সুস্থ স্বাভাবিক নারীর তুলনায় গর্ভবতী নারীরা ঘুমের মধ্যে বেশি অদ্ভুদ অদ্ভুদ স্বপ্ন দেখেন। এর জন্য আতকেও ওঠে। কিন্তু কেনো? এটা অনেকেরই অজানা। এগুলো কি কোনো কিছুর ইঙ্গিত বহন করে? আসলে অনেক প্রশ্নের উদয় হলেও সঠিক না জানান কারণে বিষয়গুলোকে যে যার মত করে ভেবে নেয়। তবে এ সমস্যার আসল কারণ জানাচ্ছে সমীক্ষা।
কয়েক দিন আগেই আমেরিকান গায়িকা কার্ডি বি একটি ট্যুইট করেন। তাঁর মূল বক্তব্য ছিল দুটো—এক, তিনি প্রথম সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন
দুই, তিনি প্রতিদিন অদ্ভুতুড়ে স্বপ্ন দেখে চলেছেন শুধু কার্ডি বি নয়। আদপে সব সন্তানসম্ভবা মা-ই এমন কিছু স্বপ্ন দেখেন যা আর পাঁচ জনের থেকে আলাদা। কখনও তা ভৌতিক, কখনও তা উদ্ভট। কিন্তু কেন?
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এর উত্তর। গবেষকরা বলছেন, আসলে ঘুমের প্রায় পাঁচটা ধাপ আছে। প্রথম ধাপটি হল ‘র্যাপিড আই মুভমেন্ট’ (রেম)। এই পর্যায়ে ঘুম থাকে ২৫ শতাংশের মত। একজন সুস্থ মানুষের এই র্যাপিড আই মুভমেন্ট চলে ৭০ থেকে ৯০ মিনিটের মতো।
ঘুমের সাইকেল চলাকালীন এই রেম পর্যায়টি বারবার ফিরে আসে। তখন মানুষ তার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা, অভিপ্রায় ও অবচেতনের মিশেলে নানা স্বপ্ন তৈরি করেন। সবটা তার মনেও থাকে না।
কিন্তু প্রেগনেন্ট মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার জন্য তাদের ঘুম কম হয়। বারবার রেম সাইকেল ভেঙে যায়। এর ফলেই তাদের স্বপ্নের স্মৃতি অনেক সক্রিয় এবং জোরালো। এর আগেও স্লিপ মেডিসিন নামক একটি জার্নালে উঠে এসেছিল আসন্ন প্রসবা মায়েদের দুঃস্বপ্নের কথা।
এবার উঠে এল এর আসল কারণ। শুধু প্রজেস্টরনের সমস্যা নয়। মহিলারা এই সময় রেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোমে ভোগেন। ঘুমের মধ্যে বারবার তাদের পা নাড়াতে ইচ্ছে করে। এর জন্যেও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। বিচ্ছিন্ন হয় রেম বা র্যাপিড আই মুভমেন্ট সার্কেল। এর ফলেই এই স্বপ্ন বিকৃতি।
শিকাগো নিবাসী গবেষক চিকিৎসক জুলি লিভিট ঠাট্টা করেই বলছেন, সন্তান আসার আগে মায়ের থেকে যে অধিকারটি কেড়ে নেয় তা হল ঘুমের অধিকার। আর যা ফিরিয়ে দেয়, তা হল নানারকম ভয়।