দৈনন্দিন জীবনে কিছু পরিবর্তন দিতে পারে সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য

বেশিরভাগ মানুষ তাদের জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সাথে মোকাবিলা করে থাকে। কেউ কেউ হয়ত এই সমস্যায় বেশি পড়েন কেউ কম। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক কিছু করে থাকি যা কোন কাজে আসে না। কিন্তু অনেক ছোট ছোট কাজ আছে যা করার মাধ্যমে আমরা মানসিক ভাবে সুস্থ এবং হাসি খুশি থাকতে পারি। এবং খুশির খবর এই যে ছোট ছোট কাজগুলো খুব সহজে আমরা আমাদের জীবনে যুক্ত করতে পারি। এবং এর মাধ্যমে আমাদের জীবনে আসতে পারে ব্যাপক পরিবর্তন। নিচে এমন ৯ টি কাজের কথা উল্লেখ করা হলো-
১। সোজা হয়ে হাঁটুন
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মাথা সোজা করে সামনে তাকিয়ে ঘাড় একটু পিছনে রেখে হাঁটলে আমাদের মন মেজাজ ভাল থাকে। যদি আপনি ঘাড় নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটেন তাহলে হয়ত আপনি ইতিবাচক ব্যাপারের চাইতে নেতিবাচক ব্যাপার বেশি খেয়াল করবেন।
২। সবকিছুর ছবি তোলা বন্ধ করুন
আপনি হয়ত ভাবছেন যেকোনো মুহূর্তকে ক্যামেরা বন্দি করে রাখার মাধ্যমে ভবিষ্যতে তাদের ভালভাবে মনে করা সম্ভব। কিন্তু সাইকোলজিক্যাল সায়েন্সে প্রকাশিত একটি গবেষণা জানায় যে যদি আপনি কোন কিছুর ছবি তুলতে চান তবে অবশ্যই বিষয়বস্তুর দিকে খেয়াল রাখুন।
৩। অনুশীলন
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের একটি গবেষণা অনুযায়ী সপ্তাহে তিনবার অনুশীলন করার মাধ্যমে আপনার বিষণ্ণ হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ১৯ শতাংশ কমে যায়। গবেষকরা পেয়েছেন যে যারা বেশি কর্মঠ তাদের বিষণ্ণ হওয়ার সম্ভাবনা কম। বিষণ্ণ মানুষরা অলস প্রকৃতির হয়।
৪। আলসেমি বন্ধ করা উচিত
আপনার যে কাজ করা উচিৎ তা করা থেকে আপনি নিজেকে যত বিরত রাখবেন এবং কাজটি করার জন্য যত ভয় পাবেন তত আপনার স্নায়ুতে সমস্যা হবে। গান শোনা এবং অনুশীলনের মাধ্যমে আপনার যেকোনো ধরণের চাপ দূর করুন এবং যে কাজ করতে হবে তা করে ফেলুন। ভয় পেয়ে ফেলে রাখা যাবে না।
৫। আপনার জন্য ক্ষতিকর এমন সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসুন
যে আপনাকে প্রতিনিয়ত ছোট করছে, কখনো আপনার কোন প্রশংসা করছে না এমন মানুষের সাথে সম্পর্ক না রাখা ভাল। কেননা এতে ধীরে নিজের প্রতি সম্মানবোধ কমে যায়, নিজেকে তুচ্ছ মনে হয় এবং মানুষ ধীরে ধীরে বিষণ্ণ হয়ে পড়ে। আপনার প্রেমিক অথবা জীবন সাথী সম্পর্কে বন্ধু বান্ধব এবং পরিবারের মতামত নিন। যদি তাদের কোন অভিযোগ থাকে তবে সেই অভিযোগ প্রাধান্য দিন।
৬। বেশি করে ঘুমান
যদি আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমান তাহলে আপনার শরীর ঠিকভাবে কাজ করবে না। যদি আপনার ঘুমাতে সমস্যা হয়ে থাকে তবে আপনি সাহায্য চান, প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খান।
৭। নিজেকে সময় দিন
বন্ধু বান্ধব, পরিবার এবং অফিস সবাইকে সময় হাসিখুশি রাখা মানে এমন হতে পারে আপনি নিজেকে সময় দিচ্ছেন না, নিজের প্রতি অবহেলা করছেন। নিজে একা কিছু সময় কাটানোর জন্য সময় খুঁজে বের করুন, নিজের জন্য কিছু করুন, নিজের ভাল লাগে এমন কাজ করুন এতে আপনার উদ্বিগ্নতা কমবে।
৮। প্রযুক্তির বাহিরে থেকে কিছু সময় কাটান
স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট আমাদের মস্তিষ্ককে অত্যধিক ক্লান্ত এবং একঘেয়ে করে তুলতে পারে। আর আপনি যদি এর বাহিরে সময় না কাটাতে পারেন তাহলে আপনি নিজে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যেক সপ্তাহে প্রযুক্তির বাহিরে কিছু সময় কাটান তা শুধুমাত্র আধা ঘণ্টার জন্য হলেও কাটান।
৯। একসাথে নানা কাজ করা বন্ধ করুন
আপনি দুপুরের খাবার খাচ্ছেন আবার সাথে অফিসের অথবা কোন জরুরী ইমেইল পাঠাচ্ছেন এটা তেমন ক্ষতিকর মনে না হতে পারে কিন্তু একসাথে অনেক কাজ করা আপনার মধ্যে চাপ বাড়াতে পারে। আপনি একদিকে নজর দেয়ার বদলে একসাথে নানাদিকে নজর দিচ্ছেন তা আপনার মধ্যে চাপ সৃষ্টি করে।
তথ্যসূত্র-
http://www.independent.co.uk/life-style/health-and-families/ways-to-improve-mental-health-daily-habits-walk-tall-exercise-a8050651.html
কাজী কামরুন নাহার, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম

Previous articleশিশুর মানসিক অবস্থা তার পরিবার, বিশ্বাস, সামাজিক অবস্থার প্রতিফলন
Next articleসদ্য শেখা কোন কিছু মনে রাখতে ঘুম বিশেষ ভূমিকা রাখে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here