শরীর-মন সুস্থ রাখার জন্য খাদ্যের যেমন প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন ঘুম। সারা দিন কাজে ব্যস্ত থাকার পর শরীরকে পরের দিন কাজে লাগানোর জন্য প্রস্তুত করতে প্রয়োজন পরিমাণ মতো ঘুম। ঘুম মানুষের ক্লান্তি দূর করে এবং কাজের জন্য শক্তি জোগায়।
সম্প্রতি আমেরিকান প্যাডিয়াট্রিকস একাডেমি ও আমেরিকান এসোসিয়েশন অব এনাটোমিস্টস-এর ১৮ জন বিজ্ঞানী ও গবেষক ঘুম নিয়ে প্রকাশিত ৩শ’টি গবেষণা নিবন্ধ পর্যালোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে বয়সের পার্থক্য অনুসারে ঘুমেরও ফারাক হতে পারে-সেটি দেখান।
তাঁদের মতে, ০-৩ মাস বয়সী নবজাতক শিশুর দৈনন্দিন ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা, ৪-১১ মাসের শিশুর ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা, ১-২ বছর শিশুর ১১ থেকে ১৪ ঘণ্টা, ৩-৫ বছরের শিশুর ১০ থেকে ১৩ ঘণ্টা, ৬-১৩ বছর বয়সী শিশুর ৯ থেকে ১১ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
এছাড়া ১৪-১৮ বছর বয়সীদের দৈনিক ৮ থেকে ১০ ঘন্টা, ১৯-২৫ বছর বয়সীদের ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা, ২৬ থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের ৭-৯ ঘণ্টা এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিৎ বলে মনে করেন তারা।
গবেষকদের পরামর্শ মতো বয়স ভেদে ঘুম
বয়স ঘুম (ঘণ্টা)
০-৩ মাস ১৪-১৭ ঘণ্টা
৪-১১ মাস ১২-১৫ ঘণ্টা
১-২ বছর ১১-১৪ ঘণ্টা
৩-৫ বছর ১০-১৩ ঘণ্টা
৬-১৩ বছর ৯-১১ ঘণ্টা
১৪-১৮ বছর ৮-১০ ঘণ্টা
১৯-২৫ বছর ৭-৯ ঘণ্টা
২৬-৬৪ বছর ৭-৯ ঘণ্টা
৬৫-বছর থেকে ঊর্ধ্ব ৭-৮ ঘণ্টা
তবে হুবহু এ নিদির্ষ্ট সময়ের ঘুম সবার বেলা প্রযোজ্য নাও হতে পারে। যারা বেশি পরিশ্রম করে তাদের বেশি এবং যারা একেবারই পরিশ্রম করে না তাদের কম ঘুম হলেও সমস্যা নেই বলে জানান তারা। পাশাপাশি ৭ ঘণ্টা বা ৮ ঘণ্টা ঘুমে আপনি সন্তুষ্ট কি-না, কোনো রোগে আক্রান্ত হয়েছেন কি-না, ঘুমে সমস্যা হচ্ছে কি-না, এ বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
ঠিক পরিমাণ ঘুম না হলে মানসিক সমস্যার পাশাপাশি বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন, ওজন কমে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, কার্য ক্ষমতা হ্রাস প্রভৃতি দেখা দিতে পারে।
যেমনটি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন, ভারতের জনপ্রিয় টেলিভিশন এনডিটিভি’র সিনিয়র সাব এডিটর কৃতি মল্লিক, ‘ঘুম কম হওয়ার কারণে আমি শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছিলাম। ঘনঘন মাথা ব্যথায় ভুগেছি, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবার খেয়েছি।’
ভারতের আয়না ক্লিনিক-এর পুষ্টি ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ গার্গি শর্মার মতে, পরিমাণ মতো, তৃপ্তি সহকারে ঘুমের সাথে মানুষের শরীরের ওজন বৃদ্ধির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। কম ঘুমের কারণে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রক হরমন বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে খাদ্য বিপাকে বাধাগ্রস্থ হওয়াসহ ক্ষুধা বেড়ে যেতে পারে এবং ওজনও বেড়ে যেতে পারে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, মনের খবর
সূত্র: এনডিটিভি