আগামীকাল ১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। “কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য” এই স্লোগানকে সামনে রেখে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও উদযাপিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস- ২০১৭। এই দিবসটিকে সামনে রেখে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান ও নাসিরুল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিট, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারী ও বেসরকারি পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সভা, সেমিনার, কর্মশালা ও র্যালি।
কাজ মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিন্তু নেতিবাচক কাজ এবং কর্মক্ষেত্রে নেতিবাচক পরিবেশ মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক হিসেব অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের কারণে প্রতি বছর বিশ্ব এক ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়। কর্মক্ষেত্রে বিষণ্নতা ও ভীতিজনিত রোগ মোকাবেলা করা একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ। সারা বিশ্ব ৩০০ মিলিয়ন মানুষ বিষণ্নতা ও ভীতিজনিত রোগে আক্রান্ত। কর্মক্ষেত্রে অনিরাপত্তা, ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, মাত্রাতিরিক্ত অথবা অনমনীয় কাজের সময় এবং চাপ মানসিক রোগকে প্রভাবিত করে।
বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ কিন্তু এদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীই কর্মক্ষম তরুণ ও যুবক। এই বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে কর্মদ্যোম রাখতে প্রয়োজন কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা। কিন্তু জনসংখ্যার তুলনায় এদেশে মানসিক স্বাস্থ্য কর্মীর সংখ্যা ভীষণ অপ্রতুল, যা মানসিক স্বাস্থ্য সচেতন জনগোষ্ঠী তৈরিতে অন্যতম প্রধান বাঁধা। এছাড়াও কাজের অনুপযুক্ত পরিবেশ, অতিরিক্ত কাজের চাপ, কর্মস্থলে প্রতিযোগিতা ইত্যাদি বিষয়াবলী কর্মীদের মানসিক সমস্যা বৃদ্ধিকে তরান্বিত করছে। সম্ভাবনাময় ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে এই বিশাল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতিকল্পে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে, কাজ সংশ্লিষ্ট মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো হ্রাস করা। কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতিকল্পে পদক্ষেপ নেয়া। যেসব জায়গায় মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা পাওয়া যায় সেগুলো সম্পর্কে কর্মীদের পরিচয় করিয়ে দেয়া। কার্যকরী স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নীতি গ্রহণ। কর্মস্থলে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত কর্মশালার আয়োজন ইত্যাদি।
কর্মস্থলে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি, উপযুক্ত কাজের পরিবেশ তৈরি, কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্বের সাথে বিবেচনা ইত্যাদির যথাযথ প্রয়োগই হবে এবারের বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের প্রত্যাশা।
মনেরখবর ডেস্ক