ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের ক্ষতি সাধনকারীর আত্মহত্যার ঝুঁকি বেশি

0
22

যেসকল প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের ক্ষতি করে এবং কোনোভাবে তা থেকে বেঁচে যায়। তাদের ঐ ঘটনার এক বছরের মধ্যে আত্মহত্যা করার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে নতুন একটি আমেরিকান গবেষণায়।
আমেরিকান জার্নাল অব সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত এই গবেষণায় কলোম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার ও নিউইয়র্ক সাইকিয়াট্রিক ইন্সটিটিউটের সহকারী গবেষকরা জানান, এই গবেষণা থেকে এটিই প্রমাণ করে যে ঐ ঘটনার পরের বারো মাস অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে নিবিড় পরীক্ষণের মধ্যে রাখতে হবে ও প্রয়োজনীয়  চিকিৎসা দিতে হবে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি থাকে, যে সময়ে ঘটনাটি ঘটেছে তার কাছাকাছি পরের কয়েক মাসে।
এই গবেষণার জ্যেষ্ঠ গবেষক মার্ক অলফসন বলেছেন, গবেষণার ফলাফল তাঁদের পরীক্ষণ ভিত্তিক অনুমানকে (হাইপোথিসিস) সমর্থন করে। বলা যায় যে, আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এবং নিজের ক্ষতি করার অন্যান্য পদ্ধতিগুলো আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
এই গবেষণার জন্য ২০০১-২০০৭ সাল পর্যন্ত ৪৫টি রাজ্য থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। গবেষকেরা ৬১,২৯৭ জন ব্যক্তির উপর গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন যারা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের ক্ষতি করেছেন, তার এক বছরের মধ্যেই তারা পুনরায় নিজের ক্ষতি এবং আত্মহত্যা করার চেষ্টা চালিয়েছেন। এই উপাত্ত জাতীয় মৃত্যু সূচীর সাথে সম্পর্কিত ছিলো, যা মৃত্যুর তারিখ এবং কারণ বিশ্লেষণ করেছে। যেমন জনসংখ্যা বিষয়ক বৈশিষ্ট্য, সাধারণ মানসিক সমস্যার সাম্প্রতিক চিকিৎসার তথ্য ও নিজের ক্ষতি করার পরিবেশ এবং পদ্ধতি। যেহেতু আমেরিকায় আগ্নেয়াস্ত্রের মাধ্যমে আত্মহত্যার হার আট গুণ বেশি, তাই এটি গবেষকদের আগ্রহের শীর্ষে ছিলো।
প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ যার বেশিরভাগ বয়স্ক এবং সাদা চামড়ার, তারা বিষন্নতা ও অ্যালকোহল ডিসঅর্ডারের মত তুলনামূলক কম মারাত্মক পন্থা অবলম্বন করেছেন। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যারা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের ক্ষতি করে, এক বছরের মধ্যে তাঁদের আত্মহত্যার হার স্বাভাবিকের তুলনায় ৩৭ গুণ বেশি ছিলো। এই দলে নারীদের তুলনায় পুরুষের সংখ্যা বেশি ছিলো এবং সাদা চামড়ার বয়স্ক মানুষের ঝুঁকি কালো চামড়ার তরুণদের তুলনায় ৩ গুণ বেশি দেখা গিয়েছে।
নিজের ক্ষতি করার প্রাথমিক মুহূর্তে প্রায় ২/৩ অংশের পক্ষে আত্মহত্যা সম্ভব হয়েছিলো কারণ তারা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছিলো। এছাড়া ব্যক্তির নিজের ক্ষতি করার ঠিক প্রথম মাসেই বাকী ১১ মাসের তুলনায় আবারও এধরণের ঘটনা ঘটানোর সম্ভাবনা থাকে প্রায় ১০ গুণ বেশি।
গবেষক ড. ওলফসন মনে করেন যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের ক্ষতি করার ঘটনা থেকে উঠে এসেছে, তার নিরাপত্তার প্রতি বেশি নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে প্রথম কয়েক মাসে যদি সে আগ্নেয়াস্ত্রের মাধ্যমে আত্মহত্যার চিন্তা করে থাকে।
এই ব্যক্তিদের আরো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসা আত্মহত্যার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ডাক্তাররা আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যাপারে পরিবারকে আরো সতর্ক হতে বলেছেন।
 
তথ্যসূত্র: সাইপোষ্ট।
অনুবাদটি করেছেন সুপ্তি হাওলাদার।

Previous article'আত্মহত্যার সংবাদ কেমন হওয়া উচিত' বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
Next articleবিখ্যাত ব্যক্তিদের আত্মহত্যার খবর 'কপিক্যাট' সিন্ড্রোম তৈরি করে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here