৌলিক চাহিদার প্রয়োজন হয় যেগুলি ছাড়া আমরা বেঁচে থাকতে পারিনা। এছাড়াও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সুখ সুবিধার জন্য আমাদের মন এমন অনেক কিছুই প্রত্যাশা করে যেগুলি আমাদের জীবনকে আরও সমৃদ্ধ করে। জীবনে পূর্ণতার অনুভূতি প্রদান করে। আমাদের মনের এই ধরণের চাহিদা বা প্রত্যাশা গুলি কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমাজ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং পরিবেশের উপর নির্ভর করে। আবার অনেক ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণরূপে মনের কল্পনার উপর নির্ভর করে। এই ধরণের কল্পনা প্রসূত চাহিদা একজন মানুষকে অসীম চাহিদা সম্পন্ন করে তোলে যার কোন শেষ ই নেই। তার কাছে সুখে থাকার বা সন্তুষ্ট থাকার জন্য ঠিক কি কি প্রয়োজন সেটি থাকে অস্পষ্ট বা সীমাহীন। তাই প্রাপ্তিও কখনোই পূর্ণতা পায়না। সব সময়ই তাদের মাঝে শূন্যতার অনুভূতি এবং চাহিদা বা প্রত্যাশা প্রবল থাকে এবং তারা থাকে মানসিক ভাবে বিচলিত ও পীড়িত। তাই এই ধরণের চাহিদাকে আমাদের মানসিক প্রশান্তির জন্যই নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।
চাহিদা বা ইচ্ছের লাগাম টেনে ধরতে হলে প্রথমে আমাদেরকে জীবনের প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় চাহিদাগুলিকে চিহ্নিত করতে হবে। ক্কন বিষয়টি আমাদের প্রয়োজন এবং কোনটি আমাদের আসক্তি সেটি যখন আমরা বুঝতে পারবো তখন সহজে নিজের মনকে বোঝাতে পারবো এবং একই সাথে আবেগ নিয়ন্ত্রণেও সমর্থ হবো। এমন অনেক বিষয়ই আছে যেগুলি পূরণ না হলে বা যেগুলি না পেলে আমাদের মন অশান্ত হয়ে ওঠে। আমাদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয় এবং আমাদের এমন মনে হয় যে এটি না পেলে জীবনে চলবেই না। এ ধরণের অভিজ্ঞতায় সব থেকে আগে প্রয়োজন মন নয়, যুক্তি দিয়ে বিচার করা।
এছাড়াও, যখন আপনার মাঝে এমন কিছুর প্রতি আসক্তি জন্মাবে সেটি হয়তো আপনার সাদ্ধের বাইরে তখন তাদের কথা চিন্তা করুন যারা আপনার থেকেও খারাপ অবস্থাতে রয়েছে। যাদের সেসব চাহিদাও পূর্ণ হচ্ছেনা যেগুলি আপনার হয়েছে। যখন অন্যদের দৈনন্দিন জীবনের কষ্ট এবং পীড়া নিয়ে আপনি চিন্তা করবেন তখন নিজের প্রাপ্তি নিয়ে আপনার মাঝে মানসিক প্রশান্তির সৃষ্টি হবে। আপনার মাঝে আবাগের যে তাড়না কাজ করছিল সেটি প্রশমিত হবে।
এটা সব সময় মনে রাখতে হবে যে, মানুষের চাহিদা অসীম। আমরা যত চাইবো, আমাদের মাঝে ততো বেশী চাহিদা জন্ম নেবে। তাই সব সময় অল্প কিছুর মাঝে মানসিক প্রশান্তি খুঁজে নেবার মানসিকতা আমাদের লালন করা উচিৎ। প্রাপ্তির পরিমাণ বেশী হলেই যে কেউ সুখী হয়ে যাবে এমনটি নয়। সুখ এবং মানসিক প্রশান্তি সম্পূর্ণই আপনার চিন্তা ভাবনার উপর নির্ভরশীল। তাই নিজেকে সুখী একজন মানুষ ভাবুন, পূর্ণতা আপনা আপনিই এসে যাবে।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে