সুস্থতা বজায় রাখার জন্য নিয়মিত এরোবিক অনুশীলনের কথা ১৯৬৮ সালে কেনেথ কুপার, এম ডি, তার বই ‘এরোবিকস’ বলেছেন। কুপার সেখানে বলেন, ‘আমরা বৃদ্ধ হই বলে শরীরচর্চা করা বন্ধ করে দেই না বরং আমরা শরীরচর্চা করা বন্ধ করে দেই বলেইন বৃদ্ধ হয়ে যাই’।
কুপার খুব ভালোভাবে ৫০ বছর আগে শারীরিক বিষয়ে সক্রিয় থাকার জন্য জীবন রক্ষা ও জীবন পরিবর্তনের কথা বলেছেন। কুপার নিজেই তার জীবন্ত উদাহরণ। ৮৭ বছর বয়সে এসেও তার শরীরে এবং মনে পড়েনি একটুকু বয়সের ছাপ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে নতুন গবেষণায় জানা যায় মানুষ মধ্যবয়সে এলেই একধরনের নিষ্ক্রিয়তা মানুষকে আকড়ে ধরে। মধ্যবয়সে আমরা হাটা চলার করার চেয়ে বসে থাকাকেই বেশি প্রাধান্য দেই।
‘আমেরিকান জার্নাল অফ এপিডেমিওলজি’ প্রকাশিত হয়েছে ‘Ten-Year Changes in Accelerometer-Based Physical Activity and Sedentary Time During Midlife: The CARDIA Study’ নামক এই গবেষণাটি। যেখানে প্রথমবারের মধ্যবয়সে কেন নিষ্ক্রিয়তা পেয়ে আমাদের বসে তার খুঁটিনাটি বিবরণ দেওয়া হয়েছে। আর এ গবেষণাটি করতে প্রায় এক দশক সময় লেগেছে।
দশ বছরব্যাপী এই গবেষণায়, ৩৮-৫০ বছরের মধ্যকার গবেষণায় অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে গড়ে প্রতিদিন ৩০ মিনিটের মত শারীরিক সক্রিয়তার পরিমাণ কমে গেছে। একই সঙ্গে গড়ে ৪০ মিনিট করে সেডেন্টারি (উপবিষ্ট) সময় বৃদ্ধি পেয়েছে। সক্রিয়তার এই পরিবর্তন নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে একই হারে দেখা গেছে। গবেষকদের মতে, এই প্রথমবারের মত শারীরিক ক্রিয়ার তারতম্যের প্রবলতা ও পরিমাণ পরীক্ষা করা হয়েছে।
এই গবেষণার জন্য ইউনির্ভাসিটি অফ টেক্সাস হেলথ সায়েন্স সেন্টারের গবেষকরা ‘করোনারি আরটারি রিস্ক ডেভেলপমেন্ট ইন ইয়াং এডাল্টস’ গবেষণার বৃহৎ আকারের তথ্য ব্যবহার করেছেন। এই গবেষণা শুরু হয়েছিল ৩০ বছর আগে ৫,১১৫ জন অংশগ্রহনকারীর এক্সিলোমিটার ব্যবহারের মাধ্যমে। সম্প্রতি গবেষকগন ১০ বছর পর আবার এই অংশগ্রহনকারীদের খোজ নেয় যাদের বর্তমান বয়স ৪৮-৬০।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সিডিসি নির্দেশিকা দীর্ঘমেয়াদী অবস্থানকে নিরুতসাহিত করে। তারা পরামর্শ দেয় প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিটের মত শারীরিক ক্রিয়ার করার। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৭৫ মিনিটের জন্য তেজস্বী এরোবিক অনুশীলন অথবা এই দুটির সমকক্ষের অন্য কোনো শারীরিক ক্রিয়া মাঝারি থেকে তীব্রতার করার কথা বলেন।
লেখক গ্যাব্রিয়েল বলেন, ‘দৈনন্দিন জীবনে ছোটখাটো পরিবর্তন ও শারীরিক ক্রিয়ার যেকোনো সুযোগকে কাজে লাগানো, বৃদ্ধ বয়সে একজন ব্যক্তি কতটা প্রানবন্ত থাকবে, তার ক্ষেত্রে একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ছোটখাটো পরিবর্তন গুলোও প্রভাব ফেলে। যেমন কোনার কফি শপটায় হেটে যাওয়া, স্টোরের প্রবেশ পথ থেকে দূরে পার্ক করা কিংবা এস্কেলেটরের বদলে সিড়ি ব্যবহার করা।’
তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে।
অনুবাদটি করেছেন মাঈশা তাহসিন অর্থী।