Close Menu
    What's Hot

    BACAMH – এর সদস্যপদ নবায়ন শুরু: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবায়ন সম্পন্নের আহ্বান

    চিকিৎসকদের মতে, দেশের স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্য এখনো উপেক্ষিত

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

    লক্ষ্য নির্ধারন নিয়ে মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিনের জুলাই সংখ্যা ২০২৫

    মানসিক রোগ নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে এটাই বড় অর্জন — ডা. আহমদ রিয়াদ চৌধুরী

    Facebook X (Twitter) Instagram
    Friday, November 28
    Facebook X (Twitter) Instagram
    মনের খবরমনের খবর
    ENGLISH
    • মূল পাতা
    • কার্যক্রম
      1. জাতীয়
      2. আন্তর্জাতিক
      Featured
      কার্যক্রম November 20, 2025

      BACAMH – এর সদস্যপদ নবায়ন শুরু: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবায়ন সম্পন্নের আহ্বান

      Recent

      BACAMH – এর সদস্যপদ নবায়ন শুরু: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবায়ন সম্পন্নের আহ্বান

      চিকিৎসকদের মতে, দেশের স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্য এখনো উপেক্ষিত

      মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

    • প্রতিদিনের চিঠি
    • মানসিক স্বাস্থ্য
      1. মাদকাসক্তি
      2. মানসিক স্বাস্থ্য সেবা তথ্য
      3. যৌন স্বাস্থ্য
      4. শিশু কিশোর
      Featured
      ফিচার October 7, 2024

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      Recent

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে শেখাবেন

      কর্মব্যস্ততা প্রভাব ফেলে যৌনজীবনে

    • ফিচার
    • প্রশ্ন-উত্তর
      1. বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
      2. মাদকাসক্তি
      3. মানসিক স্বাস্থ্য
      4. যৌন স্বাস্থ্য
      Featured
      প্রশ্ন-উত্তর August 7, 2025

      অতিরিক্ত চিন্তা আমার পড়ালেখার হ্যাম্পার করছে

      Recent

      অতিরিক্ত চিন্তা আমার পড়ালেখার হ্যাম্পার করছে

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      বর্তমানে খুব ভয়াবহ সমস্যায় ভুগছি, কী করবো বুঝতে পারছিনা

    • জীবনাচরণ
      1. অন্যান্য
      2. অপরাধ আচরণ
      3. কুসংস্কার
      4. মতামত
      5. মন ও ক্রীড়া
      6. মন প্রতিদিন
      7. মনোসামাজিক বিশ্লেষণ
      8. সাক্ষাৎকার
      Featured
      সাক্ষাৎকার November 5, 2025

      মানসিক রোগ নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে এটাই বড় অর্জন — ডা. আহমদ রিয়াদ চৌধুরী

      Recent

      মানসিক রোগ নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে এটাই বড় অর্জন — ডা. আহমদ রিয়াদ চৌধুরী

      বর্তমানেও অনেকেই মানসিক রোগকে লজ্জার বিষয় মনে করেন — ডা. মো. শাহেদুল ইসলাম

      পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি ও বিরক্ত কাজ করছে

    • মনস্তত্ত্ব.
      1. তারকার মন
      2. ব্যাক্তিত্ব
      3. মনস্তত্ত্ব
      Featured
      তারকার মন August 5, 2023

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      Recent

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      প্রসঙ্গ : সাইক্লোথাইমিক ব্যক্তিত্ব

      কার্ল সেগান : যিনি বিশ্বাস করতেন মহাবিশ্ব একটি মমতাপূর্ণ জায়গা

    • করোনায় মনের সুরক্ষা
      1. টিপস্
      2. বিশেষজ্ঞের মতামত
      3. বিশ্ব পরিস্থিতি
      4. সার্বক্ষনিক যোগাযোগ
      Featured
      টিপস্ September 28, 2024

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      Recent

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      প্রবাসীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় MK4C-তে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার পরামর্শ

      পরিবার যেভাবে শিশুকে গড়ে তুলবে

    মনের খবরমনের খবর
    You are at:Home » নতুন জীবনের গান
    ফিচার

    নতুন জীবনের গান

    ডা. পঞ্চানন আচার্য্যBy ডা. পঞ্চানন আচার্য্যMarch 24, 2021Updated:March 24, 2021No Comments9 Mins Read0 Views
    Facebook Twitter Pinterest Telegram LinkedIn Tumblr Email Reddit
    নতুন জীবনের গান
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp Email

    শূন্য চোখে জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছেন ফরিদ সাহেব। ইটের এই শহরে চোখের দৃষ্টি কিছু দূরের দাঁড়িয়ে থাকা দালানের দেয়ালে আঘাত খেয়েই ফিরে আসে। কিছুটা সাধ্য-সাধনা করলে বারান্দার সামনে ফাঁক গলে দেখা যায় এক চিলতে আকাশ। নিঃসঙ্গ। আসলেই কি তাই? আকাশ কি নিঃসঙ্গ? ফরিদ সাহেব ভাবেন। নিজের নিঃসঙ্গতা দিয়েই কি আকাশকেও ভরিয়ে তুলছেন। শরীর হারিয়েছে শক্তি, চোখ হারিয়েছে আগের প্রখর দৃষ্টি, কানেও কিছুটা কম শোনেন। অর্থনৈতিকভাবে পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ায় সন্তানেরাও তাঁর কথা কম শোনে, কম মানে। বারবার একই কথা বলতে গিয়ে এখন তিনি সবার কাছে ‘খিটখিটে বুেড়া’। নাতি-নাতনিরাও আগের মতো আর কাছে আসে না। আর তাই ছেলের সংসারে সবার মাঝে থেকেও তিনি একলা। জীবন যদি গানে গানে ভরে থাকত তবে তিনিও হয়ত রবীন্দ্রনাথের মতো আকাশটাকে গানে ভরিয়ে দিতেন।

    সারাদিন ধরেই কাজ করে যান শাহানা; ফরিদ সাহেবের বড় ছেলের বৌ। শাহানা কোনো চাকরি করেন না। এই কারণেই ফরিদ সাহেবের থাকার বন্দোবস্ত এই ঘরে। অন্য বউরা চাকরি করে, তাই তাদের সময় নেই একজন বৃদ্ধ মানুষের দেখভাল করার। কারো দায়িত্ব নিতে, দেখভাল করতে শাহানার তেমন আপত্তি ছিল না, বিশেষত নিজের শ্বশুরের ক্ষেত্রে। কিন্তু সবার এই যুক্তি দেখিয়ে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলার প্রবণতাটাই তাঁকে অসন্তুষ্ট করে তোলে। গৃহিণী বলে কি তাঁর কোনো ব্যস্ততা নেই? একজন ‘ছুটা বুয়া’ রেখেই তাঁর স্বামী কালাম সাহেবের যাবতীয় দায়িত্ব শেষ! সংসারের আর কোনো সদস্যই তাঁকে তেমন একটা সাহায্য করে না। এমনকি মেয়েটাও কাজের কথা বললে ঝগড়া করে। বাবাও তখন মেয়ের পক্ষ নেয় আদর করে। পারিবারিক কোনো সিদ্ধান্তে তাঁর কথার খুব একটা গুরুত্ব যে সবসময় থাকে তা-ও না। কারণ, তিনি গৃহিণী, তিনি আর কতটুকুই বা বুঝবেন, জানবেন। তাঁর চেয়ে বছরে একবার দু-বার বেড়াতে আসা তাঁর জা-রাও বেশি গুরুত্ব পায়। তাঁর দেবররা বেড়াতে এলে তাদের জীবনে শাহানার অবদানের কথা, সাংসারিক ক্ষেত্রে তাঁর দক্ষতার কথা প্রায়শই বলে। সেটা কিছুটা তাদের বউদের শেখানোর জন্য হলেও কথার পেছনে আন্তরিকতাটাও থাকে।

    এত কিছুর মাঝে এটাই একমাত্র প্রাপ্তি বলে মনে হয় তাঁর। কিন্তু ইদানীং আর ভালো লাগে না। সবকিছু বোঝা বলে মনে হয়। তার ওপর ফরিদ সাহেবের খিটখিটে আচরণ আর অন্যান্য উপদ্রব দিনে দিনেই বেড়ে চলেছে। জীবনটা কেমন যেন একঘেয়ে লাগে।

    দুপুরের একটু পরে বাসায় ফেরে রাফসান। কালাম-শাহানার ছেলে। সেই সকালে মা টেনে হিচঁড়ে ঘুম থেকে তুেল সকাল সাতটার মধ্যে স্কুলে পাঠায় তাকে। ঘুম ঘুম চোখে স্কুলে পৌঁছে টানা বারোটা পর্যন্ত একের পর এক ক্লাস, পড়া দেওয়া; অংক-বিজ্ঞান-সমাজ ইতিহাস-বাংলা-ইংরেজিসহ এগারোটা বিষয়। এর মধ্যেই আবার একটু ড্রয়িং। বারোটায় বের হলেও বাসায় পৌছঁতে পৌছঁতে বাজে দেড়টা বা দইুটা। প্রতিদিন লোকাল বাসে আসা যাওয়া এক বিশাল ঝামেলা। বাসায় এসেও শান্তি নেই। খেয়েদেয়ে টিভিটা বা মোবাইলটা নিয়ে বসলেই মা চিল্লাচিল্লি করে। প্রতিদিন তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত কোচিং। সেটা শেষ করে আসলে পাঁচটা থেকে ছয়টা আরবি শিক্ষার জন্য হুজুরের কাছে বসতে হয়। উনি গেলে গৃহশিক্ষকের আগমন। সাড়ে ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত অংক, ইংরেজি, বিজ্ঞান তিনটা বিষয় পড়তে হয় তাঁর কাছে। একসঙ্গে কেউই এখন এতগুলো বিষয় পড়াতে রাজি হয় না। তাই অনেক অনুরোধ আর বেশি করে টাকা দিয়ে গৃহশিক্ষককে রাজি করানো হয়েছে। আর এটার জন্য রাফসানের সুখ হারাম হয়ে গেছে। চলতে ফিরতে, একটু পড়তে না চাইলেই বাবা-মা নিয়ম করে শুনিয়ে দেয় তার পেছনে খরচের কথা। বাইরে খেলার কোনো জায়গা নেই আশপাশে। থাকলেও কী, সময় কই? তাই যা কিছু বিনোদন ঐ টিভি আর মোবাইল গেইম।

    বিকেলের দিকে ভার্সিটি থেকে ফেরে রাইসা। প্রথম বর্ষের শেষের দিকে এখন সে। অনেক পিছিয়ে আছে অন্যদের থেকে। কারণ ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার কোনো ইচ্ছে তার ছিল না। প্রথম ও একমাত্র পছন্দ ছিল ডাক্তারি পড়া। দিনে-রাতে, শয়নে-স্বপনে একটাই চিন্তা ছিল-ডাক্তারি পড়বে। স্বপ্নটা ধীরে ধীরে এমন অবস্থায় চলে গিয়েছিল যে, সে ধরেই নিয়েছিল নিশ্চিত সুযোগ পেতে যাচ্ছে ডাক্তারি পড়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘসূত্রিতার সুযোগে এর মধ্যে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিয়েছে মেডিক্যালে ভর্তির জন্য। সুযোগ পায়নি। এদিকে ক্লাস ও অন্যান্য কর্মকান্ড নিয়মিত না করাতে বিশ্ববিদ্যালয়েও পিছিয়ে গেছে প্রায় ছয় মাসের মতো। বাবাকে অনেক করে বলেছিল বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে হলেও ভর্তি করে দিতে। কিন্তু ওর বাবা মানে কালাম সাহেব রাজি হননি। আর তাই বাধ্য হয়ে পড়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। যদিও তার বিষয়টা অনেকের কাছে লোভনীয়, কিন্তু সে এখনো তাতে কোনো আগ্রহ পাচ্ছে না। তবে বন্ধবুান্ধবদের সাহচর্য কিছুটা সহনীয় করে  ‍তুলছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়ে রাইসা। উঠবে সাতটার দিকে। পড়া হোক বা না হোক ঘুমাতে ঘুমাতে সেই রাত একটা থেকে দুইটা। সকালে আবার তাড়াতাড়ি বেরোতে হয় ভার্সিটির বাস ধরতে। ওটা মিস করলে লোকাল বাসে চড়তে হবে এই চিন্তাতেই সকালে উঠে পড়ে যেকোনো ভাবে। কিন্তু শরীর তো বিশ্রাম চায়। তাই এই সন্ধ্যার ঘুম। তবে এই ঘুম যে তার সব কাজে অসুবিধা করছে এখনো তা বুঝে উঠতে পারেনি রাইসা।

    সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত গড়াতে শুরু করলে কালাম সাহেবের ঘরে ফেরার সময় হয়। অফিসের কাজের চাপ, সহকর্মীদের রেষারেষি, চাকরিতে বঞ্চনা, অনিশ্চয়তা সব মাথায় করে নিয়েই ঢোকেন বাসায়। মেজাজ কিছুটা খিটখিটেই থাকে। সেই সঙ্গে গহৃকর্তাসুলভ গম্ভীরতা। ভয়ে ছেলে রাফসান দূরে দূরে থাকে। ফরিদ সাহেব তো দেখাই করেন না বিরক্ত হয়ে। শাহানাও পারতপক্ষে ঘাটায় না, অন্তত ভাতের টেবিল ছেড়ে ওঠা পর্যন্ত। তবে রাইসাই একমাত্র ব্যতিক্রম। মেয়েকে খুব ভালবাসেন কালাম সাহেব। তাই মেয়ের সাত খুন মাপ। অবশ্য ভাত শেষে মুখে পানটা পুরলেই অন্যদের জন্যও মনটা কিছুটা নরম হয় কালাম সাহেবের। এই পান খাওয়া আর কিছুক্ষণ টেলিভিশন দেখাটাই তাঁর সারাদিনের ভারমুক্তির উপায়। এরপরেই বিছানায় গা এলিয়ে দেন।

    শাহানা সবকিছু সেরে শোয়ার ঘরে ঢোকার সময় অধিকাংশ দিনেই ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। ঘুম থেকে তাঁকে আর জাগান না শাহানা। সারাদিনের কথা, আবেগ, অনুভূতি বুকে চেপে রেখে ঘুমোতে যান শাহানাও। অনেক দেরিতে এপাশ ওপাশ করতে করতে একসময় তিনিও ঘুমিয়ে পড়েন। দিনের পর দিন জমতে থাকা এইসব কথা, অনুভূতি পাহাড় হয়ে জমতেই থাকে। কিন্তু আজ রাতটা একটু ব্যতিক্রম হয়ে উঠল। আসলে বেশ কয়েকদিন আগে নতুন ইংরেজি বছরকে সামনে রেখে রাইসা চেয়েছিল প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের নিয়ে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপভোগ করবে। খাবার টেবিলে কথাটা উঠতেই ফরিদ সাহেব বলে দিলেন এসব করা যাবে না, ধর্মমতে এগুলো নিষিদ্ধ এবং আমাদের সংস্কৃিতর সঙ্গেও এগুলো যায় না। কালাম সাহেবও না বললেন। তবে তাঁর যুক্তি মেয়েদের নিরাপত্তাহীনতা এবং সর্বগ্রাসী সামাজিক অবক্ষয়ের। যথারীতি রাইসা মন থেকে মেনে নিতে পারল না। তবুু  দ-ুএকদিন জোরাজুির করে শেষ পর্যন্ত মন খারাপ করে হাল ছেড়ে দিল। মেয়ের মন খারাপ দেখে কালাম সাহেবের মনেও কিছু চিন্তার উদয় হলো। তারই ফলে আজকে রাতে ভাত খাওয়ার পর সবাইকে নিয়ে বৈঠক খানায় বসলেন। সবাই একটু অবাক হয়ে এসে বসল, বিশেষত শাহানা। কারণ তাড়াতাড়ি বসার উদ্দেশ্যে কালাম সাহেব অনেক অনেক বছর পর রান্নাঘরে ঢুকে থালাবাসন ধুয়ে এসেছেন। প্রথম প্রথম যখন সংসার করছিলেন শাহানা ও কালাম সাহেব এই কাজটা তখন কালাম সাহেব নিয়মিতই করতেন। আজ আবার তা করতে দেখে শাহানা বুঝতে পারছিলেন কিছু একটা হয়েছে। কিন্তু সেটা কী তা জানতেই উৎকণ্ঠা নিয়েই বসলেন সবার সাথে। শুরুতেই কালাম সাহেব সবাইকে একটা করে ছোট ফুলের তোড়া দিয়ে হ্যাপি নিউ ইয়ার জানালেন।

    ফরিদ সাহেব কিছু একটা বলতে গেলেই কালাম সাহেব শুরু করলেন তাঁর বক্তব্য। তাঁর বক্তব্যের সার সংক্ষেপ অনেকটাই ছিল এরকম- আমি এমন কোনো তর্কে যাব না যে, নিউ ইয়ার পালন করা উচিত কী অনুিচত। এটা উদ্যাপন করা নিয়ে আমার মেয়ে রাইসার মন খারাপ হওয়াতে আমারও কষ্ট হচ্ছিল। তখনই হঠাৎ করে বেশ কিছু বিষয় খেয়াল করলাম যেগুলো আমি কয়েকদিন ধরেই দেখছি আর ভাবছি। আমি যা দেখলাম, প্রথমত আমরা সবাই একসঙ্গে থেকেও অনেকটা বিচ্ছিন্ন। এটা অনেক কারণেই হচ্ছে, যেগুলোর দোষ বা গুণ নিয়ে আমি কিছু বলব না। আমি শুধু বলতে চাই বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে- আমরা একসাথে থেকেও অনেকটা বিচ্ছিন্ন। এর অন্যতম প্রধান কারণ আমাদের ব্যস্ততা, যা দিনকে দিন বাড়ছে। ফলে একান্ত সময়ের খুব অভাব হয়ে যাচ্ছে। আর তাই আমরা বাসায় সবাই একসঙ্গে থাকি খবুই কম সময়। সে সময়টাও সারাদিনের ঝক্কি-ঝামেলাসহ বিভিন্ন কারণে ক্লান্ত হয়ে থাকি। ফলে দ-ুদন্ড মন খুলে কথা বলার সময় হয় না। যেমন আমি প্রায়ই আগে এসে শুয়ে পড়ি। আবার নিজেদের তৈরি অনেক অহেতকু অভ্যাস বা নিয়মের কারণেও আমরা কাছাকাছি হতে পারি না। যেমন : আমি রাফসানের সাথে মন খুলে কথা বলি না ছেলে মাথায় উঠে যাবে বলে। অথচ কতবার ভেবেছি ছেলেটাকে একটু আদর করে বুকে জড়িয়ে ধরি। রাফসানও হয়ত চায়, কিন্তু পারে না। একই বিষয় আমি আমার বাবার সাথেও পারিনি। আর তাই, এখনো শ্রদ্ধা সম্মান করলেও বাবা এবং আমি স্বাভাবিক হতে পারি না। এতে হয়ত বাবা এখন কষ্ট পান, নিজেকে একলা ভাবেন। এই একাকিত্বের বীজ হয়ত আমিও এতদিন পুঁতে রেখেছিলাম। যা আজ তুেল ফেলতে চাইছি। আমি টেলিভিশন দেখে বিনোদিত হতে চাই, সময় কাটাতে চাই। কিন্তু ওদিকে আমার সুখ-দুঃখের দিকে সবসময় খেয়াল রাখে যেই মানুষটা তার তখন বাধ্য হয়ে একা একা রান্নাঘরে থালাবাসন ধুতে হচ্ছে।

    একইভাবে, আমার বাবার দিন কাটছে নিজেকে তুচ্ছ মনে করে, অকর্মণ্য মনে করে। কারণ তাঁর বয়স হয়েছে, মানে সব শেষ হয়ে গেছে, এখন শুধু মৃত্যৃুর প্রতীক্ষা। কিন্তু কেন? তিনি কি এখন নিজের পছন্দমতো বই পড়তে পারেন না, সমবয়সী অন্যদের সাথে হাঁটতে বের হতে পারেন না বা ঘরের মধ্যে হলেও ছোট্ট একটা বাগান করতে পারেন না? আমার ছেলেমেয়েকে নিজের অর্জিত অভিজ্ঞতা, মতাদর্শ ভাগ করে দিতে পারেন না? প্রজন্মের পার্থক্যটা মেনে নিয়ে তাদের মতো করে এসব বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করতে পারেন না? আমার ছেলেরও সময় নেই। সারাদিন পড়া আর পড়া। সেইসঙ্গে বন্ধের দিনগুলোতে নাচ, গান, আবৃত্তি, সাঁতার, আঁকার স্কুল আরো কত কী মিলিয়ে সর্ববিদ্যাবিশারদ করে তোলার চেষ্টা কেন! এই কাজগুলোই তো সারা সপ্তাহজুড়ে মনের আনন্দে করার কথা। কেন এত ভালো রেজাল্টের পেছনে ছোটাছুটি? ভালো রেজাল্ট করলেও কি সবাই ভালো ভালো জায়গায় পড়ার সুযোগ পাবে? এখানেও প্রশ্ন উঠতে পারে, কেন পাবে না অথবা কেন সবাইকে শুধু গৎবাঁধা কয়েকটা বিষয়ের পেছনেই ছুটতে হবে? এই যে রাইসা মাইক্রোবায়োলজিতে পড়ার সুযোগ পেল, কেন সে ডাক্তারি পড়ার জন্য জীবন থেকে দুই বছরের মতো সময় নষ্ট করবে?

    জানি তোমরা এসবের পেছনে বলবে এই কারণ, ঐ কারণ, হাজার হাজার কারণ। সবই মানলাম। কিন্তু কারণ থাকবে বলে তো আর ভুলটা শুদ্ধ হয়ে যাবে না! অথবা আমাদের থেমে থাকাও চলবে না। যেমন : শাহানা কত সুন্দর গান গাইত একসময়। আমি হলফ করে বলতে পারি, সে নিজেও ভুলে গেছে, শেষ কবে গুনগুন করে হলেও সে একটা গান গেয়েছে। কেন এটা হবে? রান্না করতে করতেও তো গুনগুন করা যায়। এটা করতেও কি খুব বেশি কিছু করতে হয়? এক কথায় আমি বলব, আমাদের ইচ্ছেরা মরে যাচ্ছে। আমরা স্রোতের সাথে ভেসে যাচ্ছি শুুধু ভাবছি-এটাই সার্থকতা অথবা এটাই বাস্তবতা, এটাকেই মেনে নিতে হবে।

    দীর্ঘ ভাষণে ইতি টানলেন কালাম সাহেব এই বলে যে, সমস্যা আছে অনেক, থাকবেও আজীবন। এর মধ্যেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, আমাদের মতো করে। কারণ জীবনের প্রতিটা মহুর্তূ মল্যূবান। একে কোনো কারণেই নষ্ট হতে দেয়া ঠিক না। আর উচিত-অনুচিত জানি না, শুধু এইভাবে দেখতে চাই, যদি একটা দিনকে কেন্দ্র করে আমরা আমাদের নিজেদের কিছটুা কাছাকাছি আসতে পারি তবে মন্দ কী? অতএব আজ আমরা নতুন বছরের শুরুতে আবার নতুন করে শুরু করব, আমাদের ভুলগুলো শুধরে নিয়ে আর শাহানার একটা গান দিয়ে। অনেকদিন পর শাহানা আবার গান ধরেন। নতুন জীবনের গান।

    সূত্র: লেখাটি মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত।

    স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
    করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
    মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

    https://youtu.be/WEgGpIiV6V8

     

    গান জীবন
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Reddit WhatsApp Telegram Email
    Previous Articleমানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিলেন প্রিন্স হ্যারি
    Next Article বিভাগীয় প্রধানসহ ঢামেকের মানসিক রোগ বিভাগের চারজন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত
    ডা. পঞ্চানন আচার্য্য

    ডা. পঞ্চানন আচার্য্য। স্থায়ী ঠিকানা চট্টগ্রাম। তবে, কলেজ শিক্ষক মায়ের চাকুরিসূত্রে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কেটেছে শৈশব। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবং উচ্চ-মাধ্যমিক চট্টগ্রাম কলেজ থেকে। সিলেট এম. এ. জি. ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম.বি.বি.এস পাসের পর সরকারি চাকুরিতে যোগদান করেন। মেডিক্যালে পড়ার সময় থেকেই মনোরোগ নিয়ে পড়ার প্রতি আগ্রহ। তাই, ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্ধারিত সময়ের চাকুরি শেষে ভর্তি হন মনোরোগবিদ্যায় এম.ডি(রেসিডেন্সি) কোর্সে। বর্তমানে তিনি একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। বংশপরম্পরায় প্রাপ্ত শিক্ষকতার ধারা বজায় রেখে চিকিৎসক ও শিক্ষক হওয়াটাই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। বই, সঙ্গীত আর লেখালেখিতেই কাটে অবসর সময়ের বেশির ভাগ। স্বপ্ন দেখেন - মেধা ও মননশীলতার চর্চায় অগ্রগামী একটা বাংলাদেশের।

    Related Posts

    অলসতা কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে

    October 19, 2025

    ভুতে ধরা নাকি মানসিক রোগ?

    October 4, 2025

    কবরস্থানের নির্জনতা থেকে শহরের চৌরাস্তার কোলাহল: মানসিক রোগীর রহস্যপূর্ণ আচরণ

    September 27, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    Top Posts

    অতিরিক্তি হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায়

    July 25, 2021316 Views

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    June 30, 2025300 Views

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025209 Views

    পর্নোগ্রাফি থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ দূরে রাখবেন যেভাবে

    March 13, 2022118 Views
    Don't Miss
    কার্যক্রম November 20, 2025

    BACAMH – এর সদস্যপদ নবায়ন শুরু: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবায়ন সম্পন্নের আহ্বান

    বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট মেন্টাল হেলথ BACAMH সদস্যপদ নবায়ন শুরু । ২০২৫ সালের…

    চিকিৎসকদের মতে, দেশের স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্য এখনো উপেক্ষিত

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

    লক্ষ্য নির্ধারন নিয়ে মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিনের জুলাই সংখ্যা ২০২৫

    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    প্রকাশক ও সম্পাদক:
    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
    মোবাইল : (+88) 018-65466594, (+88) 014-07497696
    ইমেইল : info@monerkhabor.com

    লিংক
    • মাসিক ম্যাগাজিন প্রাপ্তিস্থান
    • কনফারেন্স-সেমিনার-ওয়ার্কশপ
    • প্রেজেন্টেশন
    • জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
    রিসোর্স
    • পরিচালনা পর্ষদ
    • মানসিক বিষয়ে সংগঠন
    • বিশেষজ্ঞ লোকবল
    • নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
    সোশ্যাল মিডিয়া
    • Facebook
    • YouTube
    • LinkedIn
    • WhatsApp
    © 2025 মনেরখবর সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
    • গোপনীয়তা নীতি

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Ad Blocker Enabled!
    Ad Blocker Enabled!
    Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please support us by disabling your Ad Blocker.