মানসিক রোগের চিকিৎসা অবদান রাখবে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে

মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য বিশ্বব্যাপী পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করলে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে। মনোরোগের চিকিৎসার ফলে মানুষ সুস্থ থাকলে তাদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং নতুন উদ্যোমে কাজ করে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে। সে হিসেবে প্রতিটি ডলার/অর্থ ব্যয় হবে সার্বিক উন্নয়নের জন্য। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এসব যুক্তি তুলে ধরে ল্যানসেট সাইকেয়াট্রি (The Lancet Psychiatry) জার্নালে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রতিবছর বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা (এক ট্রিলিয়ন) বিনিয়োগ হচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য।
প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. মার্গারেট চেন বলেন, মানসিক রোগের চিকিৎসার ফলে ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য ও আচরণ উন্নত হচ্ছে। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে তারা আগের তুলনায় বেশি অবদান রাখতে পারছে। মানসিক রোগের জন্য ব্যয় করা এ অর্থকে তিনি বিনিয়োগ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, মানুষ টিকে থাকতে চাইলে মানসিক রোগের চিকিৎসা করাতে হবে।
প্রতিষ্ঠানটির এক জরিপে দেখা যায়, ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত হতাশা ও উদ্বিগ্নতায় ভোগে এমন রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৫০ শতাংশ। সামনের দিনগুলোতে এ হার আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মানসিক রোগ থেকে মানুষকে মুক্ত রাখতে দেশব্যাপী কর্মসূচি বাড়ানো এবং বাজেট বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করে সংস্থাটি।
সংস্থাটি বলেছে, যে হারে মানসিক স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ করা হচ্ছে তাতে ২০৩০ সাল নাগাত ১৪৭ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে। মানসিক রোগ নির্নয়, কাউন্সেলিং সেবা, চিকিৎসা-সেবার জন্য এ অর্থ ব্যয় হবে।
মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের ফলে অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ায় মানুষের কার্যকরী অংশগ্রহণ বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে সার্বিক উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে যার মূল্য ৩৯৯ বিলিয়ন ডলার।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে মানসিক সাস্থ্যে বিনিয়োগ কম হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট, ২০১৪ (WHO’s Mental Health Atlas 2014) অনুযায়ী, উন্নত দেশগুলো বাজেটের ৪-৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখলেও অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো ২ শতাংশ বা তার কম বরাদ্দ রাখছে।
মানসিক স্বস্থ্যে এ বরাদ্দকে বিনিয়োগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম।
ইকনোমিক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, মানসিক রোগ এখনও অনেক আড়ালে আছে। এটি শুধু পাবলিক হেলথ ইস্যূ না বরং এটি উন্নয়নের বিষয় (development issue)।
দেশের উন্নয়ন তথা বৈশ্বিক উন্নয়নের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যকে আরো বেশি প্রাধান্য দেয়া উচিত বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সূত্র: ইকোনমিক টাইমস
ফারুক হোসেন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম

Previous articleসমালোচনা আর নেতিবাচক মন্তব্য কি এড়িয়ে চলা যায়?
Next articleআমি সোশ্যাল ফোবিয়াতে ভুগছি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here