Close Menu
    What's Hot

    সাইকিয়াট্রি বিভাগের ডিসেম্বর মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

    BACAMH – এর সদস্যপদ নবায়ন শুরু: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবায়ন সম্পন্নের আহ্বান

    চিকিৎসকদের মতে, দেশের স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্য এখনো উপেক্ষিত

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

    লক্ষ্য নির্ধারন নিয়ে মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিনের জুলাই সংখ্যা ২০২৫

    Facebook X (Twitter) Instagram
    Tuesday, December 2
    Facebook X (Twitter) Instagram
    মনের খবরমনের খবর
    ENGLISH
    • মূল পাতা
    • কার্যক্রম
      1. জাতীয়
      2. আন্তর্জাতিক
      Featured
      কার্যক্রম December 1, 2025

      সাইকিয়াট্রি বিভাগের ডিসেম্বর মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

      Recent

      সাইকিয়াট্রি বিভাগের ডিসেম্বর মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

      BACAMH – এর সদস্যপদ নবায়ন শুরু: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবায়ন সম্পন্নের আহ্বান

      চিকিৎসকদের মতে, দেশের স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্য এখনো উপেক্ষিত

    • প্রতিদিনের চিঠি
    • মানসিক স্বাস্থ্য
      1. মাদকাসক্তি
      2. মানসিক স্বাস্থ্য সেবা তথ্য
      3. যৌন স্বাস্থ্য
      4. শিশু কিশোর
      Featured
      ফিচার October 7, 2024

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      Recent

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে শেখাবেন

      কর্মব্যস্ততা প্রভাব ফেলে যৌনজীবনে

    • ফিচার
    • প্রশ্ন-উত্তর
      1. বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
      2. মাদকাসক্তি
      3. মানসিক স্বাস্থ্য
      4. যৌন স্বাস্থ্য
      Featured
      প্রশ্ন-উত্তর August 7, 2025

      অতিরিক্ত চিন্তা আমার পড়ালেখার হ্যাম্পার করছে

      Recent

      অতিরিক্ত চিন্তা আমার পড়ালেখার হ্যাম্পার করছে

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      বর্তমানে খুব ভয়াবহ সমস্যায় ভুগছি, কী করবো বুঝতে পারছিনা

    • জীবনাচরণ
      1. অন্যান্য
      2. অপরাধ আচরণ
      3. কুসংস্কার
      4. মতামত
      5. মন ও ক্রীড়া
      6. মন প্রতিদিন
      7. মনোসামাজিক বিশ্লেষণ
      8. সাক্ষাৎকার
      Featured
      সাক্ষাৎকার November 5, 2025

      মানসিক রোগ নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে এটাই বড় অর্জন — ডা. আহমদ রিয়াদ চৌধুরী

      Recent

      মানসিক রোগ নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে এটাই বড় অর্জন — ডা. আহমদ রিয়াদ চৌধুরী

      বর্তমানেও অনেকেই মানসিক রোগকে লজ্জার বিষয় মনে করেন — ডা. মো. শাহেদুল ইসলাম

      পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি ও বিরক্ত কাজ করছে

    • মনস্তত্ত্ব.
      1. তারকার মন
      2. ব্যাক্তিত্ব
      3. মনস্তত্ত্ব
      Featured
      তারকার মন August 5, 2023

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      Recent

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      প্রসঙ্গ : সাইক্লোথাইমিক ব্যক্তিত্ব

      কার্ল সেগান : যিনি বিশ্বাস করতেন মহাবিশ্ব একটি মমতাপূর্ণ জায়গা

    • করোনায় মনের সুরক্ষা
      1. টিপস্
      2. বিশেষজ্ঞের মতামত
      3. বিশ্ব পরিস্থিতি
      4. সার্বক্ষনিক যোগাযোগ
      Featured
      টিপস্ September 28, 2024

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      Recent

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      প্রবাসীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় MK4C-তে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার পরামর্শ

      পরিবার যেভাবে শিশুকে গড়ে তুলবে

    মনের খবরমনের খবর
    You are at:Home » ধর্ষণ কি সামাজিক ব্যাধি!
    মনোসামাজিক বিশ্লেষণ

    ধর্ষণ কি সামাজিক ব্যাধি!

    মনের খবর ডেস্কBy মনের খবর ডেস্কSeptember 15, 2019Updated:September 27, 2020No Comments8 Mins Read0 Views
    Facebook Twitter Pinterest Telegram LinkedIn Tumblr Email Reddit
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp Email

    যৌনতা মানুষের জীবনের অতি স্বাভাবিক এবং অপরিহার্য একটি শারীরিক চাহিদা। প্রাত্যহিক জীবনে নারী-পুরুষের সম্পর্ককে স্বাভাবিক, সুন্দর ও সুদৃঢ় রাখার অন্যতম একটি নিয়ামকও বটে। এই চাহিদা পূরণের একটা প্রচলিত, স্বাভাবিক ও গ্রহণযোগ্য নিয়ম বা পদ্ধতিও আছে। যৌনতাকে যত্রতত্র অপপ্রয়োগ বা অসুন্দর প্রয়োগ না করে, সুন্দর এই সম্পর্কটিকে রক্ষা করা, যত করা কিংবা লালন করাও জরুরি। নারী-পুরুষের এই স্বাভাবিক সম্পর্কটির অস্বাভাবিক ব্যবহারের ফলে কখনো কখনো এমনকি জীবন পর্যন্ত নাশ হতে পারে! জীবনে নেমে আসতে পারে চরম দুঃসময়। যৌনতাকে বিকৃত ও যে-কোনো উপায়ে চরিতার্থ করাই হচ্ছে ধর্ষণ।

    বাংলাদেশ দন্ডবিধির ১৮৬০ (১৮৬০ সালের আইন XLV) ধারা ৩৭৫ অনুসারে একজন পুরুষকে ‘ধর্ষণকারী’ হিসেবে গণ্য করা হবে যদি নিচের যে-কোনো একটি পরিস্থিতিতে তিনি যৌন সম্পর্কে যান- প্রথমত, মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। দ্বিতীয়ত, মেয়ের অনুমতি ছাড়া। তৃতীয়ত, সম্মতির সাথে, কিন্তু মৃত্যুভয়ে বা আঘাত দেয়ার মাধ্যমে সম্মতি নিয়ে। চতুর্থত, সম্মতিতে, যখন মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ছেলেটি সম্মতি আদায় করে। কিন্তু ছেলেটি জানে ভবিষ্যতে সে মেয়েটিকে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করবে না। পঞ্চমত, তার সম্মতি বা সম্মতি ছাড়া, যখন ভিক্টিমের বয়স চৌদ্দ বছরের নিচে হয়।

    বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে ধর্ষণের ঘটনা শুধু বাড়ছেই না, বরং তা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নৈতিক ও মানসিক মূল্যবোধের অবক্ষয় প্রকাশ পাচ্ছে ধর্ষণের মতো কঠিন অপরাধের মধ্যে। বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ একটি দেশ। শুধু ধর্ষণ নয়, ধর্ষণ পরবর্তী যে সামাজিক অবস্থা আমরা তৈরি করছি, তা অন্যায়কারীর বিচার ব্যবস্থায় কোনো প্রভাব তো ফেলছেই না। বরং ভিক্টিমের স্বাভাবিক জীবনকে বাধাগ্রস্ত করছে চরমভাবে। অনেক ভিক্টিমই আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে দ্বিতীয়বার ভাবছেন না। ভিক্টিমের পরিবার যখন বিচার চাইতে যাচ্ছেন, সমাজের কাছে তাদেরকে হেয় হতে হচ্ছে যা আমাদের বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করছে, আর তার সঙ্গে সঙ্গে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে ভিক্টিমের পরবর্তী জীবন। আমরা যদি খুব দ্রুত এই পরিস্থিতিকে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে জনসচেতনতা তৈরি করতে না পারি, তবে ভবিষ্যতে হয়তো আমাদের জাতির জন্য অপেক্ষা করছে ভয়াবহ দুর্দিন। মনোসামাজিক বিশ্লেষণটি সংকলন করেছেন ডা. কৃষ্ণ রায়।

    ধর্ষণ শারীরিক এবং মানসিক ভয়াবহতম নির্যাতনঃ অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা বেগম, মানসিক রোগ বিভাগ বারডেম ও ইব্রাহিম মেডিক্যাল কলেজ।
    ধর্ষণ শারীরিক এবং মানসিক উভয় ক্ষেত্রে ভয়াবহতম নির্যাতন। ধর্ষণের শিকার নারী প্রাথমিক পর্যায়ে একিউট স্ট্রেস ডিজঅর্ডার এবং পরবর্তীতে পোস্ট ট্রমাটিক ডিজঅর্ডারে মেজর ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডারে এবং এর থেকে আত্মঘাতী হবার সমূহ ঝুঁকিতে থাকে। শিশু ধর্ষণের শিকার হলে তার শারীরিক-মানসিক বিকাশ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। ধর্ষণের শিকার হওয়া কারও সাইকোলজিকাল ট্রিটমেন্ট দিতে গেলে তার এপ্রোচ (ধরন) হবে অত্যন্ত সফ্ট, জেনারেল, একদম তাড়াহুড়া না করা এবং প্রয়োজনে বারবার বসে তার সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করা যাতে তার আবেগের প্রকাশটা (ইমোশনাল রিলিজ) পুরোপুরি হয়। ধর্ষণের শিকার হওয়া মানুষটিকে বোঝাতে হবে ঐ ঘটনার জন্য সে কোনোভাবে দায়ী নয় বরং সে পরিস্থিতির শিকার। বোঝাতে হবে তার অপরাধবোধে ভোগার কোনো কারণ নেই বরং দৃঢ় মনোবল নিয়ে অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই লড়তে হবে।

    কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিলে ধর্ষণ কমে আসবেঃ এলিনা খান, মানবাধিকার কর্মী
    যখন কেউ ধর্ষণের মতো পাশবিক আক্রমণের শিকার হন, তখন নিশ্চিতভাবেই তার মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ হয়। ভিক্টিম মারাত্মক রকম শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হন। এমতাবস্থায় প্রয়োজনীয় মানসিক সাপোর্ট, দ্রুত এবং কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিলে ধর্ষণ কমে আসবে এবং সেইসাথে ভিক্টিমও মানসিক সান্ত্বনা পাবে।

    ফলোআপ না হলে খবরটির গুরুত্ব অসম্পূর্ণই থেকে যায়ঃ জাকিয়া আহমেদ, সাংবাদিক, দৈনিক সারাবাংলা।
    ধর্ষিতা শব্দটি সংবাদমাধ্যম এখন আর ব্যবহার করে না। এখন ব্যবহার করা হয় ধর্ষণের শিকার শব্দটি। ধর্ষিতা শব্দটিতে অন্যায়ের শিকার/পরিস্থিতির শিকার বিষয়টি খুব বেশি স্পষ্ট হয় না। ধর্ষণের খবর প্রকাশে ধর্ষণের শিকার নারীর ছবি প্রকাশ করা উচিত নয় বিশেষ ব্যতিক্রম কিছু ঘটনা ছাড়া। পারিবারিক খুব ঘনিষ্ঠ স্বজনদের মধ্যে যৌন অপরাধ ঘটে যাওয়া সংবাদ প্রকাশে আরও সাবধানী হওয়া উচিত। কারণ এমন দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা যার পেছনে মানসিক রোগও দায়ী থাকতে পারে- যা চিরায়ত সবচাইতে নিরাপদ এবং পবিত্রতম সম্পর্কগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করে অবিশ্বাসের জন্ম দিতে পারে। পাশাপাশি ধর্ষণের শিকার কাউকে যাতে বিচারপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ‘মেডিক্যাল রিপোর্ট’, ‘পুলিশি তদন্ত’, ‘আদালতে পুঙ্খানুপুঙ্খ ঘটনা জানতে চাওয়ার’ মতো প্রতিপদে হেনস্তা ও বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আরেকটি বিষয়, ধর্ষণের একটি খবর হয়তো প্রথমবার মিডিয়াতে প্রচার হলো কিন্তু পরে আর কোনো ফলোআপ প্রচার না হলে সেই খবরটি গুরুত্ব অসম্পূর্ণই থেকে গেল। অপরাধীকে ধরা, বিচারপ্রক্রিয়ার আওতায় আনা এবং তার শাস্তি নিশ্চিতের বিষয়টি পরবর্তীতে গুরুত্ব সহকারে প্রচার না করলে বিচারপ্রার্থীর মনে আস্থা জন্মাবে না এবং অপরাধী অপরাধ করেও পার পাওয়া যায় এমন একটা ধারণায় বিশ্বাসী হবে।

    পোশাক ধর্ষণের জন্য দায়ী নয়ঃ শাহানাজ খুশী, অভিনেত্রী
    পোশাকের সাথে ধর্ষণের কোনো সম্পর্ক নাই। সম্পর্ক আছে কেবল পুরুষতন্ত্রের রক্ষণশীল মানসিকতার সাথে এবং নারীদের দাবিয়ে রাখার, তাদের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করার সাথে। নইলে শিশু কিংবা অত্যন্ত শালীন পোশাক পরিহিতা নারীর সাথেও পাশবিক আচরণের ঘটনাগুলো ঘটবে কেন? সা¤প্রতিক সময়ে তনু, রুপাসহ অন্যান্যদের সাথে যে পাশবিকতা ঘটেছে তাতে পোশাকের কোনো ভ‚মিকা আছে এমনটা কেউ বলতে পারবে না। যারা নারীকে কেবল ভোগপণ্য ভাবেন, ব্যক্তি নারীকে অস্বীকার করেন; তারাই কেবল ধর্ষণের জন্য নারীর পোশাককে দায়ী করতে পারেন।

    তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হইয়ো নাঃ মাওলানা এম. মিজানুর রহমান সহকারী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ সরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, খুলনা ও খতিব, খান জাহান আলী জামে মসজিদ বানরগাতী বাজার, সোনাডাঙ্গা, খুলনা।
    ইসলামে নারীকে যথার্থ মূল্যায়ন প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারার ১৮৭ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তারা তোমাদের পোশাক সদৃশ এবং তোমরাও তাদের পোশাক সদৃশ’। নারীদের সাথে ব্যভিচারের ভয়াবহতা প্রসঙ্গে বলা হচ্ছে, তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হইয়ো না। সুরা বনি ইসরাইলের ৩২ নং আয়াতে যেভাবে ব্যভিচার হতে পারে সে সকল কার্যকলাপের নিকটবর্তী হওয়াও নিষেধ করা হয়েছে। ব্যভিচারের শাস্তি প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের সূরা আন-নূরে অবিবাহিত নারী পুরুষের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ‘ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণী তাদের প্রত্যককে একশ বেত্রাঘাত করবে।’ আর বিবাহিত ব্যভিচারে লিপ্তদের ক্ষেত্রে ‘রজম’ এর কথা বলা হয়েছে। ইসলাম নারী ও পুরুষকে যথাযথ পর্দার বিধান দিয়েছেন। কোরআনের এ বিধান যদি আমরা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারতাম তাহলে সমাজে এমনভাবে নারী ধর্ষণ/নির্যাতনের শিকার হতেন না। বরং নারী-পুরুষ যথাযথ সম্মানের সাথে জীবন-যাপন করতে পারতেন।

    বিপরীত লিঙ্গের প্রতি পারস্পরিক সম্মান করার শিক্ষাটা পারিবারিকভাবে নিশ্চিত করতে হবেঃ ধনেশ চন্দ্র রায়, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
    ধর্ষণের মতো যৌন সহিংসতার ঘটনাগুলো রুখতে সামাজিক প্রতিরোধটাই সবচেয়ে বেশি কার্যকর। সমাজে নারী ও শিশুদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে। ছোটবেলা থেকেই বিপরীত লিঙ্গের প্রতি পারস্পরিক সম্মান করার শিক্ষাটা পারিবারিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি একটা অরক্ষিত সমাজে নিজের নিরাপত্তার জন্য সচেতন থাকা খুব জরুরি।’

    মনোসামাজিক বিশ্লেষণঃ ধর্ষণ বিষয়টিকে সামনে রেখে আমাদের দেশের বেশ কয়েকজন অগ্রগামী ও চিন্তাশীল মানুষের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে দেখার চেষ্টা হয়েছে ধর্ষণ নিয়ে তাদের মনোভাব বা মতামতের জায়গাটি কী ধরনের। প্রায় সবাই ধর্ষণের জন্য অপরাধপ্রবণ সমাজ, আইনশৃঙ্খলার তৎপরতাহীনতা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, সাইবার ও আকাশ সংস্কৃতি, অপসংস্কৃতির অনুপ্রবেশ, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ইত্যাদিকে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং সেইসঙ্গে কিভাবে ধর্ষণকে প্রতিরোধ করা যায় তার পথ নির্দেশ করার চেষ্টা করেছেন। পবিত্র কোরআনের আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে দেখিয়েছেন ধর্ষণ/ব্যভিচার কত বড় অপরাধ এবং এর ইহকাল ও পরকালীন শাস্তি কত ভয়ংকর তা উল্লেখ করেছেন এবং কোন পথে চললে নারী-পুরুষ সুখে শান্তিতে চলতে পারবে, ধর্ষণ ও ব্যভিচারমুক্ত একটি সমাজ গড়তে পারা যাবে। পোশাক কখনোই ধর্ষণের কারণ হতে পারে না। এক ধরনের রক্ষণশীল, পশ্চাৎপদ, নারীর অগ্রযাত্রায় আতঙ্কগ্রস্ত মানুষেরাই ধর্ষণের জন্য নারীর পোশাককে দায়ী করে নারীর অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করতে চান, নারীকে অনেকটা গৃহবন্দি করে পুরুষের সেবাদাস করে রাখতে চান।

    ধর্ষণের দ্রুত এবং কঠোর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে সমাজে ধর্ষণের প্রকোপ কমবে না। ধর্ষণ প্রতিরোধে সংবাদমাধ্যমের অনেক বড় দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। ধর্ষণকে কেবল পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবপ্রসূত অপরাধ বা সামাজিক ব্যাধি হিসেবে উল্লেখ করলে সঠিকভাবে এর স্বরূপ বিশ্লেষণ সম্ভব নয়, আমাদের দেশে বরং আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে এর পেছনে বহুমুখী প্রভাবক কাজ করে। যদিও পুরুষতান্ত্রিকতার প্রভাব সামাজিকভাবেই মেয়েদেরকে নিম্ন অবস্থানে প্রান্তিক হিসেবে ঠেলে দেয়া, মেয়েদের প্রতি বিদ্বেষী মনোভাব, মেয়েদের নিচু আর দুর্বল ভাবার প্রবণতাটা পরিবার থেকেই সাধারণত শুরু হয় এবং সামাজিক জীবনে পূর্ণাঙ্গতা পায়। ছোট ছোট শিক্ষাই একজন ছেলের মধ্যে ধীরে ধীরে ‘সুপেরিওরিটি সেন্স’ নিয়ে আসে। তার এই নারীদের চেয়ে নিজেকে বড় বা উন্নততর ভাবার প্রবণতা অনেক সময় তাকে ধর্ষকামী করে তোলে। বিশ্বায়ন ও মুক্তবাণিজ্যের এই যুগে আমাদের মতো স্বল্প উন্নত দেশগুলি মিডিয়া, আকাশ সংস্কৃতি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইত্যাদির মাধ্যমে সাংস্কৃতিকভাবে বৈশ্বায়ণ হচ্ছে। সমস্যাটা হল, সেসব গ্রহণ করার মতো পরিস্থিতি বা মানসিকতা কিন্তু শহর-গ্রাম, উচ্চবিত্ত-নিম্নবিত্ত, শিক্ষিত-অশিক্ষিত নির্বিশেষে সবার মধ্যে এখনো তৈরি হয়নি। ধর্ষণকে বেশ কয়েকটি ধরনে ভাগ করা হয়, যেমন- গণধর্ষণ, বৈবাহিক ধর্ষণ, অজাচার ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণ, কারাগারে ধর্ষণ এবং যুদ্ধকালীন ধর্ষণ।

    একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর ধর্ষকের শাস্তির নিশ্চয়তা যেমন সর্বাগ্রে প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন ভিক্টিমের শারীরিক-মানসিক ক্ষতি কাটিয়ে তোলার দিকে নজর দেয়া। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ভিক্টিম লজ্জায় ঘটনা চেপে যেতে চায়, কিন্তু এতে পরবর্তী সময়ে সমস্যা আরো প্রকট হয়। পরিবারের মানুষের সাথে কথা বলে এবং আইনি পরামর্শকের মাধ্যমে কেস ওপেন করা উচিত। এক্ষেত্রে আইনকেও ক্ষমতা ও ক্ষমতাবানদের নাগালের ঊর্ধ্বে থেকে যথার্থ ভূমিকা পালন করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় ভিক্টিমকে কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ভিক্টিম তার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে কিংবা আত্মহননের পথে পা বাড়ায়। সামাজিক সম্মান এর পেছনে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। একজন নারী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর সমাজ নিক্তি নিয়ে বসে যায় মেয়েটির পোশাক-আশাক, স্বভাবচরিত্র কেমন ছিল তা বিচারের জন্য। যেন পরোক্ষভাবে, ধর্ষণের ঘটনাটিকে বৈধতা দানের চেষ্টা! যেখানে প্রতিনিয়ত ঘটছে শিশুধর্ষণের মতো পাশবিক ঘটনা। ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত হতে পারে। তারপরও বাংলাদেশে ধর্ষণের অনুপাত ক্রমবর্ধমান। যখন একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে যায় তখন সেটি দৃশ্যমান বাস্তব বলে আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। কিন্তু সমাজের বিরাট অংশ জুড়ে যে মানুষগুলো ধর্ষকামী মনোভাব নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সেদিকেও গুরুত্বের সাথে নজর দেয়া প্রয়োজন। খতিয়ে দেখা প্রয়োজন এই ভয়ানক ক্ষতের জীবানুটা কোথায় নিহিত রয়েছে, কীভাবে বিস্তৃত হচ্ছে। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, পারিবারিক-সামাজিক শিক্ষাপদ্ধতির পরিবর্তন, গণমাধ্যমের যথাযথ ভূমিকা, নানাভাবে নারীকে ভোগ্যবস্তু হিসেবে বিবেচনার সংস্কৃতির পরিবর্তনসহ আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে এই ঘৃণ্য অপরাধকে কমিয়ে আনা সম্ভব।

    সূত্রঃ মনের খবর, মাসিক ম্যাগাজিন, ১ম বর্ষ, ৪র্থ সংখ্যায় প্রকাশিত।

    ধর্ষণ যৌনতা সামাজিক ব্যাধি
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Reddit WhatsApp Telegram Email
    Previous Articleবিএসএমএমইউতে এটিসিবি এর বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
    Next Article ঢাকা মেডিক্যালে আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসের সেমিনার
    মনের খবর ডেস্ক

    Related Posts

    ধর্ষণ: শিশু-কিশোর মনে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ প্রভাব- শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

    March 17, 2025

    বঙ্গদেশে মানসিক রোগে তাবিজ

    January 4, 2024

    অতি চঞ্চল অমনোযোগী শিশু, ভবিষ্যৎ কী?

    December 6, 2023
    Leave A Reply Cancel Reply

    Top Posts

    অতিরিক্তি হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায়

    July 25, 2021316 Views

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    June 30, 2025300 Views

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025209 Views

    পর্নোগ্রাফি থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ দূরে রাখবেন যেভাবে

    March 13, 2022118 Views
    Don't Miss
    কার্যক্রম December 1, 2025

    সাইকিয়াট্রি বিভাগের ডিসেম্বর মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

    বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সাইকিয়াট্রি বিভাগের ডিসেম্বর মাসের বৈকালিক চিকিৎসাসেবা সময়সূচি প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত সূচি…

    BACAMH – এর সদস্যপদ নবায়ন শুরু: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নবায়ন সম্পন্নের আহ্বান

    চিকিৎসকদের মতে, দেশের স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্য এখনো উপেক্ষিত

    মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    প্রকাশক ও সম্পাদক:
    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
    মোবাইল : (+88) 018-65466594, (+88) 014-07497696
    ইমেইল : info@monerkhabor.com

    লিংক
    • মাসিক ম্যাগাজিন প্রাপ্তিস্থান
    • কনফারেন্স-সেমিনার-ওয়ার্কশপ
    • প্রেজেন্টেশন
    • জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
    রিসোর্স
    • পরিচালনা পর্ষদ
    • মানসিক বিষয়ে সংগঠন
    • বিশেষজ্ঞ লোকবল
    • নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
    সোশ্যাল মিডিয়া
    • Facebook
    • YouTube
    • LinkedIn
    • WhatsApp
    © 2025 মনেরখবর সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
    • গোপনীয়তা নীতি

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Ad Blocker Enabled!
    Ad Blocker Enabled!
    Our website is made possible by displaying online advertisements to our visitors. Please support us by disabling your Ad Blocker.