পরীক্ষা যখন আমাদের দরজায় কড়া নাড়ে, তখন আমরা সবাই পরীক্ষা সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে গভীরভাবে ভাবনা-চিন্তা শুরু করি। এই পরিস্থিতিতে আমাদের স্নায়ুগুলির স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখা যায় এবং এই প্রতিক্রিয়ার ফলে আমরা পরীক্ষা সম্বন্ধে অত্যন্ত সতর্ক হয়ে উঠি, যা আমাদের পক্ষে সেই সময়ে একান্ত জরুরি বিষয় হিসেবে গণ্য হয়। কিন্তু পরীক্ষা নিয়ে আমাদের মধ্যে যেরকম মানসিক উদ্বেগ দেখা যায়, তা যদি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায়, তখন তা আমরা কীভাবে সামাল দেব? মানুষ যখন কোনও বিষয় নিয়ে গভীর চিন্তায় ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে, তখন নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই কেন তার দৈনন্দিন জীবনযাপনের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ছন্দ হারিয়ে যায়? যখন মানসিক উদ্বেগ কোনও মানুষের দৈনন্দিন কাজ করার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়, তখন সেই মানুষটি মানসিক উদ্বেগজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে করা হয়। এই অবস্থায় সেই ব্যক্তির একজন মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞের সাহায্য একান্ত জরুরি।
এই ক্ষেত্রে একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, মনের উদ্বিগ্নতা এমন একটি মানসিক সমস্যা, যা দীর্ঘ সময়ে ধরে মানুষকে কষ্ট দেয় এবং এই ধরনের গভীর চিন্তাভাবনার পিছনে কোনও আপাত কারণ থাকে না।
লক্ষণ—
চিন্তা করা মানুষের স্বাভাবিক অনুভূতিগুলির মধ্যে একটি। তাই প্রাথমিকভাবে এই বিষয়টি নিয়ে মানুষ তেমনভাবে বিপদের সম্ভাবনা টের পায় না। কিন্তু যখন এই ধরনের চিন্তা করার প্রবণতা বহুদিন ধরে চলতে থাকে এবং এর ফলে মানুষের স্নায়বিক দুর্বলতা প্রকাশ পায়, তখন বিষয়টি নিয়ে মানুষের টনক নড়ে। মানসিক উদ্বেগের লক্ষণগুলি সাধারণত তখনই দেখা দেয়, যখন মানুষ উদ্বিগ্নতাজনিত কারণে প্রবল মানসিক এবং শারীরিক যন্ত্রণা ভোগ করতে শুরু করে। সেগুলি হল—
- হৃদস্পন্দনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়
- বুকে একপ্রকার চাপ অনুভূত হয়
- বুক ধড়ফড় করা ও শরীরে কাঁপুনি শুরু হয়
- মনের মধ্যে লাগামহীন চিন্তাভাবনার জন্ম হয়
যদি আমাদের পরিচিত কোনও মানুষের মধ্যে এই ধরনের লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে তাকে মানসিক উদ্বেগজনিত সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করে, অবিলম্বে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন।
পরীক্ষার সময়ে হওয়া মানসিক উদ্বেগ
ছাত্রজীবনে পরীক্ষা আমাদের মনে প্রভূত চাপের সৃষ্টি করে। পরীক্ষার ফলাফল সংক্রান্ত প্রত্যাশা এবং কঠিন প্রতিযোগিতার কারণে আমাদের মনের চাপ ক্রমশ বেড়ে চলে।