আমার সমস্যা হলো কিছু মনে রাখতে পারি না

0
192

সমস্যা:
আমি মিশু। বয়স ২৩। মেডিকেল স্টুডেন্ট। আমার সমস্যা হলো কিছু মনে রাখতে পারি না। তাই হতাশায় আছি। সহপাঠীদের দেখে হিংসা লাগে যারা পড়া মনে রাখতে পারে। আমি মেডিটেশন করেছি, অ্যান্টি ডিপ্রেসেন্ট খেয়েছি, কাজ হয়নি। ভিটামিন বি খাই রেগুলার। এখন আমি কি করতে পারি? লিম্বিক সিস্টেমকে কি করে স্টিমুলেট করতে পারি? ধন্যবাদ।

পরামর্শ:
প্রথমত: বলবো আপনার ভয়ের কিছু নেই। যেহেতু আপনার বয়স ২৩ বছর তাই এই মনে রাখতে না পারাটা স্মৃতি নষ্ট হয়ে যাওয়া রোগ অথবা স্মৃতি ভ্রষ্ট রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই রোগটি সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের হয়ে থাকে। মনে না রাখতে পারার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। যখন আমারা কোনো কিছু (যেমন- কোনো তথ্য) মেমোরাইজ করতে চাই বা মনে রাখতে চাই, প্রথমেই আমাদের সেই বিষয়টির প্রতি মনোযোগ দিতে হয় এবং মনোযোগের মাধ্যমে ব্রেইনে সেটা রেজিস্ট্রেশন হয়, বারবার রেজিস্ট্রেশনের ফলে ব্রেইনে সেই বিষয়টি বা তথ্যটি সংরক্ষিত হয়। পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুসারে আমরা সেটা বের করে আনি। এই তিনটি ধাপে মেমোরি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এই তিনটি ধাপের যেকোনো একটি জায়গায় বাঁধা পেলে মনে না রাখতে পারা সমস্যাটি হতে পারে। আপনি মনে রাখতে পারছেন না এর পেছনে বর্তমানে কোনো স্ট্রেস বা মানসিক চাপও থাকতে পারে। তাছাড়া অন্যরা পড়া মনে রাখতে পারে কিন্তু আপনি পারছেন না এই আত্মবিশ্বাসহীনতাও আপনার মনোযোগের ক্ষেত্রে বাঁধা হতে পারে। আবার পড়াশোনার চাপ, সম্পর্কজনিত কোনো চাপ বা পারিবারিক কোনো চাপের কারণেও আপনার মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হতে পারে যা আপনার মনে রাখার ক্ষেত্রে বাঁধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আপনি কোনো সমস্যায় থাকলে সেটি সমাধান করুন। পড়ার সময় অন্য কারো সাথে কোনো তুলনা করা যাবে না। এছাড়া কোনো টার্গেট নির্ধারণ করে বাড়তি চাপ নিবেন না। উদ্বেগ কমানোর জন্য কিছু রিলাক্সেশনের ব্যায়াম করতে পারেন। প্রতিদিন অন্তত ৪০ মিনিট জোরে হাঁটা বা ফ্রী হ্যান্ড এক্সারসাইজ করেও আপনি উপকার পাবেন। প্রতিদিন অন্তত দুই বেলা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি লম্বা করে পেটে শ্বাস নিয়ে হালকা করে ছেড়ে দিবেন। এভাবে ১০ থেকে ১৫ বার করবেন। পড়ার সময় বিষয়টি একটু কল্পনা করতে পারলে মনে রাখা সুবিধা হয়। একটি বিষয় বারবার করে পড়া, বুঝে পড়া, বারবার করে মনে করার চেষ্টা করা, প্রয়োজনে মুখস্ত করে লিখে ফেলা ইত্যাদি অভ্যাসও আপনাকে মনে রাখতে সাহায্য করবে। সবচেয়ে বড় কথা, ভয় না পেয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে পড়ুন। এছাড়া আপনার প্রতি পরামর্শ রইলো আপনি একজন সাইকিয়াট্রিস্টের সাথে যোগাযোগ করুন এবং প্রয়োজনে কাউন্সেলিং করান। ধন্যবাদ

পরামর্শ দিচ্ছেন,
ডা. মেখলা সরকার


দৃষ্টি আকর্ষণ- মনেরখবর.কম এর প্রশ্ন-উত্তর বিভাগে, মানসিক স্বাস্থ্য, যৌন স্বাস্থ্য, মাদকাসক্তি সহ মন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আপনার কোনো জানার থাকলে বা প্রশ্ন থাকলে বা বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দরকার হলে question@www.monerkhabor.com এই ইমেলের মাধ্যমে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন।

Previous articleক্যান্সার ও মনোরোগ: ৩য় পর্ব- ক্যান্সার রোগীদের যত্ন
Next articleবয়ঃসন্ধিকালে প্রেমের সম্পর্ক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here