সম্পর্কে অন্তরঙ্গতা ও সহমর্মিতার গুরুত্ব এবং বজায় রাখার কৌশল

সম্পর্কে অন্তরঙ্গতা ও সহমর্মিতার গুরুত্ব এবং বজায় রাখার কৌশল

সম্পর্কে দুজন সঙ্গীর মধ্যে যদি অন্তরঙ্গতার বন্ধন দৃঢ় হয় এবং দুজন একে অপরের প্রতি সহমর্মী মনোভাব বজায় রাখে তাহলে সম্পর্ক আরও দীর্ঘস্থায়ী এবং অর্থপূর্ণ হয়।

একে অপরের উপর আস্থা রাখতে পারলে দুজন মানুষের মধ্যে যেমন সব পরিস্থিতিতে হৃদ্যতা বজায় থাকে তেমনি মনস্তাত্ত্বিক বন্ধনও দৃঢ় হয়। আর একে অপরের মধ্যে বোঝাপড়া যত ভালো হয় সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ততো কম পড়ে এবং বিভিন্ন সমস্যার মাঝেও বন্ধন অটুট থাকে।

সম্পর্কে দুজন সঙ্গীর মধ্যে সব থেকে বেশী বিবাদ যে বিষয়গুলো নিয়ে সৃষ্টি হয় এবং তারা থেরাপির শরণাপন্ন হন তার মধ্যে অন্যতম হল একে অপরের প্রতি অনুরাগ শূন্যতা এবং বোঝাপড়ার অভাব। একে অপরের সাথে মনস্তাত্ত্বিক বোঝাপড়া ঠিক না থাকায় তারা সব পরিস্থিতিতে একে অপরের উপর দোষারোপ করে এবং দায় এড়িয়ে যাবার প্রয়াস করে।

আর এতে করে সম্পর্কে অন্তরঙ্গতা কমে এবং একে অপরের পরিপূরক হয়ে ওঠাও সম্ভব হয় না। বিষয়টা কিছুটা জটিল হলেও সম্পর্কে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলো এড়াতে নিচে উল্লেখিত কৌশলগুলো অনুসরণের মাধ্যমে সম্পর্কে অন্তরঙ্গতা, সহমর্মিতা, বোঝাপড়া এবং মনস্তাত্ত্বিক আদান প্রদান আরও সমুন্নত করা যায়।

১. একে অপরের প্রতি ঠিক কি মনোভাব ধারণ করেন সেটি নিয়ে আলোচনা করুন। নিজের চাহিদা, মনোভাব বা সঙ্গী সম্পর্কে আপনার যে কোন চিন্তা ভাবনা নিয়ে খোলামেলা কথা বলুন। এতে একে অপরের প্রতি থাকা ভুল ধারণাগুলো বা ভুল বোঝাবুঝি গুলো দূর হয়ে যাবে এবং একে অপরের প্রতি অন্তরঙ্গতা বাড়বে।

২. ধারণা প্রসূত কোন চিন্তা ভাবনা থেকে কোন প্রকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। ধারণা অধিকাংশ সময়ই হতাশাজনক এবং নেতিবাচক ফলাফল বয়ে আনে। যদি আপনার মনে হয় কোন কারণে আপনার এবং আপনার সঙ্গীর মধ্যে বোঝাপড়া হচ্ছেনা তাহলে সেগুলো নিয়ে মনের মাঝে কল্পনার জাল না বুনে সরাসরি কথা বলুন। এর মাধ্যমেই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে।

৩. সকল প্রকার আবেগ অনুভূতি প্রকাশে স্বচ্ছতার পরিচয় দিন। আবেগ প্রকাশে স্বচ্ছতা থাকলে সঙ্গীরা একে অপরকে আরও বেশী আস্থা করতে পারে এবং তাদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক বোঝাপড়া বাড়ে।

৪. নিজেদের ভালোবাসার প্রতি আস্থা রাখুন। আপনার যে কোন প্রয়োজনে আপনার সঙ্গীর সাহচর্য এবং সহানুভূতি সবার আগে পাওয়ার যেমন অধিকার রয়েছে তেমনি আপনার সঙ্গীরও একই অধিকার রয়েছে। আর দুজনার এই ভালোবাসা ও সাহচর্যের প্রতি সর্বদা আস্থা রাখুন।

৫. নিজের মনোভাবের পাশাপাশি আপনার সঙ্গীর মনোভাবকে গুরুত্ব দিন। সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সংসার পরিচালনায় নিজের মনোভাবের পাশাপাশি আপনার সঙ্গীর আবেগ ও মনোভাবের গুরুত্ব দিন। দুজনার আবেগ ও মনোভাবের সামাঞ্জস্যই দুজনার মধ্যে অন্তরঙ্গতা ও সহমর্মিতা বাড়বে।

৬. ভালো বা মন্দ সব সময় একে অপরের মনোবল হয়ে উঠুন। ভালো কিংবা মন্দ যে কোন পরিস্থিতিতে একে অপরের পাশে থাকার মনোভাব রাখুন। মনের মাঝে এমন লক্ষ্য থাকলেই একে অপরের প্রতি সম্পূর্ণ সমর্পণ এবং আস্থার সম্পর্ক গড়ে উঠবে।

উপরের বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে সম্পর্ক যেমন বিভিন্ন সমস্যাতে দুর্বল হয়ে পড়বে না তেমনি সঙ্গীরাও একে অপরের প্রতি আস্থা, অন্তরঙ্গতা, সহমর্মিতা ও সম্মানপূর্ণ মনোভাব বজায় রাখতে পারবে।

লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/sustainable-life-satisfaction/202109/how-communication-and-attachment-issues-can-affect

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleঅনুভূতির পার্থক্য
Next articleভয়ভীতির কথা মনে হলে খুব বিষণ্ণতায় ভুগতাম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here