বিকৃত যৌন আচরন থেকে মুক্তির উপায় কি?

প্রশ্ন: পঞ্চম শ্রেণীর পরীক্ষা শেষে গ্রাম ছেড়ে শহরে আসি পড়াশোনার জন্য। এসে এক খালার বাসায় উঠি। সমবয়সী এক খালাতো ভাইয়ের সাথে রাতে ঘুমাতে হতো। প্রায় রাতেই সে আমাকে খারাপভাবে স্পর্শ করতো। বয়স কম থাকায় বিষয়টি গুরুত্ব দেইনি। পরে বিষয়টি আমাকে নানা যন্ত্রণা দিয়েছে। অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া অবস্থায় হস্তমৈথুন করি। তখন নানা অদ্ভুত বিষয় আমার মাথায় আসতো। ক্রমেই আমি একটি অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে বসবাস করতে থাকি। বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করি। কিন্তু সম্ভব হয়নি। এক দুঃসহ জীবন যাপন করতে হচ্ছে আমার। এই অবস্থা থেকে কীভাবে মুক্তি পেতে পারি।
উত্তর: আপনার কথা থেকে ধারনা করা যায়, আপনি অবসেসিভ-কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার সংক্ষেপে ওসিডি রোগে ভুগছেন। বাংলায় একে বলা হয় চিন্তাবাতিক ও বাধ্যতাধর্মী আচরন রোগ। যাকে আগে শুচিবাই বলা হতো। এই রোগের ফলে একই ধরনের চিন্তা বা মানসিক তাগাদা বা একটি ছবি মনের মধ্যে বারবার আসতে থাকে। যা লোকটি নিজেও জানেন যে এটা অহেতুক। কিন্তু না চাইলেও তা আসতে থাকে। চেষ্টা করেও তা বন্ধ করা যায়না। ফলে ভয়ানক মানসিক অশান্তি সৃষ্টি হয়। আর লোকটি বিভিন্ন ধরনের আচরন করে এটি বন্ধ করার জন্য। যেমনঃ বারবার ময়লা বা অপবিত্রতার চিন্তা আসা বন্ধ করার জন্য বারবার কাপড় ধোয়া, গুনেগুনে কাজ করা, বারবার খোঁজ করে দেখা প্রভৃতি। বর্তমানে আপনার রোগের মাত্রা তীব্র হিসেবে ধরা যায়। যেহেতু আপনি আত্মহত্যার চিন্তা পর্যন্ত এসেছেন। তাই আর দেরি না করে দ্রুত নিকটস্থ মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞর ( সাইকিয়াট্রিস্ট ) সাথে দেখা করুন। নিয়মিত চিকিৎসা করুন সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবেন। ধন্যবাদ।
ডা. পঞ্চনন আচার্য্য

Previous articleবিইসিপিএস এর প্রথম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
Next articleটাকায় নাকি সুখ কেনা যায়
ডা. পঞ্চানন আচার্য্য। স্থায়ী ঠিকানা চট্টগ্রাম। তবে, কলেজ শিক্ষক মায়ের চাকুরিসূত্রে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কেটেছে শৈশব। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবং উচ্চ-মাধ্যমিক চট্টগ্রাম কলেজ থেকে। সিলেট এম. এ. জি. ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম.বি.বি.এস পাসের পর সরকারি চাকুরিতে যোগদান করেন। মেডিক্যালে পড়ার সময় থেকেই মনোরোগ নিয়ে পড়ার প্রতি আগ্রহ। তাই, ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্ধারিত সময়ের চাকুরি শেষে ভর্তি হন মনোরোগবিদ্যায় এম.ডি(রেসিডেন্সি) কোর্সে। বর্তমানে তিনি একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। বংশপরম্পরায় প্রাপ্ত শিক্ষকতার ধারা বজায় রেখে চিকিৎসক ও শিক্ষক হওয়াটাই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। বই, সঙ্গীত আর লেখালেখিতেই কাটে অবসর সময়ের বেশির ভাগ। স্বপ্ন দেখেন - মেধা ও মননশীলতার চর্চায় অগ্রগামী একটা বাংলাদেশের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here