[int-intro]গোল করা নয়, গোল ঠেকানোই তাঁর কাজ। তিনি বাংলাদেশ ফুটবলের একজন জনপ্রিয় তারকা এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। তিনি আমিনুল হক। প্রতিপক্ষের অগণিত লক্ষ্যভেদের চেষ্টা ভন্ডুল করে দিয়ে এবার তিনি মুখোমুখি হয়েছেন মনের খবরের। বলেছেন মনের কথা, ভালো লাগার কথা, জীবন বোধের কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মুহাম্মদ মামুন।[/int-intro]
[int-qs]কেমন আছেন?[/int-qs]
[int-ans]আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।[/int-ans]
[int-qs]কেন ভালো আছেন?[/int-qs]
[int-ans]এটা তো অনেক কিছুর উপরে নির্ভর করে। [/int-ans]
[int-qs]ভালো থাকতে হলে কোন জিনিসটি বেশি চর্চা করা জরুরি?[/int-qs]
[int-ans]সত্যি বলতে ভালো থাকার শেষ কোথায় সেটি হয়তো কেউই জানে না। কারণ প্রতি মুহুর্তে বা চলার পথে আমরা অহরহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হই। চলার পথে প্রতিবন্ধকতা আসবেই এমন একটা মানসিক প্রস্তুতি যদি আমাদের থাকে তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। সমস্যার বিষয়ে আমাদের সবসময় একটা পজেটিভ চিন্তা থাকতে হবে যে সমস্যা যেহেতু আছে তার সমাধানও আছে। [/int-ans]
[int-qs]রাগ হয়? [/int-qs]
[int-ans]অবশ্যই হয়। রাগ, ক্ষোভ, হতাশা এসব মিলিয়েই তো মানুষ। [/int-ans]
[int-qs]রাগ হলে সেটি কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন?[/int-qs]
[int-ans]হয়তো যে জিনিসটি আমি পছন্দ করছি না, সেটি দেখে হয়তো আমার রাগ লাগছে। তখন ভাবি আমি কেন রেগে যাচ্ছি, এমনও তো হতে পারে যে আমিই হয়তো ভুল। এমন একটি ভাবনা অনেকাংশেই আমার রাগ নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে।[/int-ans]
[int-quote]যান্ত্রিকতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মিশে গেছে এবং তা আমাদের প্রয়োজনেই এসেছে। এখন আর এর বাইরে যাওয়ার তেমন সহজ সুযোগ নেই। আবার এটা মানুষকে কতখানি আশ্বস্ত করবে বা নিজেকে একটু ভালো রাখার বা একটু সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য কতখানি সহযোগিতা করবে সেটি আসলে বলা মুশকিল। যান্ত্রিক জীবনে মনের ভালোলাগা বা অনুভূতি প্রকাশের সুযোগ থাকে না। যার কারণে জীবনের যান্ত্রিকতা যত বাড়ছে মানুষের মধ্যে উদাসীনতা, হীনমন্যতা এবং সিদ্ধান্তহীনতা বাড়ছে।[/int-quote]
[int-qs]মানসিক প্রশান্তির জন্য আমাদের কী করা উচিত?[/int-qs]
[int-ans]আল্লাহ্ আমাদের সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টির সেরা জীব হিসবে। এই সেরা জীব হিসেবে আমাদের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আমরা আমাদের নিজেদের অবস্থান থেকে যদি সেসব দায়িত্ব সঠিক ও সৎ ভাবে পালন করি তাহলে আপনা থেকেই অনেক অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। [/int-ans]
[int-qs]অর্থাৎ মনের প্রশান্তির জন্য আপনি ধর্মকে গুরুত্ব দিচ্ছেন?[/int-qs]
[int-ans]ঠিক তাই। এটি মানুষকে সংযত রাখবে। জীবনের যে মৌলিক প্রশ্নগুলো রয়েছে। যেমন- আমি কে? আমার সৃষ্টি কিভাবে হয়েছে? আমি কোত্থেকে আসলাম? আমাকে কোথায় চলে যেতে হবে? এ বিষয়গুলো নিয়ে আমি যখন ভাববো তখন আপনা থেকেই এমন একটি জায়গায় এসে দাঁড়াতে হবে যে আমি কি করছি? আমার কি করা উচিত? আমার শেষ কোথায়? এইযে নিজেকে প্রশ্ন করা নিজেকে ধরে রাখা এই নিয়ন্ত্রণ যতদিন মানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত না হবে ততদিন প্রশান্তি আসবে না। [/int-ans]
[int-qs]যান্ত্রিকতাকে পাশ কাটিয়ে?[/int-qs]
[int-ans]না। যান্ত্রিকতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মিশে গেছে এবং তা আমাদের প্রয়োজনেই এসেছে। এখন আর এর বাইরে যাওয়ার তেমন সহজ সুযোগ নেই। আবার এটা মানুষকে কতখানি আশ্বস্ত করবে বা নিজেকে একটু ভালো রাখার বা একটু সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য কতখানি সহযোগিতা করবে সেটি আসলে বলা মুশকিল। যান্ত্রিক জীবনে মনের ভালোলাগা বা অনুভূতি প্রকাশের সুযোগ থাকে না। যার কারণে জীবনের যান্ত্রিকতা যত বাড়ছে মানুষের মধ্যে উদাসীনতা, হীনমন্যতা এবং সিদ্ধান্তহীনতা বাড়ছে। [/int-ans]
[int-qs]যান্ত্রিকতার সাথে সহাবস্থান করে কিভাবে ভালো থাকা যায় বলে আপনি মনে করেন?[/int-qs]
[int-ans]যেহেতু চাইলেই আমাদের পক্ষে যান্ত্রিক জীবন এড়িয়ে চলা সম্ভব নয় সেহেতু যারা আপনারা মন নিয়ে মানসিক বিষয় নিয়ে কাজ করছেন বা সংশ্লিষ্ট আছে তাদের যে মেসেজ বা বক্তব্যগুলো রয়েছে সেগুলো শুধু মানসিক রোগী যারা শুধু তারা নয়, যারা সুস্থ তাদের কাছেও পৌঁছে দেয়া যে, এই যান্ত্রিক জীবনের সাথে আমাদের মনের সমন্ময়টা করা যায়।[/int-ans]
[int-img name=””]https://monerkhabor.com/wp-content/uploads/2016/02/1962728_519659818153222_1199506318_n.jpg[/int-img]
[int-qs]মানুষের জীবনটাও কি ফুটবল খেলার মতো যে জীবনে একটি গোল বা লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়া উচিত?[/int-qs]
[int-ans]প্রতিটি মানুষই স্বপ্ন দেখে। প্রতিটি মানুষেরই নিজস্ব কিছু আশা আছে, কিছু লক্ষ্য আছে। কেউ ডাক্তার হবে কেউ ইঞ্জিনিয়ার হবে কেউ মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হবে কেউ হয়তোবা পাইলট হবে। এই লক্ষ্যের অনেকটাই প্রভাবিত হয় পরিবার থেকে। তবে প্রতিটি মানুষই যে একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে এটিও বলা মুশকিল। মানুষ যত বড় হতে থাকে শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে মানসিক পরিবর্তনও ঘটতে থাকে। একটা বয়সে এসে সে বুঝতে পারে তার কি করা উচিত। এখানে অনেক সময় দেখা যায় জন্মের পর থেকেই পরিবারের একটি ইচ্ছা সন্তানের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়, এটা কখনোই উচিত না। [/int-ans]
[int-qs]প্রতিটি মানুষই স্বপ্ন দেখে। স্বপ্ন দেখা কি জরুরি? [/int-qs]
[int-ans]ঘুমের ভেতরের স্বপ্নগুলো কতটা কার্যকরী হয় সেটা আমি জানিনা তবে জেগে থেকে আমি যে স্বপ্নটা দেখি সেটি বাস্তবায়ন অনেক বেশি জরুরি। স্বপ্ন দেখুন এবং জেগে দেখুন। [/int-ans]
[int-qs]মানসিকভাবে অসুস্থ হয়েছেন কখনও?[/int-qs]
[int-ans]না, হইনি। তবে মানসিক বিষয়াবলী নিয়ে আমার আগ্রহ রয়েছে। শুধু মানসিকভাবে অসুস্থ হলেই নয়, মন যাতে অসুস্থ না হয় তার জন্যেই নিয়মিত মানসিক চর্চা জরুরি।[/int-ans]
[int-qs]ফুটবলার হিসেবে আপনার সাফল্যের গোপন রহস্য কী?[/int-qs]
[int-ans]প্রথম কথা হচ্ছে নিজেই নিজেকে মোটিভেট করতে হবে। আমি কি করব কোথায় যাব এইযে সারাদিনে কর্মকান্ডের একটি পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে। কঠোর পরিশ্রম আর কাজের প্রতি একাগ্রতা এসব থাকলে যে যেখানেই থাকুক সফলতা আসবেই।[/int-ans]
[int-qs]ফুটবলার না হলে কি হতেন?[/int-qs]
[int-ans]ফুটবলার না হলে কি হতাম সেভাবে ভাবার সুযোগ হয়নি। আমার বড়ভাই বাংলাদেশ লীগে খেলতেন, সেভাবেই আমার ফুটবলে আসা। তবে যেহেতু ছোটবেলা থেকেই একটা ডিসিপ্লিনের মধ্যে থাকতে পছন্দ করতাম, তাই আর্মির প্রতি একটা দূর্বলতা ছিল ছোটবেলা থেকেই। অনেক জায়গায় বলেও ফেলেছি, আমি যদি ফুটবলার না হতাম তাহলে হয়তো আর্মির অফিসার হতাম। [/int-ans]
[int-qs]আরেকবার ভালোবাসার সুযোগ পেলে কি করবেন?[/int-qs]
[int-ans]এখানে আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। অনেকে বলে জীবনে প্রেম ভালোবাসা একবারই আসে। কিন্তু আমি মনে করি মানুষের জীবনে প্রেম ভালোবাসা বারবার আসে। নিজের প্রতি ভালোবাসা, পরিবারের প্রতি ভালোবাসা, দেশের প্রতি ভালোবাসা, মানুষে প্রতি ভালোবাসা অথবা বিশেষ কারো প্রতি কোনো এক সময় ভালোবাসাবোধ জন্ম নিতে পারে। ভালোবাসা অবশ্যই একটি চমৎকার বিষয়, এই ভালোবাসা নিয়েই মানুষ এগিয়ে চলে। এই যে স্বপ্ন দেখা বা মানুষের ভালো কিছু করার লক্ষ্য যেকোনো ভালো কিছুর করার জন্যই আপনার ভালোবাসা প্রয়োজন। তবে আমাদের ধর্ম আমাদের সমাজ আমাদের যে সীমাবদ্ধতা তৈরি করে দিয়েছে তার বাইরে যাতে আমরা না যাই।[/int-ans]
[int-qs]মনের খবর পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন কি?[/int-qs]
[int-ans]হ্যাঁ, আমাদের জন্য এখন জরুরি হচ্ছে আত্মসমালোচনা। আমরা একে অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে যে বিভেদের দেয়াল তুলছি তা থেকে আত্মসমালোচনার মাধ্যমে বেড়িয়ে আসতে হবে। আমরা একই জাতি একই ভাষাভাষী তারপরও আমাদের মধ্যে যে ঐক্যের দূরত্ব তার একটি বড় কারণ পারষ্পরিক দোষারূপ। আজকে আমি যদি এর থেকে বেড়িয়ে আসি তাহলে আমার দেখাদেখি আমার সন্তানেরা শিখবে, আমার নিকটজনরা শিখবে। এভাবেই একদিন পরিবর্তন আসবে।[/int-ans]
[int-quote]মানুষ যত বড় হতে থাকে শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে মানসিক পরিবর্তনও ঘটতে থাকে। একটা বয়সে এসে সে বুঝতে পারে তার কি করা উচিত। এখানে অনেক সময় দেখা যায় জন্মের পর থেকেই পরিবারের একটি ইচ্ছা সন্তানের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়, এটা কখনোই উচিত না।[/int-quote]