পঞ্চইন্দ্রিয়ে নির্ভরশীল মানবজাতির স্বাধীনতা মানবজাতির নিকটেই থাকে। যেকোনো বিষয়ে মতামত কিংবা সিদ্ধান্ত মানুষ নিজেই নিয়ে থাকে। অনেকসময় মানুষ নিজের অজান্তে কিংবা ভুলবশত অনেক কাজ করে থাকে। তার মাঝে অন্যতম হল অকারণে রেগে যাওয়া। আর তাতে নষ্ট হয় পারিবারিক শান্তি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও নেমে আসে দুর্দশা। এজন্যই বলা হয়, রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।
যদিও রাগ মানুষের স্বাভাবিক অভিব্যক্তি। তবে অকারণে রেগে জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ার বিষয়টি মোটেও স্বাভাবিক নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত রেগে যাওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। মাদকাসক্তি কিংবা মানসিক রোগের কারণেই বেশিরভাগ মানুষ অতিরিক্ত রেগে যান।
মানসিক অবসাদ হলো রাগের প্রথম কারণ। এই অসুখের কারণে টানা হতাশা, দুঃখ আসতে পারে। এমন অবস্থায় খুব বেশি দিন থাকলে কথায় কথায় রাগ এবং অভিমান, দুই-ই হতে পারে। মাদকাসক্ত ব্যক্তিরাও অনেক সময় অতিরিক্ত রাগী প্রকৃতির হয়ে থাকেন। এর কারণ হলো অতিরিক্ত মাদকদ্রব্য শরীরে প্রবেশ করে হিংস্রভাব তৈরি করে। চিন্তাশক্তির উপরে মাদকের প্রভাবই এমন করে বলে মত মনোরোগ চিকিৎসকদের।
অকারণে রেগে যাওয়ার লক্ষণ আরও ইঙ্গিত দেয় বাইপোলার ডিজঅর্ডারের। এই অসুখ থাকলে খানিক পরপরই মনের ভাবে পরিবর্তন আসে। কথায় কথায় বিরক্ত হওয়া, নেতিবাচক ও খারাপ চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাওয়া, হঠাৎ করেই চেঁচামেচি করা, উচ্চ রক্তচাপ, বুক ধড়ফড়ের মতো শারীরিক সমস্যা বেড়ে যাওয়া, সাধারণ কোনো ঘটনাতেও আকস্মিক চুপ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি মানসিক রোগের লক্ষণ।
রাগের বশে অনেক কঠিন সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেন অনেকে। এ কারণে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
তবে কীভাবে নিয়ন্ত্রণে আনবেন রাগ:
- কথা বলার আগে ভাবুন।
- সমস্যায় বিচলিত না হয়ে সমাধান খুঁজুন।
- অতিরিক্ত রাগ হলে শ্বাসের ব্যায়াম করুন।
- পরিবারের কারও উপর রাগ-ক্ষোভ হলে তার সামনে না গিয়ে একাকি সময় কাটান।
- পরিবারের সবার সঙ্গে মন খুলে কথা বলুন।
- ব্যস্ততার ফাঁকেও অবসর সময় কাটান।
- পজেটিভ চিন্তা করুন।
- রাগ করার আগে পরবর্তীতে কী হবে, সেটি নিয়ে ভাবুন।
- নিয়মিত মেডিটেশন করুন। এতে মনে প্রশান্তি আসে।
- কোন উপায়ে বেশি কাজ হচ্ছে, তা কিছুদিনেই বুঝতে পারবেন।
তবে অকারণে যদি রেগে যান; তাহলে অবশ্যই আগে জানতে হবে কী কারণে রেগে যাচ্ছেন। যদি মানসিক রোগের কারণে এমনটি হয় তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।