হতাশা ও বিষণ্ণতা দূর করার সহজ উপায়

হতাশা ও বিষণ্ণতা দূর করার সহজ উপায়

জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে এমন মনে হতে পারে যে, জীবন যেন হতাশা এবং বিষণ্ণতার মাঝে থমকে গেছে। কিন্তু কিছু আশা জাগানিয়া কৌশল মন থেকে এমন নেতিবাচক অনুভূতি দূর করতে পারে।

জীবনে সুখ-দুঃখ, সুসময়-দুঃসময় থাকবেই। এমন কাউকেই এই পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবেনা যার জীবনে শুধুমাত্র সুখ বা ভালো সময় আছে কিন্তু দুঃখ বা বিপদ নেই। সুখের পর যেমন দুঃখ আসে তেমনি দুঃখের পর আবার সুখের সময় আসা সুনিশ্চিত।

কিন্তু এমন অনেকেই আছে যারা বিপদের সময়, দুঃখের সময় এতোটাই ভেঙ্গে পড়ে যে তাদের মনে হয় এখানেই সব কিছু শেষ। তারা এতোটাই হতাশ হয়ে পড়ে যে জীবনে কোন স্বপ্ন দেখা বা আশা করার ইচ্ছে অবশিষ্ট থাকেনা।

মনস্তত্ত্ববিদগণের মতে, তাদের মূল সমস্যা হল তারা শুধুমাত্র তাদের জীবনের বিভিন্ন বিপদ আপদ এবং অসন্তোষের দিকেই মনোযোগ প্রদান করে। তাদের মধ্যে বিপদ কাটিয়ে ওঠার কোন প্রচেষ্টা থাকেনা এবং তারা আশাবাদী মনোভাবের পরিবর্তে হতাশাকেই লালন করে।

ফলে তারা বিপদ মুক্তির পথও খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়। তাই এটা নিশ্চিত যে, যে কোন বিপদে কখনো মনোবল হারালে চলবে না। আশা বাঁচিয়ে রাখতে হবে, স্বপ্ন দেখতে হবে। তাহলেই হতাশা ও বিষণ্ণতা থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে।

যে কোন সমস্যা সমাধান এবং বিপদে ধৈর্য ধারনের জন্য হতাশা ও বিষণ্ণতাকে দূরে রাখা আবশ্যক। আর এই লক্ষ্যে কিছু সহজ পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।

নিউরো বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, যখন আমরা রাগ করি, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি কিংবা হতাশা ও বিষণ্ণতায় ভুগি, তখন আমাদের মস্তিষ্কের সূক্ষ্ম ও স্বাভাবিক চিন্তা শক্তি বিঘ্নিত হয় এবং এর সৃষ্টিশীল অংশগুলো কিছুটা অকার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

কিন্তু আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিন্তা ভাবনার চর্চা আমাদের সেই অকার্যকরী অংশ গুলোকে সক্রিয় করে তুলতে সহায়তা করে। দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ দূর করতে আমরা আমাদের পছন্দের কাজ যেমন- গাছের পরিচর্যা, গান শোনা, লেখালেখি করা, পছন্দের কিছু রান্না করা, ঘুরতে যাওয়া কিংবা শরীর চর্চা করতে পারি।

এমন নয় যে আপনি আপনার সমস্যা নিয়ে ভাববেন না কিংবা সেটি থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজবেন না। কিন্তু এগুলো করার মাধ্যমে আপনি আপনার মন ও মস্তিষ্ককে ধীর স্থির ও সঠিক ভাবে ভাবতে ও সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত করতে পারবেন। আপনার মন ও মস্তিষ্ক মানসিক বিভিন্ন তাড়না যেমন- হতাশা, বিষণ্ণতা ইত্যাদি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কোন কিছু ভাববে না বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না।

তাছাড়া যেহেতু আমরা সামাজিক জীব এবং একে অপরের সাহচর্য ও সহমর্মিতায় আমাদের জীবন আরও সুন্দর হয়, তাই নিজের যে কোন বিপদে কাছের মানুষদের সাথে সবকিছু নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করুন। এতে মানসিক প্রশান্তি বাড়বে এবং বিপদ মুক্তির নতুন নতুন পথ উন্মোচিত হবে।

জীবনে লক্ষ্য নির্ধারণ করা প্রতিটি মানুষের জন্য প্রয়োজন। এতে যে কোন বিপদেও দিশেহারা হবার ভয় থাকেনা। জীবন যাপনের একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় এবং এতে হতাশ হওয়ার বা বিষণ্ণতায় ভোগার সুযোগও অনেকটাই কমে যায়।

এখন এটি আপনার দায়িত্ব যে আপনি উপরের কৌশল গুলো অনুসরণ করে জীবনে সফল হবেন নাকি হতাশা ও বিষণ্ণতায় ভুগে বিপদকে আলিঙ্গন করে চিরতরে অন্ধকারে হারিয়ে যাবেন। সিদ্ধান্তটি অবশ্যই আপনার।

লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/your-personal-renaissance/202109/feeling-stuck-and-frustrated

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে

Previous articleদুজনকে এক মত হতেই হবে এমন কোন কথা নেই
Next articleকখন একসাথে চলার চিন্তা করা উচিত?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here