শিশুরা নিজেদের সমস্যা ঠিকমতো গুছিয়ে বলতে পারে না

সমস্যা:
আমার ছেলের বয়স ১১ বছর, ক্লাস ফাইভে পড়ে। আমার দুই মেয়ে এক ছেলে এবং সে সবার ছোট। আমার স্বামী ব্যবসায়ী এবং সে খুব ব্যস্ত তাই সংসারের সবকিছু আমাকেই দেখাশোনা করতে হয়। ইদানিং আমার ছেলের আচরণে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। সে সবাইকে বিশেষ করে পরিবারের মানুষদের বারবার টাচ করতে চায়। প্রথমে ব্যাপারটি আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হলেও এখন এটাকে সমস্যা বলে মনে হচ্ছে। কারণ সে যতক্ষণ টাচ করতে না পারে তার মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যায় এবং সে রেগে ভাংচুর করে, আমাকে এবং বোনদের মারতে চায়। এ অবস্থায় বাচ্চাকে নিয়ে আমি খুব টেনশনে আছি। মাঝে মাঝে আমি ওকে একটি ঘরে বন্ধ করে রাখি। এতে অবস্থার কোন পরিবর্তন হয় না বরং আরো বেশি রেগে যায়। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমি কি করতে পারি জানালে খুবই উপকৃত হব।

পরামর্শ:
ধন্যবাদ প্রশ্নটি করার জন্য। আসলে আমাদের দেশের বিভিন্ন সামাজি অবস্থার জন্য এবং আমাদের মানসিক সমস্যা নিয়ে জ্ঞানের অভাবের জন্য আমরা অনেক সময় ছোট বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের যে মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয় তারা যে Suffer করে এই জিনিষটা অনেক সময় খেয়াল করি না। আপনি একজন ভালো মা হিসেবে আপনার বাচ্চার সমস্যাটি যে খুব সুন্দর করে দেখেছেন এবং সেটার জন্য সাহায্য চেয়েছেন সেজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।

আপনার বাচ্চাকে নিয়ে অতি দ্রুত একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করুন। হয়তোবা আপনার বাচ্চার আচরণগত সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় বাচ্চারা নিজের যে মানসিক পরিবর্তন ঘটে বা যা ভাবে তা অনেক সময় নিজেদের মতো করে গুছিয়ে বলতে পারে না। কিন্তু তাদের আচরণগুলোর অস্বাভাবিকতার উপর নির্ভর করে আমরা মনে করি হয়তোবা তাদের কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আপনার বাচ্চাকে আরো বেশি Assessment এর জন্য আপনার বাচ্চার ভেতরকার মনের যে দ্বন্দ্ব বা সংশয় কাজ করেছে সেগুলো জানার জন্য আপনি একজন বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন। তাতে করে আপনার বাচ্চার যে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে সেটা কি, কেন, কিভাবে হচ্ছে এবং সেটা কি ধরণের সমস্যা বা কি ধরণের রোগ সেটি সনাক্তকরণ সহজ হবে। সেই সাথে আপনি তাড়াতাড়ি চিকিৎসাটা শুরু করলে এই সমস্যাটা হয়তোবা বাড়বে না এবং সম্পুর্ণরূপে ভালো হয়ে যেতে পারে।

পরামর্শ দিচ্ছেন,
ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোরশেদ


দৃষ্টি আকর্ষণ- মনেরখবর.কম এর প্রশ্ন-উত্তর বিভাগে, মানসিক স্বাস্থ্য, যৌন স্বাস্থ্য, মাদকাসক্তি সহ মন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আপনার কোনো জানার থাকলে বা প্রশ্ন থাকলে বা বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দরকার হলে question@www.monerkhabor.com এই ইমেলের মাধ্যমে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন।

Previous articleমনের সুস্থতার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত মনের চর্চা : ফুটবলার আমিনুল হক
Next articleআপনার মেয়ে কনভার্সন ডিজঅর্ডারে ভূগছে
প্রফেসর ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোরশেদ
চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রিস্ট। অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here